Logo
Logo
×

সারাদেশ

নোয়াখালীতে টানা বৃষ্টিতে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি

Icon

কোম্পানীগঞ্জ (নোয়াখালী) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২৮ আগস্ট ২০২৪, ১০:৫০ পিএম

নোয়াখালীতে টানা বৃষ্টিতে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি

নোয়াখালীর ৮টি উপজেলা ও ৭টি পৌরসভার বন্যা পরিস্থিতি প্রতিদিনই অবনতির দিকে যাচ্ছে। একদিকে ফেনী থেকে নেমে আসছে বন্যার পানি অন্যদিকে টানা ভারি বৃষ্টির কারণে পানি বেড়েই চলছে সদর, কবিরহাট, কোম্পানীগঞ্জ, বেগমগঞ্জ, সেনবাগ, সোনাইমুড়ী ও চাটখিল উপজেলার প্রতিটি এলাকায়। সুবর্ণচর উপজেলার বিভিন্ন স্থানেও কিছুটা পানি বেড়েছে। জেলায় এ পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ৬ জনের।

বুধবার সকাল পর্যন্ত জেলায় যে পরিমাণ বৃষ্টি হয়েছে তাতে এলাকাভেদে পানি বেড়ে ৫ ইঞ্চি থেকে প্রায় ১ ফুট করে। মঙ্গলবার রাত ৩টা থেকে বুধবার বিকাল ৩টা পর্যন্ত জেলা বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে ৭২ মিলিমিটার।

বন্যাকবলিত এলাকা ঘুরে জানা গেছে, মঙ্গলবার দুপুরের পর থেকে বিকাল পর্যন্ত জেলায় রৌদ্রকর পরিবেশ থাকার পর রাত ৩টা পর্যন্ত বৃষ্টি ছিল না। এ সময় বন্যাকবলিত বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রায় ৫/৬ ইঞ্চি করে পানি নেমে যায়; কিন্তু রাত ৩টার পর থেকে বুধবার দুপুর পর্যন্ত ভারি বর্ষণে আবারো বাড়তে থাকে পানি। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত বন্যাকবলিত উঁচু এলাকায় আগের চেয়ে আরও ৫-৬ ইঞ্চি ও নিচু এলাকায় প্রায় ১ ফুট পানি বেড়েছে। বুধবার দুপুর থেকেও রৌদ্রজ্জ্বল পরিবেশ বিরাজ করছে। শেষ রাতে আবার কী ঘটে তা নিয়ে চিন্তিত বন্যাকবলিত লোকজন। এখনো প্রত্যন্ত এলাকায় পানিবন্দি হয়ে আছেন ১৯ লাখের বেশি মানুষ। জেলাজুড়ে দেখা দিয়েছে খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানির সংকট। সরকারি, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের পক্ষ থেকে খাদ্য-ত্রাণ দিলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম। এছাড়া যাতায়ত ব্যবস্থা না থাকায় দুর্গম এলাকাগুলোতে ত্রাণ পৌঁছানো যাচ্ছে না। জেলায় বেড়েছে ডায়রিয়া ও সাপে কাটা রোগীর সংখ্যা।

স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি অভিযোগ করে বলেন, জেলার প্রতিটি উপজেলা যে পরিমাণ খাল দখল হয়েছে সেগুলো এখনো উদ্ধার হয়নি। যে খালগুলো কিছুটা দখল মুক্ত আছে তার বেশির ভাগ ময়লা আবর্জনা দিয়ে ভরে রাখা হয়েছে। তাই বিভিন্ন এলাকা থেকে পানি নামতে সমস্যা হচ্ছে। 
এদিকে বুধবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত স্থানীয় লোকজন, সেনাবাহিনী, কবিরহাট ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় চরএলাহী রিকশাওয়ালার দোকান এলাকায় খালের মাঝখানে দেওয়া একটি বাঁধের একটি অংশ কেটে দেয় পানি উন্নয়ন বোর্ড; যা দিয়ে বন্যার কিছু পানি নামা শুরু করেছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আনোয়ার হোসেন পাটোয়ারী জানান, নোয়াখালী খালের মুখে বাঁধা পাওয়ার ওই খালটির একটি অংশ কাটা হয়েছে। সেটি সম্পূর্ণভাবে কাটতে হলে অনেক ভেকু মেশিনের প্রয়োজন হবে; যা অনেক সময়ের কাজ। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। পরবর্তীতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার সৈয়দ মহিউদ্দিন আবদুল আজিম জানান, প্রতিদিনই হাসপাতালে বাড়ছে ডায়রিয়া ও সাপে কাটা রোগীর সংখ্যা। বর্তমানে হাসপাতালে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ভর্তি আছেন ৬৮ জন ও সাপে কাটার রোগী আছেন ২৫ জন। এছাড়া জেলার বন্যাকবলিত ৮টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিচ্ছেন ৯৩ জন ডায়রিয়া রোগী।

অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (সার্বিক) শারমিন আরা জানান, বন্যাকবলিত লোকজনকে জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে সহযোগিতা করা হচ্ছে। জেলার ১ হাজার ৩০৩টি আশ্রয়ণ কেন্দ্রে প্রায় ২ লাখ ৬৫ হাজার লোক আশ্রয় নিয়েছেন। ৫৯৩ মেট্রিকটন চাল মজুদ থাকলেও নগদ অর্থ, শুকনা খাবার, শিশু খাদ্য ও গো-খাদ্য কোনো মজুত নেই।

Jamuna Electronics
wholesaleclub

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম