বগুড়ার আদমদীঘিতে পালিয়ে আসা প্রেমিকাকে অভিভাবকরা ফিরে নিয়ে যাওয়ায় অভিমানে চলন্ত বাসের নিচে ঝাঁপ দিয়ে নাহিদ হোসেন (২০) নামে এক দিনমজুর আত্মাহুতি দিয়েছেন।
সোমবার সকালে উপজেলার শিবপুর এলাকায় বগুড়া-নওগাঁ সড়কে এ ঘটনা ঘটে।
আদমদীঘি থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) একেএম মঈন উদ্দিন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, মরদেহ মর্গে পাঠানো হয়েছে। বিকাল পর্যন্ত মামলা হয়নি।
পুলিশ, স্বজন ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আত্মাহুতি দেওয়া দিনমজুর নাহিদ হোসেন বগুড়ার দুপচাঁচিয়া উপজেলার কুড়াহাল গ্রামের প্রবাসী হাবিল মণ্ডলের ছেলে। মোবাইল ফোনে নাহিদ হোসেনের সঙ্গে মুন্সীগঞ্জের রাইসা নামে এক তরুণীর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। প্রেমের টানে রাইসা গত ৮ সেপ্টেম্বর প্রেমিক নাহিদের বাড়িতে চলে আসেন। এরপর নাহিদ প্রেমিকাকে নিয়ে নওগাঁর দুবলাহাটি গ্রামে নানার বাড়িতে গিয়ে আত্মগোপন করেন।
এদিকে প্রেমিকা রাইসার স্বজনরা টের পেয়ে ওই রাতেই মাইক্রোবাস নিয়ে নাহিদের বাড়িতে আসেন। সেখানে মেয়েকে না পেয়ে তারা নওগাঁর দুবলাহাটি গ্রামের নাহিদের নানার বাড়িতে যান। মেয়েকে উদ্ধারের পর স্বজনরা দুজনকে বিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দেন। এরপর সোমবার সকালে মাইক্রোবাসে নাহিদকে নিয়ে মুন্সীগঞ্জের দিকে রওনা দেন।
পথিমধ্যে সকাল সাড়ে ৭টার দিকে বগুড়ার আদমদীঘি ফায়ার স্টেশনের কাছে শিবপুর এলাকায় পৌঁছলে তারা কৌশলে নাহিদকে নামিয়ে দিয়ে মাইক্রোবাস নিয়ে চলে যান। প্রেমিকাকে হারিয়ে নাহিদ মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন। তিনি অভিমানে চলন্ত বাসের নিচে ঝাঁপ দেন। এতে ঘটনাস্থলেই নাহিদের মৃত্যু হয়। খবর পেয়ে আদমদীঘি থানা পুলিশ লাশ উদ্ধার করে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।
নাহিদ হোসেনের মা নাসিমা বেগম জানান, ওই মেয়ের স্বজনরা প্রেমের সম্পর্ক মেনে নেওয়ার আশ্বাস দেন। তারা ফিরে যাওয়ার পথে কৌশলে নাহিদকে গাড়ি থেকে নামিয়ে দিয়ে চলে যায়। এতে অভিমানে তার ছেলে নাহিদ বাসের নিচে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন।
তিনি আরও জানান, মুন্সীগঞ্জের কোথায় মেয়ের বাড়ি সে সম্পর্কে তাদের কিছু জানা নেই।
আদমদীঘি থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) একেএম মঈন উদ্দিন জানান, আত্মহত্যার বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে। পরিবার থেকে মামলা দিলে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।