মহিলা দল নেত্রীকে নির্যাতন আমুর এপিএসসহ ৯৩ জনের নামে মামলা

ঝালকাঠি প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৯:০৯ পিএম

মুক্তা বেগম (৩৩) নামে এক নারীর গর্ভের সন্তান নষ্ট ও গত ৫ জানুয়ারি ২০২২ বিএনপির গণতন্ত্র হত্যা দিবসের বিক্ষোভ মিছিলে বোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়ে পণ্ড করার অভিযোগে সাবেক শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমুর এপিএসসহ ৯৩ জনের নামে মামলা ঝালকাঠি সদর থানায় মামলা হয়েছে।
সোমবার বিকালে শহরের আমতলা গলি সড়কের আ. কুদ্দুস হাওলাদার লেলিনের স্ত্রী ও ঝালকাঠি জেলা মহিলা দলের সাংগঠনিক সম্পাদক মুক্তা বেগম বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করেন।
মামলায় সাবেক পাবলিক প্রসিকিউটর ও কৃষক লীগের সভাপতি আ. মান্নান রসুল, সাবেক শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমুর এপিএস (ভায়রা) ফকরুল মজিদ কিরন, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হাফিজ আল মাহমুদসহ ৯৩ জনের নাম উল্লেখসহ ৩৪৩ জনকে আসামি করা হয়েছে।
মামলায় মুক্তা বেগম অভিযোগ করেন, ২০২২ সালের ৫ জানুয়ারি সকাল সাড়ে ১০টায় ঝালকাঠি জেলার বিএনপি ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের সব নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে আইনজীবী সমিতি অতিক্রমকালে আসামীরা দেশীয় অস্ত্র লোহার রড, হকিস্টিক, জি আই পাইপ, হাতুড়ি, রামদা চাইনিজ কুড়াল, চাপাতি লাঠিসোটাসহ ককটেল বোমা নিয়ে হামলা করে। এ সময় জনমনে চরম আতংক সৃষ্টি হয় এবং নেতাকর্মীরা ছত্রভঙ্গ হইয়া পড়ে। আসামিরা বিএনপির নেতাকর্মীদের মারাত্মক জখম করে।
তিনি বলেন, আমি তিন মাসের অন্তঃসত্ত্বা থাকায় ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যাওয়ার জন্য চেষ্টা করলে আসামিরা আমার চুলের মুঠি ধরিয়া পেটে লাথি ও কিলঘুসি মারে। আমি পাকা রাস্তার ওপর পরে যাই। এর পর অন্যান্য আসামিরা একত্রিত হইয়া আমার পেটে বুকে লাথি মারে ও পদদলিত করে। আসামিদের নির্যাতনে আমার গর্ভের ভ্রূণ নষ্ট হয়ে যায় এবং আমি রক্তাক্ত হইয়া রাস্তায় পরে যাই। আসামীরা বোমার বিস্ফোরণ ঘটাইয়া ঘটনাস্থল ত্যাগ করার কিছুক্ষণ সাক্ষীরা আমাকে উদ্ধার করে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে জরুরি বিভাগে নিয়ে যায়।
ডাক্তাররা প্রাথমিক চিকিৎসা শুরু করার কিছুক্ষণের মধ্যেই ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও সারমিন মৌসুমি কেকার নেতৃত্বে সব বাহিনীসহ হাসপাতালে গিয়ে জোরপূর্বক আমাকে জরুরি বিভাগ থেকে বের করে দেয়। আমার আত্মীয় স্বজন গোপনে প্রাইভেট চেম্বারে আমার চিকিৎসা করায়। চিকিৎসকরা পরীক্ষা নিরীক্ষা করিয়া আমাকে জানায় আসামিদের নির্যাতনে আমার গর্ভের সন্তান নষ্ট হয়ে গেছে। আমি তৎকালীন স্বৈরশাসনের ফলে ঝালকাঠি সদর থানা বা আদালতে মামলা করিতে পারিনি।
ঝালকাঠি থানার ওসি মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, মুক্তা বেগমের অভিযোগের প্রাথমিক তদন্তে সত্যতা পাওয়ায় মামলা রেকর্ড করা হয়েছে। যাদের বিরুদ্ধে ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া যাবে তাদেরকে গ্রেফতার করে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।