Logo
Logo
×

সারাদেশ

আন্দোলনে চোখে গুলিবিদ্ধ: অর্থাভাবে বন্ধ তাইজুলের চিকিৎসা 

Icon

বরিশাল ব্যুরো 

প্রকাশ: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৪:০২ পিএম

আন্দোলনে চোখে গুলিবিদ্ধ: অর্থাভাবে বন্ধ তাইজুলের চিকিৎসা 

তাইজুল ইসলাম সাব্বির

দৃষ্টিশক্তি হারানোর শঙ্কায় আছেন বরিশালের চরামদ্দী খান ফজলে রব চৌধুরীর সিনিয়র আলিম মাদ্রাসার শিক্ষার্থী গুলিবিদ্ধ তাইজুল ইসলাম সাব্বির। বর্তমানে তিনি ঢাকার কয়েকটি হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে বাড়িতে অসহ্য যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শুরু থেকে তিনি বরিশালের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ছিলেন। যার ধারাবাহিকতায় প্রতিদিনের মতো ৪ আগস্টও নগরীর সিঅ্যান্ডবি রোড সরকারি সৈয়দ হাতেম আলী কলেজ চৌমাথা এলাকায় আন্দোলনের অগ্রভাগে ছিলেন। একপর্যায়ে ছাত্র-জনতার সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। এ সুযোগে দুর্বৃত্তরা আন্দোলনকারীদের ওপর গুলি চালায়। দুর্বৃত্তদের ছোড়া ২২টি গুলি তাইজুলের শরীরের বিভিন্ন স্থানে বিদ্ধ হয়। এর মধ্যে একটি গুলি তার বাম চোখের ভেতর বিদ্ধ হয়, যা এখনো বহন করে যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন তিনি।

তাইজুল পড়াশোনার পাশাপাশি বরিশাল রোলার স্কেটিং ক্লাবের পরিচালকের দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি বরিশাল জেলার বাকেরগঞ্জ উপজেলার চরামদ্দী ইউনিয়নের পশ্চিম চরামদ্দী গ্রামের লুৎফর রহমানের ছেলে। তার বাবা পেশায় মুদি দোকানি।

তাইজুল জানান, ঘটনার পরপরই তার সঙ্গে থাকা অন্য শিক্ষার্থীরা তাকে উদ্ধার করে বরিশাল শের-ই-বাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় (শেবাচিম) হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানে চোখের অবস্থা খারাপ দেখে চিকিৎসকরা শরীরের কোনো অংশের গুলি না উঠিয়ে ঢাকার জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে পাঠান। ৫ আগস্ট ভোরে জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে ভর্তি হন। এদিকে ওইদিনই সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেলে চিকিৎসাব্যবস্থার হযবরল অবস্থা হয়। কোনো চিকিৎসা ছাড়াই চোখে শুধু সেলাই করে ৬ আগস্ট সকালে ছাড়পত্র দিয়ে দেয়। সেখানে দায়িত্বরত চিকিৎসককে জিজ্ঞাসা করলে তারা জানায়, গুলিটি চোখের অনেক ভেতরে চলে গেছে, যা এখানে চিকিৎসা করা সম্ভব নয়। এজন্য দেশের বাইরে যেতে হবে।

তাইজুল আরও বলেন, পরিবারের সদস্যরা শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা করান। সেখানে ভালো কোনো চিকিৎসা না পেয়ে বাড়িতে চলে আসেন। কোনো চিকিৎসা না পেয়ে এখন চোখের অসহ্য যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন।

জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের চিকিৎসক প্রফেসর ডা. নিশাত পারভীন বলেন, তাইজুলের চোখের গুলিটা অনেক ভেতরে ঢুকে গেছে। এখন তাকে রক্ষা করতে হলে দ্রুত চিকিৎসার জন্য বিদেশ নিতে হবে। বিদেশে এ চিকিৎসার জন্য নিতে হলে ৮ থেকে ১০ লাখ টাকা প্রয়োজন। এদিকে এত খরচ বহন করা তার দরিদ্র পরিবারের পক্ষে সম্ভব নয় বলে জানান ভুক্তভোগী।

লুৎফর রহমানের আকুতি, অন্তর্বর্তী সরকার যেন তার সন্তানের চিকিৎসার ব্যয়ভার বহন করে সুস্থ তাইজুলকে তার পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেয়। সমাজের বিত্তবানদেরও তার সন্তানের পাশে দাঁড়ানোর অনুরোধ করেছেন তিনি।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম