বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন
শহিদদের তালিকা যাচাইয়ে কমিটি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১:১৩ পিএম
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহিদ ও আহতদের তালিকা যাচাই-বাছাই করতে মাঠ প্রশাসনকে নির্দেশনা দিয়েছে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়।
একই সঙ্গে মাঠপর্যায়ে সরেজমিন শহিদদের তালিকা যাচাই-বাছাইয়ে ৮ সদস্যের একটি কমিটিও করে দেওয়া হয়েছে, যেখানে সভাপতি করা হয়েছে জেলা প্রশাসককে এবং সদস্য-সচিব করা হয়েছে জেলা সিভিল সার্জনকে। শুক্রবার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের (সরকারি স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা-১) উপসচিব উম্মে হাবিবা স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়েছে, বিভিন্ন স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে দেশের বিভিন্ন স্থানে শহিদ ও আহতদের একটি খসড়া তালিকা স্বাস্থ্য অধিদপ্তর কর্তৃক প্রণয়ন করা হয়েছে। তবে বর্ণিত এই তালিকাটি পূর্ণাঙ্গ করতে সরেজমিন মাঠ পর্যায়ে যাচাই করা বিশেষ প্রয়োজন। এ অবস্থায় মাঠপর্যায় থেকে তালিকা সরেজমিন যাচাই-বাছাই করতে নিম্নরূপ কমিটি গঠন করা যেতে পারে।
চিঠিতে আরও উল্লেখ করা হয়, কমিটিতে জেলা প্রশাসককে সভাপতি করা হয়েছে। এছাড়া আটজনকে সদস্য করা হয়েছে। এরা হলেন-জেলা পুলিশ সুপার, মেডিকেল কলেজ/জেলা সদর হাসপাতালের পরিচালক/তত্ত্বাবধায়ক, উপজেলা নির্বাহী অফিসার (সংশ্লিষ্ট উপজেলা), সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপপরিচালক, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র সমন্বয়ক (দুজন), উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা, জেলা সিভিল সার্জন।
কমিটির কার্যপরিধি সম্পর্কে বলা হয়, প্রতিটি জেলার শহিদ ও আহতদের তালিকা সরেজমিন যাচাই-বাছাইকরণ; প্রেরিত তালিকায় কোনো তথ্য অসামঞ্জস্যপূর্ণ বা অসম্পূর্ণ থাকলে তা নির্ভুল ও সম্পূর্ণকরণ; ভুল তথ্য পাওয়া গেলে তা বাতিল করার সুপারিশকরণ; তালিকাবহির্ভূত কোনো শহিদ এবং তার পক্ষে সঠিক তথ্য পাওয়া গেলে তা বিদ্যমান তালিকায় অন্তর্ভুক্তকরণে ব্যবস্থা গ্রহণ। আগামী ১৪ অক্টোবরের মধ্যে প্রেরিত তালিকা সঠিকভাবে যাচাই-বাছাই করে পূর্ণাঙ্গ নিভুল তালিকা স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ বরাবর প্রেরণ করতে হবে।
এ কার্যক্রমে ফোকাল পার্সন হিসাবে (১) উম্মে হাবিবা, উপসচিব, সরকারি স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা-১ শাখা, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ এবং মো. নিকারুজ্জামান, সিনিয়র সহকারী সচিব, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করবেন। তালিকায় শুধু গণঅভ্যুত্থানের পক্ষে শহিদ ও আহতদের নাম অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
চিঠিতে আরও বলা হয়, প্রস্তাবিত জেলা পর্যায়ের যাচাই-বাছাই কমিটি চূড়ান্তকরণসহ নির্ভুল তালিকা প্রণয়নে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের মাধ্যমে মাঠ প্রশাসনকে প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা প্রদানের জন্য অনুরোধ করা হলো।
এর আগে বুধবার স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এমএ আকমল হোসেন আজাদ জানিয়েছিলেন, সাম্প্রতিক ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ৭০০ জনেরও বেশি নিহত এবং ১৯ হাজার জন আহত হয়েছেন। এই তালিকা চলমান রয়েছে। দেশের বিভিন্ন স্থানে আহত ব্যক্তিদের চিকিৎসা ও শহিদ পরিবারকে সহায়তা প্রদানে একটি নীতিমালা প্রণয়ন করা হচ্ছে। শহিদ ও আহত ব্যক্তিদের পরিচিতিসহ একটি পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রণয়নের কাজ চলছে। এ লক্ষ্যে একজন সাবেক স্বাস্থ্য সচিবের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই কমিটি একটি খসড়া নীতিমালা এবং আহত-নিহতদের প্রাথমিক একটা তালিকা মন্ত্রণালয়ে দাখিল করেছে।