মানিকগঞ্জে কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষের বরখাস্ত দাবি
যুগান্তর প্রতিবেদন, মানিকগঞ্জ
প্রকাশ: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:৩৪ পিএম
মানিকগঞ্জ ইসলামিয়া কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আতিকুর রহমানের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলায় চার্জশিটভুক্ত হওয়ায় তাকে বিধিমোতাবেক সাময়িক বরখাস্ত করা এবং তার আর্থিক ও অন্যান্য দুর্নীতিসমূহ তদন্তপূর্বক আইনগত কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদন করেছেন মাদ্রাসার বর্তমান অধ্যয়নরত ও সাবেক শিক্ষার্থীরা।
গত ১১ সেপ্টেম্বর মানিকগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কাছে ওই অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। এর আগে মানিকগঞ্জ ইসলামিয়া কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মুহাম্মদ আতিকুর রহমানের বিরুদ্ধে ভুয়া ডিগ্রি ব্যবহার করে অধ্যক্ষ পদ বাগিয়ে নেওয়ার অভিযোগে মানিকগঞ্জ অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দুটি করেন মাদ্রাসার অভিভাবক সদস্য ও সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. আব্দুল মান্নান।
এ নিয়ে ২০২৩ সালের ১৫ মে দৈনিক যুগান্তরে ভুয়া ডিগ্রি ব্যবহার, মানিকগঞ্জে মাদ্রাসা অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে মামলা সমন শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছিল।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, মানিকগঞ্জ ইসলামিয়া কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আতিকুর রহমানকে বিগত ২০১৮ সালে ১১ নভেম্বর তারিখে তৎকালীন মাদ্রাসার সভাপতি স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেক স্বপন নিয়োগ বোর্ডে লিখিত পরীক্ষায় ২য় হওয়া ব্যক্তিকে নিজ দলীয় রাজনৈতিক বিবেচনায় অধ্যক্ষ পদে নিয়োগ প্রদান করেন। নিয়োগপ্রাপ্ত হয়েই তিনি শাসক দলের ছত্রছায়ায় প্রতিষ্ঠানের টাকা আত্মসাতসহ নানা দুর্নীতি, অনিয়ম অব্যাহত রেখেছেন।
অভিযোগপত্রে তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে- অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলায় অভিযোগ গৃহীত, অধ্যক্ষের ফাজিল, কামিল, বিএ অনার্স, মাস্টার্সসহ ৪টি সনদ জাল, মাদ্রাসার মার্কেটের ভাড়ার টাকা আত্মসাৎ, মাদ্রাসার ছাত্রছাত্রীদের বেতন ও পরীক্ষার ফির টাকা আত্মসাৎ, অধ্যক্ষ ও শিক্ষকের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলার খরচ বেআইনিভাবে মাদ্রাসার তহবিল হতে খরচ, অস্বাভাবিক ও ভুয়া বিল ভাউচারের মাধ্যমে টাকা আত্মসাৎ, মাদ্রাসার আসবাবপত্র ক্রয় কমিটির সিদ্ধান্ত ও অনুমোদন ছাড়াই নিজের ইচ্ছামাফিক লাখ লাখ টাকার বিল ভাউচার বানিয়ে টাকা আত্মসাৎ, ছাত্রীদের কমনরুম বন্ধ করে দোকান নির্মাণসহ মানিকগঞ্জ শহরে মাদ্রাসার মার্কেটের প্রতি মাসে এক লাখ আঠারো হাজার টাকা ভাড়া উত্তোলন করে আয় ব্যয়ের কোনো নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে নিজে এককভাবে মর্জি মাফিক ব্যয় দেখিয়েছেন।
অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, অধ্যক্ষ আতিকুর রহমান যোগদানের পূর্ব হতে মাদ্রাসার শিক্ষক ও কর্মচারীদের মাদ্রাসা হতে পাঁচ শতাংশ প্রভিডেন্ট ফান্ড এবং বাড়ি ভাড়া প্রদান করা হতো। অধ্যক্ষ গভর্নিং বডির সভায় আলোচনা ব্যতিরেকেই সব সদস্যদের না জানিয়ে শিক্ষক ও কর্মচারীর বাড়ি ভাড়া ৫% কমিয়ে দিয়ে নিজে অতিরিক্ত ১০% বাড়ি ভাড়া কৌশলে রেজুলেশনে অন্তর্ভুক্ত করেছেন। এছাড়াও আরও অনেক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
এ ব্যাপারে অধ্যক্ষ আতিকুর রহমান দাবি করেন, পরিকল্পিতভাবে বানোয়াট অভিযোগ দায়ের করে তাকে হয়রানি করা হচ্ছে।
এ ব্যাপারে মানিকগঞ্জ জেলা প্রশাসক ড. মানোয়ার হোসেন সাংবাদিকদের জানান, লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্তসাপেক্ষে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।