নওগাঁয় সন্তানের স্বীকৃতি চাওয়ায় প্রাণনাশের হুমকি
নওগাঁ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:৩৫ পিএম
ছবি: সংগৃহীত
নওগাঁর নিয়ামতপুরে সন্তানের স্বীকৃতি চাওয়ায় প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছে প্রবাসী স্বামীর পরিবারের লোকজন। এ ঘটনায় ভুক্তোভোগী ও তার পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। উপজেলার পাড়ইল ইউনিয়নের গন্ধশাইল গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ ব্যাপারে ভিকটিম প্রশাসনের কাছে নিরাপত্তাসহ আসামিদের আইনের আওতায় এনে বিচারের দাবি জানিয়েছেন।
ভুক্তভোগী সেতারা বেগম গত সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) নওগাঁ পুলিশ সুপার বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন।
লিখিত অভিযোগে জানা গেছে, ১৯৯৯ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর নিয়ামতপুরের গন্ধশাইল গ্রামের ইসাহাক ইসলামের ছেলে হুজ্জাতুল্লাহ ওরফে বকুলের সঙ্গে একই গ্রামের সিরাজ উদ্দীনের মেয়ে সেতারা বেগমের বিয়ে হয়। এরপর বকুল বিদেশে চলে যান। চার বছর পর দেশে এসে ঘর-সংসার করার সুবাদে সেতারা বেগম সন্তানসম্ভবা হন।
পরে সন্তান নষ্ট করার চেষ্টা করে স্বামীর পরিবারের লোকজন। এতে সেতারা রাজি না হলে বকুলের বন্ধুদের দিয়ে তার ওপর চাপ সৃষ্টি করা হয়। এ অবস্থায় স্বামী তাকে অন্তঃসত্ত্বা রেখে আবার বিদেশে চলে যান। স্বামী বিদেশে থাকাকালীন মেয়ে জন্মের পর থেকেই বকুলের পরিবার সেতারাকে বিভিন্নভাবে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন শুরু করে।
এ বিষয়ে ইউনিয়ন পরিষদ, থানা ও গ্রামে বিচার দিয়েছেন অনেকবার। কিন্তু কেউ তাদের পরিবারের দাপটের কারণে সুষ্ঠু বিচার করতে পারেনি। এরপর বকুল দেশে এলে তিনিও অত্যাচার শুরু করেন। নিরুপায় হয়ে সেতারা ইউনিয়ন পরিষদে লিখিত অভিযোগ করেন। সেখানে বকুলের টাকার জোরে সেই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে তারা।
নিরুপায় হয়ে সেতারা নওগাঁ আদালতে মামলা করেন। সেই মামলা দীর্ঘদিন চলাবস্থায় বকুল সবকিছু মেনে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে তার সঙ্গে মেলামেশা করেন। আবারো তাদের মধ্যে বনিবনা না হওয়ায় তাকে ছেড়ে বিদেশে চলে যান।
দীর্ঘদিন পর দেশে এসে সন্তানের ভরণ-পোষণ ও লোকসমাজে স্বীকৃতি দেবে বলে আবারো ২০২৩ সালের ৪ সেপ্টেম্বর সেতারাকে বিয়ে করেন; কিন্তু বিয়ের উদ্দেশ্য ছিল তাকে ও তার মেয়েকে হত্যা করা। এসব বিষয় নিয়ে তাকে অনেকবার মারধর করে এবং আদালতে সেই মামলা চলমান রয়েছে।
এরপর মামলার আসামি হুজ্জাতুল্লাহ ওরফে বকুল ও তার লোকজন মনসুর আলীর ছেলে জুয়েল, কালুর ছেলে শাফী, বিশুর ছেলে ফরিদসহ তার বাড়িতে হামলা চালিয়ে দরজা ও টিনের চালা ভাঙচুরসহ তাকে বেদম মারপিট করে। এমনকি তার মেয়েকে মেরে ফেলারও চেষ্টা করে।
সেতারা বেগম বলেন, এ অবস্থায় তিনি ও তার পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। এমনকি বকুলের লোকজন তাকে ধর্ষণের হুমকিও দিয়ে আসছে। তাদের ভয়ে বাসায় থাকতে ও রাতে ঠিকমতো ঘুমাতে পারছেন না। বাসার বাহিরে গেলেও সব সময় বকুলসহ তার লোকজন ওতপেতে থাকছে।
এখন সেতারা প্রশাসনের কাছে নিরাপত্তাসহ আসামিদের আইনের আওতায় এনে বিচারের দাবি জানান। একই সঙ্গে মেয়েকে স্বীকৃতি দেওয়ার দাবি করেছেন।
নওগাঁর পুলিশ সুপার কুতুব উদ্দীন বলেন, অভিযোগের বিষয়ে তদন্তসাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।