Logo
Logo
×

সারাদেশ

অশ্লীল ভিডিও ভাইরালের ভয় দেখিয়ে ৭ বছর ধর্ষণ

Icon

নোয়াখালী প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭:৪৯ পিএম

অশ্লীল ভিডিও ভাইরালের ভয় দেখিয়ে ৭ বছর ধর্ষণ

প্রেমের সম্পর্কের সূত্র ধরে জোরপূর্বক ধর্ষণের অশ্লীল ছবি-ভিডিও ধারণ। সেই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল করার হুমকিতে এক কিশোরীকে ৭ বছর ধরে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার বাবু নগর গ্রামের আবদুল করিমের ছেলে রাহাত হোসেনের বিরুদ্ধে। 

ধর্ষণের ঘটনা ফাঁস হয়ে গেলে পারিবারিকভাবে রাহাতের সঙ্গে ভিকটিমের বিয়ে হয়। শনিবার সকালে জেলা শহর মাইজদীতে সংবাদ সম্মেলনে ভিকটিমের মা এসব অভিযোগ করেন।

অভিযোগ করে তিনি বলেন, রাহাত আমার আপন ভাইয়ের ছেলে হয়। রাহাত আমার কিশোরী কন্যার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কের সূত্র ধরে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে এবং ধর্ষণের অশ্লীল ছবি-ভিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে ২০১৭ সাল থেকে ৭ বছর ধরে বাসাবাড়িসহ বিভিন্ন স্থানে নিয়ে ভিকটিমকে ধর্ষণ করে। পরবর্তীতে ভিকটিম রাহাতকে বিয়ের জন্য চাপ প্রয়োগ করলে সে তার চাচাত ভাই শামীমকে দিয়ে ভিকটিমের অশ্লীল ছবি-ভিডিও আত্মীয়-স্বজনের মুঠোফোনে ছড়িয়ে দেয়।

তিনি বলেন, ২০২৩ সালের নভেম্বর মাসে ঘটনার জানাজানি হলে আমি আমার বড় ভাই অভিযুক্ত ধর্ষকের জেঠা আবদুর রহিমকে ঘটনা জানাই। প্রথমে তারা এই সম্পর্ক মেনে নিতে চায়নি। পরে আইনের ভয়ে পাঁচদিন যাবৎ সালিস বৈঠকের পর ২০২৩ সালের ৫ ডিসেম্বর সামাজিক ব্যক্তিবর্গের হস্তক্ষেপে রাহাত ও ভিকটিমের বিবাহ সম্পন্ন হয়। কিন্তু ওই সময়ে ভিকটিমকে নিজ বাড়িতে নিতে অস্বীকৃতি জানায় রাহাত। পরে দীর্ঘ ৬ মাস পর ভিকটিমকে স্ত্রীর মর্যাদা দিয়ে বাড়িতে তুলে নিতে রাহাতকে চাপ প্রয়োগ করলে ২০ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে রাহাতের জেঠা আবদুর রহিম।

তিনি বলেন, আমি গরিব মানুষ, আমার স্বামী রাজমিস্ত্রী কাজ করে আমাদের সংসার চালান। আমার পক্ষে ২০ লাখ টাকা যৌতুক দেওয়া সম্ভব না। তারপরও মেয়ের জীবনের চিন্তায় ধার-দেনা করে ৫ লাখ টাকা সংগ্রহের পর অভিযুক্ত রাহাতের জেঠা আবদুর রহিমের কাছে দেই। কিন্তু তিনি বাকি ১৫ লাখ টাকা না দেওয়ায় ক্ষুদ্ধ হন। সর্বশেষ গত ১৭ সেপ্টেম্বর আমি আমার মেয়ে ভিকটিমকে নিয়ে রাহাতের বাড়ি গিয়ে ভিকটিমকে ঘরে তোলার দাবি জানালে আবদুর রহিম, রাহাতসহ তাদের পরিবারের সদস্যরা আমাকে এবং আমার মেয়ে ভিকটিমকে জোরপূর্বক মারধর করে পাশ্ববর্তী এলাকার কাজী ডেকে ভিকটিমকে দিয়ে জোরপূর্বক তালাক নামায় স্বাক্ষর নেয় এবং ভিকটিমের হাতে নগদ ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা দিয়ে মুঠোফোনে ভিডিও ধারণ করে নেয়। ভিডিও ধারণ শেষ হলে তারা পুনরায় টাকাগুলো নিয়ে আমাদেরকে বাড়ি থেকে গাঁড় ধরে বের করে দেয়।

নির্যাতনের শিকার ভিকটিম বলেন, আমার সরলতার সুযোগ নিয়ে আমাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ এবং ধর্ষণের ছবি-ভিডিও ধারণ করে রাহাত। ওই অশ্লীল ছবি-ভিডিওর ভয় দেখিয়ে দীর্ঘ ৭ বছর রাহাত আমাকে পুতুলের মতো ব্যবহার করেছে, আমার সব কেড়ে নিয়েছে। আমি এবং আমার পরিবারের সদস্যরা যেন তার সামনে না যাই। তার বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ কোথাও না করি। সেই জন্যে রাহাত আমাকে হুমকি দিচ্ছে। সে বলছে, যদি তার বিরুদ্ধে কথা বলি তাহলে আমার অশ্লীল ছবি-ভিডিও ভাইরাল করে দিবে, আমাকে এবং আমার পরিবারের সদস্যদের হত্যা করে লাশ গুম করবে।

ধর্ষক রাহাত, তার জেঠা আবদুর রহিম ও শামীমের হাত থেকে বাঁচতে এবং তাদের গ্রেফতারপূর্বক বিচার দাবি করেছেন ভুক্তভোগী এবং তার পরিবারের সদস্যরা।

বেগমগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ারুল ইসলাম জানান, খায়রুন নেছা নামের এক নারী এই সংক্রান্ত একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। পুলিশ ঘটনাটি তদন্ত করছে। এব্যাপারে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম