জালটাকা তৈরির মূল হোতাসহ আটক দুই
কেরানীগঞ্জ (ঢাকা) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১:২৯ পিএম
ঢাকার কেরানীগঞ্জ এলাকা থেকে জাল তিন লক্ষাধিক টাকা এবং জালটাকা তৈরির বিপুল পরিমাণ সরঞ্জামাদিসহ দুইজনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-১০।
বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে র্যাব-১০ লালবাগ ক্যাম্পের একটি দল ঢাকা জেলার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানাধীন সুভাঢ্যা এলাকায় একটি অভিযান পরিচালনা করে ২ জন জালটাকা প্রস্তুতকারীকে গ্রেফতার করে।
গ্রেফতার দুইজন হলো পিরোজপুরের গিয়াস উদ্দিন ও রেদোয়ান শেখ (মুমিন)। উভয়ের বর্তমান ঠিকানা মুসলিম নগর, চুনকুটিয়া, দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ, ঢাকা বলে জানা গেছে।
তাদের কাছ থেকে ১০০ টাকার জালনোট ২৮০০টি= ২,৮০,০০০/- (দুই লাখ আশি হাজার) টাকা ও ৫০ টাকার জাল নোট ৬০০টি= ৩০,০০০/- (ত্রিশ হাজার) টাকা। মোট (২,৮০,০০০+৩০,০০০) = ৩,১০,০০০/- (তিন লাখ দশ হাজার) টাকা এবং একটি ল্যাপটপ, একটি প্রিন্টার, একটি কি-বোর্ড, একটি মাউস, ৪টি ক্যাবল, একটি রাউটার, একটি হেয়ার ড্রায়ার, একটি পাম্প এন্ড স্প্রে, একটি ফয়েল রোল, ৮ বোতল বিভিন্ন রংয়ের কালি, একটি স্টিলের স্কেল, ২টি কার্টার, ৩টি কার্টিং ফ্রেম, ১০০ পাতা কাগজ, নগদ ২০০০/- টাকা, পাকিস্তানি ৫০ রুপি ও তিনটি মোবাইল ফোন উদ্ধার এবং একটি মোটরসাইকেল জব্দ করা হয়।
সাম্প্রতিক সময়ে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব জানতে পারে, একটি প্রতারক চক্র দীর্ঘদিন ধরে জালনোট তৈরি করে রাজধানী ঢাকার কেরানীগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, যাত্রাবাড়ী, কদমতলী, শ্যামপুর, ডেমরা এবং নারায়ণগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহ করে আসছে। এই চক্রটি জাল নোটের ব্যবসা করে সাধারণ মানুষকে প্রতারিত করে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে। র্যাব এই প্রতারক চক্রের সদস্যদের আইনের আওতায় নিয়ে আসার লক্ষ্যে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে।
র্যাব ১০ সূত্রে জানা গেছে, গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তিরা একটি সংঘবদ্ধ জালটাকা প্রস্তুত ও সরবরাহকারী চক্র। তারা ইউটিউব ও গুগলসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সাহায্যে জালটাকা তৈরির সার্বিক দক্ষতা অর্জন করে। অতঃপর তারা উচ্চভিলাষী অভিপ্রায় ও কম সময়ে অল্প পুঁজিতে অধিক অর্থ উপার্জনের উদ্দেশ্যে জাল টাকা প্রস্তুত করার পরিকল্পনা করে।
র্যাব আরও জানায়, চক্রটি বিভিন্ন সময়ে রাজধানী ঢাকার কেরানীগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ, যাত্রাবাড়ী, কদমতলী, শ্যামপুর, ডেমরা এবং নারায়ণগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় তৈরি করা জালনোট সরবরাহ করত। তারা প্রতি ১ লাখ টাকা মূল্যের জালনোট ১৫-২০ হাজার টাকার বিনিময়ে বিক্রি করত। বিশেষ করে মাছ বাজার, লঞ্চ ঘাট, বাস টার্মিনালসহ বিভিন্ন মার্কেটে নানান কৌশল অবলম্বন করে জালনোট সরবরাহ করে করত। এছাড়া তারা অধিক জনসমাগম অনুষ্ঠান বিশেষ করে বিভিন্ন মেলা, উৎসব, পূজা ও কোরবানীর পশুহাট উপলক্ষে বিপুল পরিমাণ জালনোট ছাপিয়ে ছিল বলে তথ্য প্রদান করে।
গ্রেফতার হওয়া আসামিদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা করে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।