সেনাবাহিনীর নিরাপত্তায় গাজীপুরে শিল্পকারখানা উৎপাদন স্বাভাবিক
গাজীপুর দক্ষিণ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:৫২ পিএম
গাজীপুরের শিল্পাঞ্চলে পোশাকসহ প্রায় সব ধরনের শিল্পকারখানা সকাল থেকে কিছুটা ঝামেলা হলেও দুপুরের পর থেকে পুরোদমে চালু হয়েছে। নিরাপত্তার শঙ্কায় কয়েক দিন ধরে বেশ কিছু শিল্প কারখানা বন্ধ রাখা হলেও আজ সেগুলো চালু হয়েছে।
তবে শিল্পাঞ্চলের কারখানাগুলোতে নিরাপত্তা দিতে মাঠে নেমেছে সেনাবাহিনী। এজন্য তৈরি করা হয়েছে বিশেষ নিরাপত্তা।
মঙ্গলবার সকালে বিচ্ছিন্নভাবে কয়েকটি শিল্প কারখানা ছাড়া বেশিরভাগ কারখানায় উৎপাদন ব্যবস্থা স্বাভাবিক আছে।
সকালে গাজীপুরের মৌচাক এলাকার ট্রান্সকম বেভারেজ কারখানার শ্রমিকরা বেতন বৃদ্ধি বৈষম্য দূরীকরণসহ বিভিন্ন দাবিতে কারখানার প্রধান গেটে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে। কিছুটা উত্তপ্ত হলে সেনাবাহিনীর সদস্যরা এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এদিকে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের বড়বাড়ি এলাকায় একটি কারখানাতে শ্রমিকেরা মহাসড়কে কিছুসময় অবস্থান করে বিক্ষোভ করে। একই মহাসড়কের সাইনবোর্ড এলাকায় ইস্ট ওয়েস্ট গার্মেন্টসে বৈষম্য দূর করার দাবিতে শ্রমিকরা বিক্ষোভ করেছেন। কারখানাগুলোর নিরাপত্তা রক্ষায় সেনাসদস্যসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা মোতায়েন রয়েছে।
সকাল ৯টার দিকে টঙ্গীর বিসিক এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল করেন পোশাক কারখানার শ্রমিকরা। সকাল ১০টার পর থেকে বিএনপির নেতাকর্মীরা অবস্থান নিয়ে কিছুটা স্বাভাবিক হয়। পরে, সেনাবাহিনী এসে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করেন।
সকাল সাড়ে ৯টার দিকে টঙ্গীর বাটা গেট এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল করেন বাটার শ্রমিকরা। এ সময় বাটার শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. বাদুর উদ্দিন বলেন, গত চার দিন যাবত আমরা আমাদের দাবিগুলো নিয়ে শান্তিপূর্ণ সভা-সমাবেশ করে আসছি। যতদিন পর্যন্ত আমাদের দাবিগুলো না মানা হবে, ততদিন পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে।
গাজীপুর ও আশুলিয়ায় তৈরি পোশাক শিল্পসহ অন্যান্য খাতের শ্রমিকদের আন্দোলনের কারণে শিল্পাঞ্চলে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। এই আন্দোলনে ইন্ধনদাতাদের বিরুদ্ধে গতকাল সোমবার রাত থেকে সেনাবাহিনী, পুলিশ ও শিল্প পুলিশের যৌথ অভিযান শুরুর নির্দেশনা দিয়েছে সরকার।
সকাল থেকে গাজীপুরের কয়েকটি কারখানায় ভাঙচুর করার কারণে কারখানা বন্ধ ঘোষণা করেন মালিকপক্ষ।
দুপুরে গাজীপুর সদর বাইপাস এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল করেন বেকার কমিটি সদস্যরা। পরে তাদের ৭ দফা দাবি জানান। তাদের দাবিগুলো না মানা পর্যন্ত তাদের আন্দোলন চলমান থাকবে বলে হুঁশিয়ারি দেন। পরে সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে গেলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
বাংলাদেশ বেকার সংগঠনের ৭ দফাগুলো হচ্ছে- সংগঠনের সকলকে চাকরি দিতে হবে, সংগঠন থেকে প্রতিমাসে কমপক্ষে ১০০ জনকে চাকরি দিতে হবে, সব অদক্ষ কর্মীকে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে চাকরি দিতে হবে, সব গার্মেন্টস কর্মী ভাই ও বোনদের সঙ্গে ভালো আচরণ করতে হবে, নিয়োগের ক্ষেত্রে ৫০ পার্সেন্ট মেয়ে নিলে ৫০ পার্সেন্ট ছেলেও নিতে হবে, প্রতি মাসের ৫ তারিখের মধ্য সব গার্মেন্টস কর্মীর বেতন পরিশোধ করতে হবে, সংগঠনের সব কর্মীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ বেকার কমিটির সভাপতি মো. শাহিন জানান, দেশে দিন দিন যে হারে বেকারত্ব বৃদ্ধি পাচ্ছে, তাতে ভবিষ্যতে দেশের জন্য অনেক ভয়ংকর হবে। বেকার কমিটি থেকে প্রতি মাসে মিনিমাম ১শ জনের চাকরি নিশ্চিত করার জন্য তিনি আহ্বান জানান।