ভৈরবে ট্রেনের ইঞ্জিন হুইল স্লিপ, গণছিনতাইয়ের কবলে যাত্রীরা
ভৈরব (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:৫২ পিএম
ভৈরব রেলওয়ে সেতুতে উঠতে গিয়ে চট্টগ্রামগামী আন্তঃনগর মহানগর ট্রেনের ইঞ্জিন হুইল স্লিপের শিকার হয়ে আর উঠতে পারেনি। এতে ট্রেনটি সেতুর ভৈরবপ্রান্তে অন্তত ২৫ মিনিট থেমে থাকে। বারবার চেষ্টা করেও সেতুতে উঠতে না পারায় শেষে ট্রেনটি স্টেশনে ফিরিয়ে আনা হয়।
সোমবার রাত পৌনে ১২টার দিকে রেলওয়ে সেতুর ভৈরবপ্রান্তে এ ঘটনা ঘটে।
রেলওয়ে কর্মকর্তাদের ধারণা ট্রেনটি অতিরিক্ত লোডে থাকা এবং প্রচুর বৃষ্টির কারণে উঁচুতে উঠতে গিয়ে হুইল স্লিপের শিকার হয়।
এদিকে লম্বা সময় জনমানবহীন স্থানে থেমে থাকার কারণে ট্রেনের অনেক যাত্রী গণছিনতাইয়ের শিকার হয় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
রেলওয়ে সূত্র জানায়, প্রতিদিন এক জোড়া আন্তঃনগর মহানগর এক্সপ্রেস ট্রেন ঢাকা-চট্টগ্রামে চলাচল করে। সোমবার ট্রেনে আসনের দ্বিগুণেরও বেশি যাত্রী ছিল। মহানগর গোধুলী ট্রেনটি ভৈরব স্টেশনে যাত্রাবিরতির সময় রাত ১১টায়। সোমবার ট্রেনটি ভৈরব স্টেশনে আসে ৩২ মিনিট বিলম্বে ১১টা ৩২ মিনিটে। ছেড়ে যায় ১১টা ৩৫ মিনিটে। কয়েক মিনিট পরেই ট্রেনটি ভৈরব মেঘনা নদীর রেল সেতুতে উঠতে গিয়ে হুইল স্লিপের শিকার হয়। পরে ১২টা ৮ মিনিটে ট্রেনটি ভৈরব স্টেশনে ফিরে আসে। স্টেশনে ফিরিয়ে এনে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার যাত্রীদের কামরা থেকে নামানো হয়। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার যাত্রীদের নোয়াখালীগামী আন্তঃনগর উপকূল এক্সপ্রেসে করে গন্তব্যে পাঠিয়ে মহানগর ট্রেনের লোড কমানো হয়। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার যাত্রীদের নিয়ে উপকূল এক্সপ্রেস ট্রেনটি মহানগরের আগে ভৈরব স্টেশন ছেড়ে যায়। পরে ১২টা ৪৫ মিনিটে মহানগর ট্রেনটি সেতু অতিক্রম করে গন্তব্যে যায়।
ভুক্তভোগী ও স্থানীয়রা জানান, সেতুর কারণে ভৈরব স্টেশন থেকে লাইন উপরের দিকে উঠতে থাকে। সেতুর ভৈরবপ্রান্ত সড়ক থেকে অনেকটা উঁচুতে। এ অবস্থায় গভীর রাতে ট্রেনটি থেমে থাকায় যাত্রীদের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হয়। সাধারণত স্থানটিতে সব সময় ছিনতাইকারীদের আনাগোনা থাকে। ফলে হাতের কাছে ট্রেনের অসংখ্য যাত্রী পেয়ে ছিনতাইকারীরা নানা কৌশলে যাত্রীদের ব্যাগ ও মোবাইল ফোন কেড়ে নেয়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অনেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ সমস্যাটির কথা জানিয়ে পোস্টও দেন।
ওই ট্রেনের যাত্রী জমির হোসেন বলেন, ঘটনার সময় রাত প্রায় ১২টা। এ সময় নীরব স্থানে ট্রেনটির গতি কমে গেলে কয়েকজন ছিনতাইকারী একাধিক যাত্রীর ব্যাগ, মোবাইল টেনে নিয়ে যায়। এ সময় যাত্রীরা হৈ-হুল্লা চিৎকার করতে থাকেন।
ভৈরব স্টেশনমাস্টার মো. ইউসুফ বলেন, সোমবার মহানগর ট্রেনে অতিরিক্ত যাত্রী ছিল। বিশেষ করে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কামরা যাত্রীদের ঠাসা ছিল। সেতু অতিক্রম করার সময় ভৈরবে টানা বৃষ্টি হচ্ছিল। বৃষ্টি হলে লাইন পিচ্ছিল থাকে। এ অবস্থায় অতিরিক্ত লোডে থাকা ট্রেনটি উপরের দিকে উঠতে গিয়ে ইঞ্জিন হুইল স্লিপ হয়।
যাত্রীদের গণছিনতাইয়ের অভিযোগ বিষয়ে কথা হয় ভৈরব রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল আলিম সিকদারের সঙ্গে। তিনি গণছিনতাই হওয়ার কথা স্বীকার করতে রাজি হননি। তিনি বলেন, আমাদের কাছে কেউ ছিনতাইয়ের অভিযোগ করেননি।