নেত্রকোনায় সমন্বয়কদের ওপর দোকানিদের হামলা
নেত্রকোনা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:৪৯ পিএম
নেত্রকোনা জেলা শহরের একটি কসমেটিকসের দোকানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের ওপর হামলা অভিযোগ উঠেছে।
মঙ্গলবার বিকালে শহরের বড়বাজার এলাকায় বাজার মনিটরিং ও ভোক্তা অধিকারের অভিযান চলাকালীন দোকান মালিক ও কর্মচারীরা সমন্বয়কদের ওপর হামলা করে।
এ সময় সমন্বয়কদের মধ্যে নারী শিক্ষার্থীদের শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা হয়। পরে সেনাবাহিনী এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনে হামলাকারীদের মধ্য থেকে শুভ্র নামের একজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে যায়। তবে আটক শুভ্র নিজেকে সমন্বয়ক দাবি করেন। পরে মালিক সমিতির উপস্থিতিতে সতর্ক করে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
জানা গেছে, নিজেকে সমন্বয়ক দাবি করা শুভ্র বড়বাজারের নন্দিতা কসমেটিকসের দোকানদার।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মঙ্গলবার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা ভোক্তা অধিকারকে জানায় বিএসটিআই অনুমোদনহীন, চোরাই পথে আসা নিষিদ্ধ পণ্য কসমেটিকসের দোকানে বিক্রি হয়। দুপুরে ভোক্তা অধিকার কর্মকর্তা এবং সমন্বয়করা বাজার মনিটরিংয়ে যায়।
সৈকত স্টোর নামে একটি দোকানে অভিযান চালালে সেখানে নিষিদ্ধ চোরাই পণ্যসহ বিএসটিআইর লোগোহীন কিছু পণ্য পাওয়া যায়। এ ঘটনায় ভোক্তা অধিকার দোকান মালিককে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করেন।
এরপর বড়বাজার এলাকার সব কসমেটিকস দোকানের মালিক ও কর্মচারীরা এসে সমন্বয়কদের সঙ্গে বাগবিতণ্ডা শুরু করেন। একপর্যায়ে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করেন তারা। এর মধ্যে নারী শিক্ষার্থীদের শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ ওঠে।
এ সময় খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় সেনাবাহিনী। তাদের উপস্থিতিতেও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করে দোকান মালিকরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে শুভ্র নামের একজনকে সেনাবাহিনীর অস্থায়ী ক্যাম্পে নেওয়া হয়।
কয়েকজন সমন্বয়কের দাবি, আমরা দীর্ঘদিন ধরেই নেত্রকোনার কসমেটিকস বাজারে অনিয়মের বিষয়টি জেনে আসছি। আজ দুপুরে ভোক্তা অধিকারের সঙ্গে আলোচনা করে আমরা বাজার মনিটরিংয়ে যাই। ভোক্তা অধিকারের কর্মকর্তারা সৈকত স্টোরে অবৈধ, ব্যবহার নিষিদ্ধ এবং চোরাই পণ্য পাওয়ায় জরিমানা করেন। এরপরই অন্য দোকানি ও কর্মচারীরা আমাদের ওপর হামলা করে। আমরা চাই নিষিদ্ধ ও ট্যাক্স ফাঁকি দেওয়া পণ্য যাতে অতিরিক্ত মূল্যে কেউ বিক্রি করতে না পারে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কসমেটিকস দোকান মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ঝন্টু সাহা বলেন, ‘আমি সেনা ক্যাম্পে আছি। একটু পরে কথা বলব।’
নেত্রকোনা ভোক্তা অধিকার কার্যালয়ের অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সহকারী পরিচালক আব্দুস ছালাম বলেন, ‘আমরা বাজার মনিটরিংয়ে গিয়ে প্রথমে সৈকত স্টোর নামে একটি দোকানে অভিযান পরিচালনা করি। সেখানে নিষিদ্ধ ও অবৈধ পথে আনা পণ্য পাই। পরে দোকান মালিককে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করি। তখন ওই মার্কেটে দোকানের লোকজন এসে সমন্বয়কদের ওপর হামলা করে। আমরা এবং পথচারীরা তাদের থামানোর চেষ্টা করি।’
নেত্রকোনা অস্থায়ী সেনাবাহিনী ক্যাম্পের মেজর জিসানুল হায়দার বলেন, ‘আমরা কিছুদিন ধরে লোকজনের কাছে শুনছিলাম কসমেটিকস দোকানে ভোক্তাদের বিভিন্নভাবে হয়রানি করা হয়। আজ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের ওপর হামলার খবর পেয়ে সেখানে গিয়ে সেনাবাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ আনে এবং একজনকে ক্যাম্পে এনে দোকান মালিকদের উপস্থিতিতে সবাইকে সতর্ক করে।’