ব্যবসায়ীকে পিটিয়ে বাড়ি দখলের অভিযোগ যুবদল নেতার বিরুদ্ধে
আব্দুল মালেক, শ্রীপুর(গাজীপুর) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭:৪২ পিএম
গাজীপুরের শ্রীপুরে এক ব্যবসায়ীকে পিটিয়ে পা ভেঙে তার ফ্যামিলিকে টেনে হিঁচড়ে বাড়ি থেকে বের করে দিয়ে পাঁচতলা বাড়ি দখলে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে এক যুবদল নেতার বিরুদ্ধে।
অভিযুক্ত সেলিম আহমেদ (৪২) শ্রীপুর পৌর যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক এবং পৌর এলাকার ৮নং ওয়ার্ডের দারগার চালা গ্রামের আব্দুল মোতালেবের ছেলে।
ভুক্তভোগী বাড়ির মালিক মো. কবির তালুকদার (৪৫) উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়নের শৈলাট গ্রামের মৃত হাফিজ উদ্দিন তালুকদারের ছেলে।
কবির তালুকদার জানান, বিগত সাড়ে তিন বছর পূর্বে শ্রীপুর পৌর এলাকার দারগারচালা গ্রামের নূরুল ইসলামের নিকট হতে পৌনে নয় শতাংশ জমি ক্রয় করে পাঁচ তলা ভবনের কাজ শুরু করেন এবং দুই বছর আগে কাজ শেষ হয়। এরই মধ্যে উক্ত বাড়ির ওপর এক কোটি পাঁচ লাখ টাকার ঋণ গ্রহণ করেন ওয়ান ব্যাংক থেকে।
গত ৫ আগস্ট ছাত্র জনতার আন্দোলনে সরকার পতনের পর ডিবি হারুনের সঙ্গে ব্যবসায়ী কবির তালুকদারের সখ্যতা রয়েছে এমন অপবাদ দিয়ে এবং ওই জমির দাতা নুরুল ইসলামের চাচাতো ভাই মানিক মিয়া ও অভিযুক্ত যুবদল নেতা সেলিম আহমেদ ওই বাড়িতে পৌনে দুই শতাংশ জমি পাবে এমন দাবি করে পাঁচতলা বাড়িটি জবরদখল করে নেয়।
বাড়ির মালিক কবির তালুকদার অভিযোগ করেন, গত ২৫ আগস্ট যুবদল নেতা সেলিম আহমেদের নেতৃত্বে বাড়িটি জবরদখল করে নেওয়ার সময় দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে অর্ধ শতাধিক সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে আমিও আমার পরিবারকে মারধর করে টেনে হিঁচড়ে এলোপাতারি পিটিয়ে বাড়ি থেকে নামিয়ে দেয়।
এ সময় তাদের পিটুনিতে আমার একটি পা ভেঙে যায়। এছাড়াও আইপিএস, টিভি, ফ্রিজ, বাড়ির নির্মাণ কাজের জন্য স্টক কৃত রং, বৈদ্যুতিক সরঞ্জামাদি, আসবাবপত্রসহ ১০ লক্ষাধিক টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে যায়।
তিনি আরও জানান, পরবর্তীতে ওই দখলদার যুবদল নেতা সেলিম আহমেদ আমার বাড়িতে না যাওয়ার জন্য আমাকে টেলিফোনে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। এমন একটি অডিও রেকর্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
চলতি মাসের দশ তারিখে উক্ত বাড়ির ভাড়াটিয়াদের কাছ থেকে জোরপূর্বক ৬৬ হাজার টাকা ভাড়া তুলে নিয়ে যায় সেলিম আহমেদ।
এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী কবির তালুকদার শ্রীপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন।
বাড়িতে নির্মাণকাজ চলমান থাকায়, ইলেকট্রিক মিস্ত্রি মো. বেলায়েত, রাজমিস্ত্রি নজির আহমেদ এবং একাধিক ভাড়াটিয়া বাড়িটি দখলের প্রত্যক্ষ সাক্ষী হিসেবে স্বীকারোক্তি দেন। বাড়ির নিরাপত্তাকর্মী মো. শহর আলী জানান, বাড়িতে দখলের সময় সেলিমের নেতৃত্বে আমাকে মারধর করা হয়। পরবর্তীতে সেলিম আমার কাছে গিয়ে ক্ষমা প্রার্থনা করে।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত সেলিম আহমেদ বলেন, সাবেক ডিবি প্রধান হারুনের সহযোগিতায় কবির তালুকদার জমি দখল করে নেয় তাই আমাদের জমির ওপর বাড়িটি আমরা বুঝে নিয়েছি। এছাড়াও নির্মিত এই বাড়ির সীমানায় আমার চাচাতো ভাই মানিক মিয়া এবং আমি পৌনে দুই শতাংশ জমি পাব।
শ্রীপুর থানার উপ-পুলিশ পরিদর্শক সুজন কুমার পন্ডিত যুগান্তরকে জানান, এ বাড়ির দখলের অভিযোগ পেয়েছি, তদন্ত কাজ চলছে।