ছাত্র আন্দোলনে মিরপুরে গুলিবিদ্ধ পারভেজের মৃত্যু
লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:৩৮ এএম
রাজধানীর মিরপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত পারভেজ হোসেন (২২) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। হাসপাতালের বিছানায় ১ মাস ৮ দিন ছিলেন। অবশেষে না ফেরার দেশে পাড়ি জমিয়েছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে নিহত পারভেজের চাচা মহিন উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এর আগে সকাল ৮টার দিকে রাজধানীর ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরো সায়েন্সেস হাসপাতালের ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় পারভেজ শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
নিহত পারভেজ লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ধন্যপুর গ্রামের মিন্নত আলী হাজী বাড়ির মো. নবী উল্যা ও ফাতেমা বেগম দম্পত্তির বড় ছেলে। তিনি ঢাকা মিরপুর ১০ নাম্বার সেনপাড়া থাই গ্লাসের কাজ করতেন।
পারিবারিক সূত্র জানায়, ৪ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় মিরপুর ১০ নাম্বার আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে পারভেজের মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। ওইদিন রাতেই ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরো সায়েন্সেস হাসপাতালের তার মাথায় অস্ত্রোপচার (অপারেশন) করা হয়। হাসপাতালেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। ১ মাস ৮ দিন পারভেজ মৃত্যু হয়।
নিহত পারভেজের চাচা মহিন উদ্দিন বলেন, পারভেজ কর্মঠ ছিল। তিন ভাই ও দুই বোনের মধ্যে পারভেজ বড় ছিল। তার বাবা মানসিক রোগী৷ এজন্য চতুর্থ শ্রেণিতেই তার পড়ালেখা থেমে হয়ে যায়। এরপর এলাকায় বিভিন্ন কাজকর্ম করে পরিবারের হাল ধরে। ৭ বছর ধরে মিরপুরে গিয়ে তিনি থাই গ্লাসের দোকানে কাজ করতেন। তার উপার্জনের টাকায় তাদের সংসার চলত। পারভেজের মৃত্যুতে নিঃস্ব হয়ে পড়েছে পরিবারটি।
মহিন উদ্দিন আরও বলেন, পারভেজের লাশ পুলিশ আমাদের কাছে হস্তান্তর করেছে। তার লাশ গ্রামের বাড়ি লক্ষ্মীপুরে নিয়ে যাচ্ছি। শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে চন্দ্রগঞ্জের কামারহাট ঈদগাহ ময়দানে তার জানাযা অনুষ্ঠিত হবে। পরে তার লাশ পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে।
কাফরুল থানার ওসি কাজী গোলাম মোস্তফা বলেন, পারভেজের মাথার বাম পাশে গুলি লেগেছিল। চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা গেছেন। শহীদ সোহরাওয়র্দী মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালে লাশের ময়নাতদন্ত করা হয়। পারভেজের লাশটি পরিবারের সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। তবে তার মৃত্যুর ঘটনায় থানায় কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।