Logo
Logo
×

সারাদেশ

থানায় হামলা করে গুলি অস্ত্র লুট করায় আ.লীগ নেতাদের বিরুদ্ধে মামলা

Icon

রাজশাহী ব্যুরো

প্রকাশ: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৪:২৯ পিএম

থানায় হামলা করে গুলি অস্ত্র লুট করায় আ.লীগ নেতাদের বিরুদ্ধে মামলা

রাজশাহীর গোদাগাড়ী থানায় হামলা করে গুলি অস্ত্র লুট করার অভিযোগে গোদাগাড়ী পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকসহ প্রায় ৭০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।

আসামিদের আইনজীবীদের সূত্রে জানা যায় মামলার অন্য আসামিরাও আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী। গোদাগাড়ী থানার মামলা নং-৩ তাং-৩/৯/২০২৪।  

মামলার বিবরণে জানা গেছে, গত ৫ আগষ্ট আনুমানিক সকাল ১০টার দিকে নাসিমসহ ৪০ জন এবং অজ্ঞাত ৬০০ থেকে ৭০০ জন লোক দেশিয় অস্ত্রে সজ্জ্বিত হয়ে গোদাগাড়ী থানার প্রধান ফটকের সামনে হাজির হয়। আসামিরা থানা ভবনের প্রধান ফটক ভেঙ্গে ভেতরে প্রবেশ করে এবং পুলিশের তিনটি গাড়িসহ ৫/৬ টি গাড়ি ভাঙচুর করে। আসামিরা থানার মুল ভবনে প্রবেশ করে অস্ত্রাগার ভেঙ্গে ফেলে এবং অস্ত্র ও গুলি লুট করে।

প্রাণের ভয়ে থানা পুলিশের কর্মকর্তারা ভবনের ছাদের ওপর আশ্রয় নেন এবং রক্ষা পান। আসামিরা কিছু সময় তাণ্ডব চালিয়ে থানা ভবন ত্যাগ করে। এজাহারে বর্ণিত অভিযোগ অনুযায়ী গোদাগাড়ী থানা ভবনে হামলার নেতৃত্ব দেন রাজশাহী-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ওমর ফারুক চৌধুরী। 

নথিপত্র বিশ্লেষণে দেখা গেছে, গত ৫ আগষ্টের ঘটনায় বাদি হয়ে মামলাটি দায়ের করেন গোদাগাড়ী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. রেজাউল করিম। মামলাটি তদন্ত করছেন থানার আরেক উপ-পরিদর্শক (এসআই) আনোয়ার। আলোচিত মামলাটিতে ৬ নং আসামি করা হয়েছে গোদাগাড়ী পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. নাসিমকে। এজাহারের বিবরণ অনুযায়ী নামীয় আসামিরাসহ অজ্ঞাতরা জোটবদ্ধভাবে উপস্থিত থেকে ঘটনার দিন গোদাগাড়ী থানা ভবনে হামলা ভাঙচুর ও লুটপাট চালিয়েছেন।

গত ২ সেপ্টেম্বর রাতে আওয়ামী লীগ নেতা মো. নাসিমকে পৌর এলাকার হাটপাড়া ভগবন্তপুরের বাসা থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ইতিমধ্যে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গ্রেফতার আসামিদের রিমান্ডের আবেদন জানিয়েছেন আদালতে।  

অন্যদিকে আওয়ামী নেতা মো. নাসিমের আইনজীবী সালাহ উদ্দিন বিশ্বাস জানান, থানায় হামলা ভাঙচুর মামলার ৬ নং আসামি মো. নাসিম গত ৩ আগষ্ট চাঁপাইনবাবগঞ্জের সোনামসজিদ ইমিগ্রেশান পথে চিকিৎসার জন্য ভারতে গমন করেন। চিকিৎসা শেষে তিনি গত ১৩ আগষ্ট একই পথে বাংলাদেশে ফিরে আসেন। এই সময়ে তিনি ভারতে চিকিৎসা নিয়েছেন সে সংক্রান্ত  হাসপাতাল ও চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র রয়েছে। আমরা বিজ্ঞ আদালতকে জানিয়েছি  আসামি মো. নাসিম ঘটনার দিন ৫ আগষ্ট ঘটনাস্থল তো দুরের কথা বাংলাদেশেই ছিলেন না। 

এই আইনজীবীর আরও দাবি গত ৪ সেপ্টেম্বর আমরা আদালতে মো. নাসিমের ভারতে গমনাগমন ও চিকিৎসা সংক্রান্ত নথিপত্র জমা দিয়েছি। শুনানি শেষে রাজশাহীর সিনিয়র জুডিসিয়াল দ্বিতীয় আদালতের বিচারক মো. লিটন হোসেন মামলার বাদীকে আদালতে উপস্থিত হতে নির্দেশ দিয়েছেন। রোববার এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানাবেন আদালত। 

এদিকে গোদাগাড়ী থানায় হামলা ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগে দায়ের হওয়া মামলায় আসামি করা হয়েছে বাঘার আড়ানী পৌর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি শহীদুজ্জামান শাহিদ, সহ-সভাপতি সাইদুল ইসলাম, বাগমারার ভবানীগঞ্জ পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল মালেক মন্ডলসহ আরও কয়েকজনকে। এসব আওয়ামী লীগ নেতাকে গত ২ সেপ্টেম্বর রাতে নিজ নিজ এলাকা থেকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। এসব আসামির আইনজীবীরাও বিষয়টি আদালতের নজরে এনেছেন বলে জানা গেছে।  

ঘটনার দিনে ও সময় ভারতে অবস্থান করা ব্যক্তি কীভাবে থানা ভাঙচুরে অংশ নিয়েছেন জানতে চাইলে মামলার বাদি গোদাগাড়ী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. রেজাউল করিম বলেন,  ঘটনার সময় অনেক লোক ছিল। আমরা বিভিন্ন সূত্রে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে আসামিদের নাম পেয়েছি। এতে ভুল-ক্রটি হতে পারে। তবে তদন্ত কর্মকর্তা তদন্তের মাধ্যমে যারা প্রকৃত জড়িত তাদের বিরুদ্ধে চার্জশীট দেবেন। তিনি জানান, আদালত আমাকে ডেকেছেন। আমি আদালতকে এসব কথাই বলব।         

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম