আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের বাড়ির কেয়ারটেকার কুমিল্লায় আটক
ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:২৩ পিএম
আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক আইনমন্ত্রী ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ (কসবা-আখাউড়া) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আনিসুল হকের বাড়ির কেয়ারটেকার কসবার কথিত দ্বিতীয় মন্ত্রী ইদ্রিস মিয়া (৬৫) কুমিল্লায় গ্রেফতার হয়েছেন।
শুক্রবার রাতে কুমিল্লা নগরীর এক নম্বর ওয়ার্ড এলাকায় তাকে জনতা আটক করে স্থানীয় কাউন্সিলর কাজী গোলাম কিবরিয়ার জিম্মায় দেন। পরে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।
গ্রেফতার ইদ্রিস মিয়ার বিরুদ্ধে আইন মন্ত্রণালয়ে চাকরি দেওয়ার নাম করে টাকা আত্মসাৎ, জমি দখলসহ বিভিন্ন প্রতারণার অভিযোগে চারটি লিখিত এজাহার কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানায় দাখিল করেন ভুক্তভোগীরা।
এর মধ্যে বিষ্ণপুর (মুন্সেফ কোয়ার্টার) এলাকার চাঁন মিয়ার ছেলে আব্দুল মান্নানের দায়ের করা অভিযোগটি নিয়মিত মামলা হিসেবে এজাহারভুক্ত করে ওই মামলায় শনিবার দুপুরে তাকে আদালতে প্রেরণ করে কোতোয়ালি থানা পুলিশ। তিনি বর্তমানে কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারে রয়েছেন।
মামলার আরেক আসামি হলেন কসবা উপজেলার পানিয়ারুপ গ্রামের হাচুঁ ভূইয়ার ছেলে শফিকুল ইসলাম সোহাগ, তিনি সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের ব্যক্তিগত সহকারী (পিএ) ছিলেন। অন্য আসামিরা হলেন- কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগ নেতা শাহীনুল ইসলাম শাহীন, কৃষক লীগ নেতা রফিকুল ইসলাম রমজান ও রঞ্জন সেন।
পুলিশ সুত্রে জানা গেছে, গত আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক গ্রামের বাড়ি ভাংচুর লুটপাট ও পুড়িয়ে ফেলার পর ইদ্রিস মিয়া কুমিল্লায় আত্মগোপনে চলে যান। সেখান থেকে গত শুক্রবার রাতে স্থানীয় জনতা তাকে আটক করে কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর কাজী গোলাম কিবরিয়ার জিম্মায় দেন। পরে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ইদ্রিস মিয়া সাবেক আইনমন্ত্রীর বাবা সাবেক সংসদ সদস্য সিরাজুল হকের গ্রামের বাড়ির বেতনভুক্ত কেয়ারটেকার ছিলেন। আনিসুল হক স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক আইনমন্ত্রীর দায়িত্ব পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মহাক্ষমতাধর বনে যান কেয়ারটেকার ইদ্রিস মিয়া। মন্ত্রী ইদ্রিস মিয়াকে তার ছোট ভাই পরিচয় দিতেন। ডিসি-এসপিকে ইদ্রিসের কথায় চলতে হয়েছে। কসবা থানায় দায়ের হওয়া মামলা ইদ্রিসের কথায় রেকর্ড হতো বা ঝুলে থাকত। ইদ্রিসের সুনজর ছাড়া কেউ ন্যায়বিচার পেতো না। পুরো এলাকায় ইদ্রিস নিজস্ব বলয় এবং বাহিনী তৈরি করেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানার উপ-পরিদর্শক জহিরুল ইসলাম জানান, গ্রেফতার ইদ্রিস মিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগের শেষ নেই। তিনি কুমিল্লা নগরীর মুন্সেফ কোয়ার্টার এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে আত্মগোপনে থাকেন।
তিনি বাদী আব্দুল মান্নানের কাছ থেকে ৬ লাখ টাকা নিয়ে চাকরি দেননি টাকাও ফেরত দেননি। ভুক্তভোগীরা খবর পেয়ে শুক্রবার রাতে তাকে আটক করে টাকা আদায়ের চেষ্টা করেন, পরবর্তীতে ওয়ার্ড কাউন্সিলর কাজী গোলাম কিবরিয়ার কাছে হস্তান্তর করেন। আমরা কাউন্সিলরের জিম্মা থেকে তাকে উদ্ধার করেছি। তার বিরুদ্ধে আরও কয়েকটি লিখিত অভিযোগ থানায় দায়ের হয়েছে। শনিবার দুপুরে কুমিল্লার আমলি আদালাতে প্রেরণ করলে আসামি ইদ্রিস মিয়াকে কারাগারে প্রেরণ করেন।