যমুনার রেলসেতু উদ্বোধন ডিসেম্বরে
ভূঞাপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:০৬ পিএম
যমুনা নদীতে নির্মাণাধীন রেলসেতু উদ্বোধন করা হবে ডিসেম্বরে। টাঙ্গাইলের প্রমত্তা যমুনা নদীর ওপর নির্মিত যমুনা সেতুর ৩০০ মিটার অদূরে দেশের দীর্ঘতম নির্মাণাধীন রেলসেতু এখন পুরোটাই দৃশ্যমান।
যমুনা নদীর ওপর নির্মাণাধীন এই সেতুটির সব স্প্যান ইতোমধ্যে বসানো শেষ হয়েছে। সেই সঙ্গে শেষ হয়েছে ৯৪ শতাংশ কাজও। এর মধ্যে টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরের সেতু পূর্বপ্রান্তে কাজ পুরোপুরি সম্পন্ন হয়েছে। সিরাজগঞ্জের পশ্চিম প্রান্তেও পুরোপুরি শেষের দিকে। এছাড়া সেতু পূর্ব ও পশ্চিম স্টেশন আধুনিকায়নের কাজও প্রায় শেষ পর্যায়ে।
রেলসেতু প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিডি) আল ফাত্তাহ মো. মাসুদুর রহমান জানান, নির্মাণাধীন রেলসেতুর কাজ ইতোমধ্যে ৯৪ শতাংশ শেষ হয়েছে। এছাড়া নির্মাণ ব্যয়ও বাড়ছে না। আশা করছি, চলতি বছরের ডিসেম্বর মাসে উদ্বোধন করা যাবে। সেই লক্ষ্য নিয়ে দ্রুতগতিতে রাতদিন কাজ করা হচ্ছে।
প্রকল্প সূত্র জানায়, নির্মাণাধীন সেতু দিয়ে সাধারণ ট্রেন ছাড়াও দ্রুতগতির (হাইস্পিড) ট্রেনও চলাচলের উপযুক্ত করে নির্মাণ করা হচ্ছে। ফলে সেতুতে ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ২৫০ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন চালানো যাবে। তবে শুরুতে (উদ্বোধনের ১ বছর) সাধারণত ঘণ্টায় ১০০ থেকে ১২০ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন চলাচল করবে।
২০১৬ সালের ডিসেম্বরে নেওয়া প্রকল্পে চূড়ান্ত নকশা প্রণয়নসহ রেলসেতুর নির্মাণ ব্যয় প্রথমে ৯ হাজার ৭৩৪ কোটি ৭ লাখ টাকা ধরা হয়েছিল।
জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা (জাইকা) দেশের বৃহত্তর এ রেলসেতু নির্মাণে ৭ হাজার ৭২৪ কোটি ৩৩ লাখ টাকা ঋণ দেওয়ার কথা ছিল। প্রথম দফা ডিপিপি সংশোধনের পর সেতুর নির্মাণ ব্যয় ৭ হাজার ৪৭ কোটি টাকা বেড়ে ১৬ হাজার ৭৮০ কোটি ৯৬ লাখ টাকায় দাঁড়ায়।
এ রেলসেতুর সমান্তরাল ডুয়েলগেজ ও ডাবল ট্র্যাকসহ প্রায় ৪ দশমিক ৮০ কিলোমিটার রেলসেতুর দুই পাশে ০.০৫ কিলোমিটার ভায়াডাক্ট, ৭ দশমিক ৬৬৭ কিলোমিটার রেলওয়ে অ্যাপ্রোচ এমব্যাংকমেন্ট এবং লুপ ও সাইডিংসহ রেললাইন নির্মাণ করা হবে। প্রকল্পে রেলপথের পাশাপাশি সেতুর গ্যাস সঞ্চালন লাইন নির্মাণ করা হয়েছে।
১৯৯৮ সালে বঙ্গবন্ধু সেতু চালু হওয়ার পরই ঢাকার সঙ্গে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের রেল যোগাযোগ স্থাপিত হয়। তবে ২০০৮ সালে সেতুটিতে ফাটল দেখা দেওয়ায় কমিয়ে দেওয়া হয় ট্রেনের গতিসীমা। বর্তমানে প্রতিদিন প্রায় ৩৮টি ট্রেন ঘণ্টায় ২০ কিলোমিটার গতিতে সেতু পারাপার হচ্ছে। এসব সমস্যা সমাধানে সরকার যমুনা নদীর ওপর আলাদা রেলসেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেয়।
২০২০ সালের ২৯ নভেম্বর সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভার্চুয়ালি সেতুটি নির্মাণকাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। এরপর ২০২১ সালের মার্চে রেলসেতুর পিলার নির্মাণে পাইলিংয়ের কাজ শুরু হয়।