দায়িত্ব নেওয়ার আড়াই ঘণ্টা পর পদত্যাগে বাধ্য হলেন অধ্যক্ষ

রাজশাহী ব্যুরো
প্রকাশ: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:৩০ পিএম

দায়িত্ব গ্রহণের আড়াই ঘণ্টা পর পদত্যাগ করেছেন রাজশাহী কলেজের নবনিযুক্ত অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. আনারুল হক প্রামাণিক। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে মঙ্গলবার দুপুর ২টার দিকে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন তিনি।
একটি সাদা কাগজে ড. আনারুল হক প্রামাণিক লিখেছেন, ‘শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে পদত্যাগ করলাম। বিষয়টি সদয় বিবেচনার জন্য প্রেরণ করা হইল।’
ড. আনারুল হক তার পদত্যাগপত্র উপাধ্যক্ষের কাছে জমা দেন। এরপর সেনাবাহিনী ও বিজিবির সহায়তায় ক্যাম্পাস ছাড়েন তিনি।
এর আগে দুপুর পৌনে ১২টার দিকে প্রশাসন ভবনে প্রবেশ করে দায়িত্ব গ্রহণ করেন নবনিযুক্ত অধ্যক্ষ। শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে অধ্যাপক আব্দুল খালেক অধ্যক্ষের পদ থেকে পদত্যাগের পর গত ৯ সেপ্টেম্বর নতুন অধ্যক্ষ হিসেবে ড. আনারুল হক প্রামাণিককে পদায়ন করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
এরপর থেকেই শিক্ষার্থীরা তার নিয়োগ বাতিলের জন্য লাগাতার আন্দোলন করছিলেন।
শিক্ষার্থীদের দাবি, আওয়ামী লীগের ‘দালাল’ ড. আনারুল হক রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক থাকাকালে আর্থিক কেলেঙ্কারিতে জড়ান। শিক্ষা বোর্ডে ২০১৬-১৭ অর্থবছরে বোর্ডের ১৮ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশন মামলাও করে। পরে রাজশাহী সিটির সাবেক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের সুপারিশে তিনি শহীদ বুদ্ধিজীবী কলেজের অধ্যক্ষের পদ বাগিয়ে নেন। তাই তারা বিতর্কিত এই শিক্ষককে অধ্যক্ষ মানবেন না।
যোগাযোগ করা হলে পদত্যাগ করা অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. আনারুল হক প্রামাণিক বলেন, শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে আমি পদত্যাগপত্র লিখে দিয়েছি। কাউকে অ্যাড্রেস না করে কথাগুলো লিখে দিয়েছি। এখন মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত নেবে। যেখানে পদায়ন করবে সেখানেই চাকরি করব।
কলেজের শিক্ষার্থী ও আন্দোলনের সমন্বয়কারী মহুয়া মৌ বলেন, ড. আনারুল হক অধ্যক্ষের পদে যোগ দিতে আসবেন শুনে আমরা প্রশাসন ভবনে তালা দেই। পরে তিনি পুলিশ, বিজিবি, সেনাবাহিনী ও শিক্ষকদের একাংশকে নিয়ে এসে প্রশাসন ভবনে ঢোকেন। এ সময় আমরা প্রতিবাদ করি এবং তার পদত্যাগের দাবিতে অনড় থাকি। শেষ পর্যন্ত তিনি পদত্যাগে বাধ্য হন।
মহুয়া বলেন, স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে গিয়ে এই কলেজের আমাদের একজন ভাই শহিদ হয়েছেন। এই কলেজের শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে কমতি রাখেননি। এ রকম পবিত্র ক্যাম্পাসে তার মতো ব্যক্তি কেন এলেন, এটি আমাদের প্রশ্ন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কাছে। আমরা মন্ত্রণালয়ে আবার স্মারকলিপি পাঠাব, যেন নিরপেক্ষ এবং সৎ একজনকে অধ্যক্ষ নিয়োগ দেওয়া হয়।