স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাকে হত্যায় এমপি জাহেরের বিরুদ্ধে মামলা
ব্রাহ্মণপাড়া (কুমিল্লা) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬:০৫ পিএম
জাকির হোসেন
কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার নিমসার এলাকায় রাজনৈতিক কর্মসূচি পালনকালে ২০২৩ সালে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের হামলায় নিহত হন স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা জাকির হোসেন।
সোমবার দুপুরে কুমিল্লার ২নং আমলি আদালতে কুমিল্লা-৫ (বুড়িচং-ব্রাহ্মণপাড়া) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এমএ জাহেরসহ স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের ১১১ জন নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে সেই হত্যা মামলা রুজু করা হয়েছে।
মামলার বিবরণ সূত্রে জানা যায়, জেলার বুড়িচং উপজেলার মোকাম ইউনিয়নের নিমসার এলাকায় নিমসার-বরুড়া সড়কের প্রবেশ পথে ২০২৩ সালের ৩০ অক্টোবর রাজনৈতিক কর্মসূচি পালনকালে সন্ধ্যা আনুমানিক ৬টায় সাবেক এমপি এমএ জাহের, ময়নামতি ইউপি চেয়ারম্যান লালন হায়দার, ভারেল্লা দক্ষিণ ইউপি চেয়ারম্যান মো. ওমর ফারুক, মিজানুর রহমান খান, সাবেক জেলা পরিষদ সদস্য তারেক হায়দারের নির্দেশে অন্য আসামিরা বিএনপির উপস্থিত নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালায়।
অন্য নেতাকর্মীরা পালিয়ে প্রাণ বাঁচাতে পারলেও আসামিরা বুড়িচং মোকাম ইউনিয়নের বিএনপির অঙ্গসংগঠন স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি জাকির হোসেনকে ধাওয়া করে ধরে ফেলে। এ সময় ৬নং আসামি বুড়িচং উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক বাছির খান তাকে লোহার রড দিয়ে, ৭নং আসামি ছাত্রলীগ নেতা শাহাবুদ্দিন সোহাগ, ৮নং আসামি করিম খান রিপন, ৯নং আসামি মো. অরুপ পাইপ দিয়ে পিটিয়ে জখম করে।
সন্ত্রাসীদের হামলায় জাকির মাটিতে লুটিয়ে পড়লে ১১নং আসামি ষোলনল ইউপি চেয়ারম্যান বিল্লাল হোসেন শর্টগান দিয়ে শরীরে একাধিকবার আঘাত করে মৃত্যু নিশ্চিত করে। একই সময়ে অন্য আসামিরা লোহার রড, পাইপসহ অন্যান্য দেশীয় অস্ত্র দিয়ে তাকে আঘাত করে। এরপর নিহতের লাশ ফেলে চলে গেলে স্থানীয়দের সহযোগিতায় মামলার বাদী বুড়িচং থানাকে বিষয়টি জানালে তারা সহযোগিতা করতে অস্বীকৃতি জানায়।
এরপর প্রথমে স্থানীয় ইষ্টার্ন মেডিকেল ও পরে বুড়িচং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স- সর্বশেষ কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পোষ্টমর্টেমের জন্য নিয়ে গেলেও কারো কাছ থেকে কোনো সহযোগিতা পাওয়া যায়নি। পরবর্তীতে রাজনৈতিক প্রভাবসহ প্রাণনাশের হুমকিতে মামলা করাও সম্ভব হয়নি।
গত ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে স্বৈরাচার শেখ হাসিনার পতনের পর অনুকূল অবস্থার কারণে সোমবার কুমিল্লার ২নং বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে বুড়িচং উপজেলা সদরের বুড়িচং দক্ষিণ গ্রামের মো. হানিফের ছেলে মো. মাহফুজ বাদী হয়ে এমপিসহ ১১১ জন নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাতনামা ৩০-৪০ জনের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করেন।