এবার বিএনপির সঙ্গে আ.লীগের লোকজনের কথা বললেন হিরো আলম
বগুড়া ব্যুরো
প্রকাশ: ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১:০০ পিএম
বগুড়ায় সাবেক সরকারের নেতাদের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করতে এসে মারপিট ও কান ধরে ওঠবস করানোর সঙ্গে জড়িতদের নিয়ে উল্টো কথা বলছেন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আলোচিত ইউটিউবার আশরাফুল হোসেন আলম ওরফে হিরো আলম। তিনি এখন বলছেন, তাকে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির লোকজন মেরেছে।
সোমবার বিকালে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতাল চত্বরে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে দাবি করেন।
হিরো আলম বলেন, আমি স্বৈরাচারদের বিরুদ্ধে কোর্টে মামলা করতে এসেছিলাম। কোনো বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে নয়। যারা আমার ওপর হামলা করেছে, তাদের মধ্যে নুরুন্নবী, নাজমুল হুদা ও অন্যদের পরিচয় বের করেছি। কারা আওয়ামী লীগ করে আর কারা বিএনপি করে তা চিহ্নিত করেছি। এ হামলা আওয়ামী লীগের সাজানো নাটক হলে বিএনপিকেই হামলাকারীদের খুঁজে বের করা উচিত। গ্রেফতার হলেই হামলাকারীরা চিহ্নিত হবে। আমি সব সময় অন্যায়ের প্রতিবাদ করেছি। সে আওয়ামী লীগ হোক কিংবা বিএনপি হোক। অথচ বিএনপি থেকে গুজব ছড়ানো হচ্ছে, হিরো আলম ভাইরাল হওয়ার জন্য ইচ্ছা করে মার খায় কিন্তু হিরো আলম রাজনীতি করে নয়; নাটক, গান ও অভিনয়ের মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
তিনি দৃঢ়তার সঙ্গে দাবি করেন, বিএনপির তারেক জিয়াকে নিয়ে কোনো দিন কটূক্তি করেননি। বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর বিরুদ্ধে মামলা করেছেন, ডিবি হারুন অর রশিদের ট্র্যাপে পড়ে। বিএনপির বিরুদ্ধে কটূক্তির কোনো ফুটেজ কেউ দেখাতে পারলে গলায় জুতার মালা পড়ে শহর ঘুরব।
আলোচিত ইউটিউবার হিরো আলম বলেন, তিনি অন্যায়ের প্রতিবাদ করেন, কোনো দল করেন না, কাউকে নিয়ে চলেন না, একই লড়াই করেন। আর এটাই তার অপরাধ। প্রয়োজনে মৃত্যুবরণ করবো তাও অন্যায়ের প্রতিবাদ করে যাব।
তিনি বলেন, হামলাকারী বিএনপি ও আওয়ামী লীগের লোকজনের বিরুদ্ধে মামলা করব। গ্রেফতার হলেই তাদের প্রকৃত রাজনৈতিক পরিচয় পাওয়া যাবে।
একটি রাজনৈতিক দলে যোগদান প্রসঙ্গে হিরো আলম বলেন, বঙ্গবন্ধু বড়মাপের মানুষ; তার মাজার জিয়ারত করতেই টুঙ্গিপাড়া গিয়েছিলেন; কোনো রাজনৈতিক দলের হয়ে নয়।
তাকে হামলা প্রসঙ্গে বগুড়া জেলা বিএনপির সংবাদ সম্মেলন নিয়ে হিরো আলম বলেন, তাদের সংবাদ সম্মেলনে আমি বক্তব্য শুনেছি। তাদের একটা কথা বলতে চাই- আপনাদের শ্রদ্ধা করি ও বিএনপিকে ভালোবাসি। আমি যদি কোনো অন্যায় করে থাকি তাহলে বিএনপির কাছে ক্ষমা চাইব।
হিরো আলম বগুড়ার দুটি আসনে নির্বাচন, তার ওপর হামলা ও ফলাফলে পরাজিত করার জন্য তিনি রোববার দুপুরে বগুড়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ওবায়দুল কাদের, সাবেক সিইসিসহ ৩৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। আদালত তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করতে পিপিআইকে নির্দেশ দেন। তিনি নিচে নামার পর তারেক রহমানকে কটূক্তি ও রিজভীর বিরুদ্ধে মামলার কথা বলে কয়েকজন ব্যক্তি তাকে মারপিট এবং কানধরে ওঠবস করায়। হিরো আলম এ জন্য বিএনপির নেতাকর্মীদের দায়ী করে সাংবাদিকদের কাছে ব্রিফ করেন। পরে তাকে বগুড়া শজিমেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এ বিষয়ে জেলা বিএনপি কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। জেলা বিএনপির সভাপতি রেজাউল করিম বাদশা বলেন, হিরো আলম না জেনেই বিএনপির লোকজনকে দোষারোপ করেছেন। আমাদের দলের সম্মানহানি করার চেষ্টা করেছেন। তিনি যদি প্রমাণ করতে পারেন এ হামলার পেছনে বিএনপির কোনো নেতাকর্মী জড়িত তাহলে আমরা তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ও সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেব; কিন্তু হিরো আলম যদি প্রমাণ করতে না পারেন তাহলে বিএনপির কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা করতে হবে। আর সেটা না করলে তার বিরুদ্ধেও আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।