মনপুরা ঘাটে লঞ্চে সন্ত্রাসী হামলায় আহত ১০, উত্তেজনা
ভোলা ও মনপুরা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৮:৩৯ পিএম
ভোলার মনপুরা লঞ্চঘাটে ঢাকাগামী এমভি তাসরিফ-১ লঞ্চে হামলা করেছে সন্ত্রাসীরা। এ সময় লঞ্চের ৫ স্টাফসহ অন্তত ১০ জন আহত হন।
একই রুটের এমভি ফারহান-৪ লঞ্চের ম্যানেজার গাজির নেতৃত্বে বহিরাগত সন্ত্রাসীরা এ হামলা চালায় বলে অভিযোগ করেন তাসরিফ লঞ্চের ম্যানেজার আহত মো. রাজিব। গুরুতর আহত রাজিবকে বৃহস্পতিবার ভোররাতে দৌলতখান উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
ভোলার নদীবন্দর কর্মকর্তা ও বিআইডব্লিউটিএর সহকারী পরিচালক মো. সহিদুল ইসলাম যুগান্তরকে জানান, হামলার বিষয়টি তার নজরে এলেই তা দ্রুত প্রধান কার্যালয়ের পরিচালককে অবহিত করা হয়েছে। ইতোমধ্যে ৩ সদস্যের তদন্ত টিম গঠন করা হয়েছে।
স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, ওই রুটে চলাচলকারী এমভি ফারহান (টিপু) লঞ্চের মালিক ও স্টাফদের কাছে গেল ১৫ বছর ধরেই যাত্রীরা জিম্মি হয়ে আছে। সম্প্রতি হাকিমউদ্দিন ঘাটে একটি মাছ ধরা জেলে নৌকাকে চাপ দিয়ে ডুবিয়ে দিলে ২ জন মারা যান। নিহত পরিবারের ক্ষতিপূরণ আজও পরিশোধ করা হয়নি। এরা একেকটি ঘাটে নির্দিষ্ট সময়ের বেশি সময় যাত্রী ও মালামাল পরিবহণ করায় অপরাপর লঞ্চ লোকসানের মুখে পড়ে। বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষ বারবার সর্তক করলেও তারা বিগত দিনের ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে রামরাজত্ব করে বলেও অভিযোগ স্থানীয়দের।
একই অবস্থা বর্তমানেও বহাল রয়েছে বলে অভিযোগ করেন তাসরিফ লঞ্চের তদারকি কর্মকর্তা কাজী ইকবাল।
সন্ত্রাসী হামলায় আহতরা হলেন, তাসরিফ-১ লঞ্চের স্টাফ রাজিব, হেলাল উদ্দিন, সোহাগ, শাহিন, জাকির হোসেন। গুরুতর আহত রাজিবকে ভোররাতে দৌলতখান উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
আহত রাজিব জানান, নিয়ম অনুযায়ী হাতিয়া থেকে এমভি তাসরিফ-১ লঞ্চটি বেলা ১টার দিকে ছেড়ে মনপুরা লঞ্চঘাটে গেলে ফারহান-৪ লঞ্চের স্টাফরা বাধা দেয়। অথচ তখন ফারহান লঞ্চের নির্ধারিত সময়সূচি শেষ হয়ে গেলেও ওই ফারহান-৪ লঞ্চঘাট ছেড়ে না গিয়ে যাত্রী ও মালামাল তাদের লঞ্চে তুলতে বাধ্য করছিল। এ বিষয়টির প্রতিবাদ জানাতে গেলেই তারা তাদের পালিত বহিরাগত আওয়ামী সন্ত্রাসীদের দিয়ে হামলা চালায়।
এ ব্যাপারে ফারহান-৪ লঞ্চের সুপারভাইজার গাজি মো. ফারুক জানান, তারা কোনো হামলা করেননি। তাদের লঞ্চ মনপুরা ঘাটে মাছের ঝুড়ি তুলছিল। সময় শেষ হওয়ায় একটি ঝুড়ি তোলা বাকি থাকতেই তারা দ্রুত ঘাট ছাড়ে। এ নিয়ে মাছের ঝুড়ির মালিকপক্ষ সাইফুল পাটোয়ারী, নোমান মিয়ার লোকজান তাসরিফ লঞ্চ স্টাফদের দোষারোপ করে হামলা চালায়। এসব ঘটনাকে কেন্দ্র করে পরবর্তি হাকিমুদ্দিন, দৌলতখান ঘাটে তাদের ভিড়তে দেওয়া হয়নি। এমনকি ইলিশাঘাটে তাদের উপর হামলা করা হয়। তাকে পিটিয়ে মেরুদণ্ড ভেঙে দেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন গাজি।
মনপুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জহিরুল ইসলাম জানান, কোনো লঞ্চ মালিকপক্ষ লিখিত অভিযোগ দেননি। তবে মনপুরা রামনেওয়াজ মাছ ঘাট ব্যবসায়ী সাইফুল পাটোয়ারী একটি জিডি করেছেন।
ভোলা থানার ওসি মিজানুর রহমান জানান, মনপুরা ঘাটের রেশ ধরে ইলিশাঘাটে ঝামেলা হয়েছিল। তবে এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক বলে জানান তিনি। ঘাটে পুলিশ টহল রয়েছে।