তিন মাসের শিশু সন্তানকে আছাড়ে হত্যার পরও দায়মুক্ত বাবা
নাটোর প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:২৮ পিএম
নাটোরে মুরসালিন নামে ৩ মাস বয়সের এক শিশু সন্তানকে আছাড় দিয়ে হত্যার পরও দায়মুক্ত হয়েছেন পাষণ্ড বাবা ইয়াসিন আলী। ইয়াসিন আলীকে তার বাড়ি থেকে আটক করার পরও শিশুর মাসহ পরিবারের সদস্যরা এটি হত্যা নয় বলায় পুলিশ তাকে ছেড়ে দিয়েছে।
বৃহস্পতিবার নাটোর সদর উপজেলার কাফুরিয়া ইউনিয়নের নারায়ণপাড়া গ্রামে গিয়ে জানা যায়, শিশুটির মা রুপা বেগম বুধবার দুপুরে রান্না ঘরে তাকে রেখে পাশের বাড়িতে খাবার পানি আনতে যান। এ সময় শিশু বাচ্চাটি কান্না শুরু করলে রেগে গিয়ে তার বাবা ইয়াছিন আলী বাচ্চাটিকে ইটের দেয়ালে ছুড়ে মারে। পানি নিয়ে এসে তার মা রুপা বেগম দেখেন তার সন্তান অচেতন এবং মাথা ও নাক-মুখে আঘাতের একাধিক চিহ্ন। দ্রুত শিশুটির মাথায় পানি দিয়ে স্থানীয়রা রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
নিহত শিশুর বড় চাচা খলিলুর রহমান বলেন, রাস্তায় ছোট ভাইয়ের বৌয়ের সঙ্গে দেখা। কান্নাকাটি করে বলছে ভাই আমার ছাওয়ালেক বাঁচান। আমার ছাওয়ালেক মাইরে ফেলছে। তারপর হাসপাতালে আনলে ডাক্তাররা বলেন মারা গেছে।
শিশুটির নানি শাহনাজ বেগম বলেন, জামাই ইয়াছিন আলী নিয়মিতই তার মেয়েকে মারপিট নির্যাতন করে। তাদের সংসারে আরও একটি বড় মেয়ে থাকায় সংসার রক্ষার জন্য তার মেয়ে রুপা খাতুন স্বামীর নামে থানায় তিন মাসের শিশুকে হত্যার অভিযোগে মামলা করেনি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কাপুরিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ জানান, স্থানীয় মহিলা ইউপি সদস্যের মাধ্যমে খবর পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে গেলে ইয়াসিন আলী শিশু সন্তানকে হত্যার কথা প্রথমে অস্বীকার করলেও একপর্যায়ে স্বীকার করেন। এ সময় উপস্থিত জনতা তার উপর চড়াও হলে নিরাপত্তার জন্য ইয়াসিন আলীকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মাহমুদা শারমিন নেলী বলেন, এমন একটি ঘটনা জানতে পেরেছি। পুলিশ শিশুটির বাবাকে আটক করেছে। শিশুটির ময়নাতদন্ত হবে। এরপর তদন্ত করে প্রকৃতপক্ষে কী ঘটেছিল তা জানা যাবে।
এদিকে বুধবার রাতে রুপা বেগম থানায় এসে পুলিশকে জানান অনিচ্ছাকৃত তার স্বামীর হাত থেকে বাচ্চাটি পড়ে যায়। তার আবেদনে পুলিশ ইয়াছিন আলীকে ছেড়ে দেয়।
এ ব্যাপারে নাটোর থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে বলে ওসি মিজানুর রহমান নিশ্চিত করেছেন।