সরকারের ঘোষিত সময় সীমার মধ্যে রংপুরে এ পর্যন্ত ৭৪টি আগ্নেয়াস্ত্রের মধ্যে ৫০টি আগ্নেয়াস্ত্র সংশ্লিষ্ট থানায় জমা দেওয়া হয়েছে। বাকি ২৪টি আগ্নেয়াস্ত্র স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বেঁধে দেওয়া সময়সীমার মধ্যে জমা প্রদান করা হয়নি বলে জানিয়েছেন রংপুর জেলা প্রশাসক দপ্তরের জুডিশিয়াল মুন্সিখানার একজন কর্মকর্তা।
২০০৯ সালের পরে যে সব আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স প্রদান করা হয়েছে মূলত সেব আগ্নেয়াস্ত্র জমা দিতে বলা হয়েছে। যারা এসব অস্ত্র জমা দিতে পারেননি তারা আওয়ামী লীগ এর নেতাকর্মী। তারা আত্মগোপনে থাকায় এই পরিস্থিতিতে নিরাপত্তহীতার কারণে সংশ্লিষ্ট থানায় আগ্নেয়াস্ত্র জমা দিতে পারেননি।
রংপুর জেলায় এ পর্যন্ত বৈধ ১৮৪টি অস্ত্রের মধ্যে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর ২০০৯ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত রংপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তি পর্যায়ে ৭৪ টি আগ্নেঅস্ত্রের লাইসেন্স প্রদান করা হয়েছে।
রংপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সিনিয়র সহকারী কমিশনার জিয়াউর রহমান জানান, রংপুরের বিভিন্ন ব্যাংক, অস্ত্রের দোকান, সামরিক, বেসামরিক ও ব্যক্তি পর্যায়ে ১৮৪টি আগ্নেঅস্ত্রের লাইসেন্স বিতরণ করা হয়েছে। এর মধ্যে ২০০৯ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের মাঝে ৭৪ অস্ত্রের লাইসেন্স বিতরণ করা হয়।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বেঁধে দেওয়া সময়সীমার শেষ দিন মঙ্গলবার পর্যন্ত ৭৪টি অস্ত্রের মধ্যে ৫০টি জমা দেওয়া হয়েছে। বাকি ২৪টি অস্ত্রের মধ্যে ১৮টি জমা দেওয়া হয়নি। ৪টি আগ্নেঅস্ত্রের লাইসেন্স গ্রহণ করা হলেও অস্ত্র ক্রয় করেনি লাইসেন্স গ্রহণ করা ব্যক্তি। বাকি ২ অস্ত্রের ঠিকানা পরিবর্তন হয়েছে।
তিনি জানান, রংপুর জেলায় ২০০৯ সালের আগে ১১০টি আগ্নেঅস্ত্রের লাইসেন্স বিতরণ করা হয়। অনেকে না বুঝে ২০০৯ সালের আগে ক্রয় করা অস্ত্রও জমা দিয়েছেন। এসব অস্ত্র জমা দিতে হবে না।
নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সব অস্ত্র জমা না দেওয়ায় বাকি অস্ত্রগুলো অবৈধ হিসেবে বিবেচিত হবে এবং তাদের বিরুদ্ধে যৌথ অভিযান চালানো হবে বলে জেলা প্রশাসকের দপ্তরের ওই কর্মকর্তা জানান।
তিনি আরও জানান, লাইসেন্স দেয়া এসব বৈধ অস্ত্রের মধ্যে রয়েছে শর্টগান, একনলা বন্দুক, পিস্তল ও রাইফেল।
সিনিয়র সহকারী কমিশনার জিয়াউর রহমান জানান, জমা দিতে জেলা ও উপজেলা পর্যায় পর্যন্ত অবগত করা হয়েছে। যাচাই-বাছাই করে দেখা হচ্ছে, কারা অস্ত্র জমা দিলেন কারা দিলেন না। এই লিস্টটা আমরা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠাবো। এই লিস্টের প্রেক্ষিতে অস্ত্র উদ্ধার আমাদের যৌথবাহিনী অভিযান পরিচালনা করবে।
রংপুর জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শরীফ উদ্দিন বলেন, ‘নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে অস্ত্র জমা না দেয়ায় সব অস্ত্রই অবৈধ হিসেবে গণ্য করা হবে। যৌথবাহিনী এই অভিযান পরিচালনা করবে এবং ওই অস্ত্রগুলো আমরা উদ্ধার করতে পারবো বলে আশাবাদী।
গত ২৫ আগস্ট স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি থেকে গত ৫ আগস্ট পর্যন্ত বেসামরিক লোকজনকে
দেয়া আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স স্থগিত করা হয়েছে। ওই সময়ে যাদের লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে, তাদের ৩ সেপ্টেম্বরের মধ্যে গোলাবারুদসহ আগ্নেয়াস্ত্র সংশ্লিষ্ট থানায় জমা দিতে বলা হয়।