তালতলীতে বাকপ্রতিবন্ধীর মুখ থেঁতলে দিল আ.লীগ নেতার ছেলে
যুগান্তর প্রতিবেদন,আমতলী (বরগুনা)
প্রকাশ: ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০২:২৭ এএম
মিষ্টি কুমড়া চুরির প্রতিবাদ করায় বাকপ্রতিবন্ধী শাহজাহান হাওলাদারকে ইট দিয়ে পিটিয়ে মুখমণ্ডল থেঁতলে দেওয়া হয়েছে। আহত বাকপ্রতিবন্ধীর ভাই মহিউদ্দিন হাওলাদার এ অভিযোগ করেন। প্রতিবেশী শারিকখালী ইউনিয়নের কচুপাত্রা ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি আবুল হোসেন হাওলাদারের ছেলে সানাউল্লাহ ও তার ভাইয়ের ছেলে কাইয়ুম হাওলাদার এ কাণ্ড করেছে বলে অভিযোগ। রক্তাক্ত অবস্থায় শাহজাহানকে প্রথমে তালতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। পরে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তালতলী উপজেলার কচুপাত্রা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, গ্রামের আব্দুর রহমান হাওলাদারের বাকপ্রতিবন্ধী ছেলে শাহজাহান হাওলাদার বাড়ির জমিতে সবজি চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন। ওই জমির মিষ্টি কুমড়া প্রায়ই চুরি হয় বলে দাবি করেন শাহজাহানের স্ত্রী ঝরনা বেগম। বৃহস্পতিবার বিকালে সবজি চুরির বিষয়টি প্রতিবেশী কচুপাত্রা ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি আবুল হোসেন হাওলাদারের ছেলে সানাউল্লাহ হাওলাদার ও তার ভাইয়ের ছেলে কাইয়ুম হাওলাদারের কাছে জানতে চাওয়া হয়। এতে ক্ষিপ্ত হন তারা। সন্ধ্যায় শাহজাহান কচুপাত্রা বাজারে যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে ওৎপেতে থাকা কাইয়ুম, সানাউল্লাহ ও জয়নাল হাওলাদার তাকে ধরে ইট দিয়ে পিটিয়ে মুখমণ্ডল থেঁতলে দেয়। খবর পেয়ে স্বজনরা তাকে উদ্ধার করে তালতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানকার চিকিৎসক পরে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করে। অভিযোগ রয়েছে, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি আবুল হোসেন ও তার লোকজন বাকপ্রতিবন্ধী শাহজাহানকে বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করতেই একের পর এক এমন ঘটনা ঘটিয়ে যাচ্ছেন।
আহত শাহজাহান হাওলাদারের ছোট ভাই মহিউদ্দিন হাওলাদার বলেন, সবজি খেতের মিষ্টি কুমড়া চুরির বিষয়টি জানতে চাইলে আমার বাকপ্রতিবন্ধী ভাইকে প্রতিবেশী আবুল হোসেন হাওলাদারের ছেলে সানাউল্লাহ, তার ভাই জয়নাল ও ভাইয়ের ছেলে কাইয়ুম ইট দিয়ে পিটিয়ে মুখমণ্ডল থেঁতলে দিয়েছে।
তিনি বলেন, আমার ভাইকে বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করতেই একের পর এক ঘটনা ঘটিয়ে চলেছেন আবুল হোসেন হাওলাদার।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে কচুপাত্রা ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি আবুল হোসেন হাওলাদার বলেন, শাহজাহান হাওলাদারকে আমার ভাইয়ের ছেলে কাইয়ুম মারধর করেছে। তবে আমার ছেলে সানাউল্লাহ মারধরের সঙ্গে জড়িত নয়।
তালতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা একেএম মনিরুল ইসলাম বলেন, প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে শাহজাহানকে উন্নত চিকিৎসার জন্য পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
তালতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহীদুল ইসলাম খান বলেন, এ ব্যাপারে এখনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।