প্রকৌশলী ও ঠিকাদারের যোগসাজশ
বিনা টেন্ডারে প্রকল্পের টাকা ভাগবাঁটোয়ারা
সিদ্দিক আলম দয়াল, গাইবান্ধা
প্রকাশ: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০১:৫৮ পিএম
ফাইল ছবি
কাজ না করেই ইঞ্জিনিয়ার, ঠিকাদার ও সাবেক এমপি মিলে ৪০ লাখ টাকার ভাগাভাগি করে নিয়েছেন। শুধু তাই নয় ঠিকাদারের সঙ্গে ভাগাভাগির চুক্তিতে টেন্ডার ছাড়াই কোটি টাকার কাজ ভাগ করেছেন তারা। এ অভিযোগ গাইবান্ধার গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী রফিকুল হাসানের বিরুদ্ধে।
লিখিত অভিযোগ থেকে জানা যায়, গাইবান্ধা গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী রফিকুল হাসান গাইবান্ধায় যোগদানের পর থেকে ঠিকাদারদের নিয়ে গড়ে তোলেন সিন্ডিকেট। তিনি কোটি টাকার ভাউচার বিলের মাধ্যমে কাজ দেখিয়েছেন ডিসি অফিস, জেলখানা, রেজিস্ট্রি অফিস, সিভিল সার্জন অফিসসহ বেশ কয়েকটি অফিসের। জেলা কারাগারে রং করা, ড্রেন করে পরিদর্শন না-করেই ঠিকাদারকে অর্ধেক বিল দিয়েছেন।
গাইবান্ধা জেলা ও সাব রেজিস্ট্রি অফিসে মেরামত কাজ করার জন্য ৮ লাখ টাকা বরাদ্দ। সেখানে পায়খানার পাইপ মেরামত ও সাদা চুনের কাজ করেছেন ২০ হাজার টাকার। তাতেই ঠিকাদারের সঙ্গে বাঁটোয়ারার শর্তে ৮ লাখ টাকা বাগিয়ে নিয়েছেন।
বিনা টেন্ডারে অফিসের পেছনে কাজ করতে গিয়ে সাধারণ ঠিকাদার ও পাবলিকের কাছে ধরা পড়ে। এ নিয়ে হইচই শুরু হলে গাইবান্ধার গণমাধ্যমকর্মীরা এসে বাস্তব ঘটনা দেখতে পান। পরে অবশ্য ঠিকাদারকে ভাউচার বিলে ৫ লাখ টাকার কাজের বিনিময়ে বিষয়টি উভয় পক্ষ মীমাংসা করে নেয়। সাবেক এমপি সারোয়ার হোসেন তাকে বাড়িতে ডেকে নিয়ে কাজের জন্য দেনদরবার করেন। এমপির সঙ্গে দফারফা করে তার তিন প্রিয়জনকে ডেকে ৪ লাখ টাকার মেরামত কাজ করতে দেন। প্রকৃতপক্ষে কাজের নামে প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম কাজ শুরুর আগেই বিল উত্তোলন করে ৪০ লাখ টাকা ভাগ করে নেন।
এ নিয়ে তোলপাড় শুরু হলে তার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়। তিনি নাকি সর্বদাই বলে থাকেন, আমি মুক্তিযোদ্ধার সন্তান কোটায় চাকরি পেয়েছি। কোটা- আমাকে এই চেয়ার দিয়েছে। তাই আমি ওসবের পরোয়া করি না। গেল সোমবার তার দুর্নীতি-অনিয়ম অর্থ লুটপাট নিয়ে ১৪ সেপ্টেম্বর দেওয়া অভিযোগের তদন্ত হয়। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ তদন্ত করেন। তদন্ত চলাকালীন তিনি তার পার্টনারদের নিয়ে অফিস চত্বরে লংকাকাণ্ড শুরু করেন। পরদিন ১৫ সেপ্টেম্বর তাকে শাস্তিমূলক বদলি করা হয়।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত প্রকৌশলী রফিকুল হাসান বলেন, আমি তো বদলি হয়ে এসেছি মেহেরপুরে। টেন্ডার ছাড়া কিছু কাজ করা হয়েছে স্বীকার করে বলেন, তা-তো জরুরি মেরামত কাজ। আমার বিরুদ্ধে লিখে আর কি হবে।