বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক আব্দুল কাদের বলেছেন, ছাত্র-জনতার ঐক্যবদ্ধ ভূমিকার কারণে গত ১৭ বছরের নিপীড়িত শাসন ব্যবস্থাকে বিতাড়িত করতে পেরেছি। এ আন্দোলন শুধুমাত্র ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে নয়, বরং রাষ্ট্রের অপব্যবস্থার বিরুদ্ধেও ছিল। 

বুধবার বিকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের জাতীয় বীর আব্দুল কুদ্দস মাখন পৌর মুক্তমঞ্চে শহিদ পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ এবং দুর্নীতি, চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ছাত্র-নাগরিক মতবিনিময় সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। 

তিনি আরও বলেন, আন্দোলনের মাধ্যমে শেখ হাসিনাকে হঠানো গেলেও তাদের সাঙ্গপাঙ্গরা এখনো নানা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। আন্দোলনের গতিকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে পাঁয়তারা করে বেড়াচ্ছে। তারা কখনো আনসার বা ভিন্ন রুপে ফিরে আসে। তাই আমরা লংকার সিস্টেমকে বদলাতে চাই যাতে কেউ লংকায় গিয়ে রাবণ হতে না পারে। সংখ্যালঘুদের দুর্গাপূজাকে ঘিরে একটি মহল ছাত্র সমাজকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে চেষ্টা করবে। 

তাই দুর্গাপূজাকে নির্বিঘ্ন ও সফল করতে ছাত্র-জনতাসহ সকলকে পাশে থাকতে আহ্বান জানান তিনি। 

কাদের আরও বলেন, যারা ছাত্রদের বুকে গুলি চালিয়ে রক্ত ঝড়িয়েছে তাদের অচিরেই বিচারের আওতায় আনা হবে। আন্দোলনে নিহত ও আহতদের কল্যাণে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুসের সঙ্গে কথা হয়েছে। ফাউন্ডেশন গঠনের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। ফাউন্ডেশন গঠনের পর প্রত্যেক নিহত ও আহতদের পরিবারকে আর্থিক সহযোগিতা ও একজন করে সরকারি চাকারির নিশ্চয়তা দেওয়া হবে। 

সীমান্ত হত্যার কথা উল্লেখ করে বলেন, প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক হবে, কোনো নতজানু সম্পর্ক হবে না। সেই সম্পর্ক হবে ন্যায্য ও সমমর্যাদার। 

অপর কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক জিয়া উদ্দিন আয়ান তার বক্তব্যে বলেন, এটা ছাত্রদের প্রতিনিধির সরকার। আস্থা রাখতে হবে এ সরকারের প্রতি। আগে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এর আগে কেউ ক্ষমতায় আসতে পারবে না। শেখ হাসিনা যে গর্তেই লুকিয়ে থাকুক না কেন, তাকে বের করে এনে ফাঁসি দিতে হবে। এজন্য সরকারকে চাপ দিতে হবে। যে সরকারই ক্ষমতায় আসুক তাদের চাপে রাখতে হবে। প্রয়োজনে আবার আন্দোলনে নামতে হবে। 

সভায় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক হামযা মাহবুবে সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন সহসমন্বয়ক আতিক মুন্সী, খালিদ হাসান, মো. মহিউদ্দিন, সমন্বয়ক জিয়া উদ্দিন আয়ান, আলী আহমেদ আরাফ ও মো. ইব্রাহিম। 

সভায় উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন শহিদ পরিবারের সদস্যদের মধ্যে সাইদুর রহমান, শাহজাহান মোল্লা, ইসরাত জাহান প্রমুখ।