চান্দিনায় ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ
চান্দিনা (কুমিল্লা) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৮ আগস্ট ২০২৪, ১২:৪৫ পিএম
কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার ৫নং কেরণখাল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. সুমন ভুঁইয়ার বিরুদ্ধে প্রকল্পের অর্থ আত্মসাতসহ ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। এছাড়া এক মাসেরও বেশি সময় ধরে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কার্যালয়ে অনুপস্থিত থাকায় জন্ম নিবন্ধন, ট্রেড লাইসেন্স, ভোটার আইডি কার্ড সংশোধনসহ অতি গুরুত্বপূর্ণ সেবা বঞ্চিত হচ্ছে স্থানীয়রা।
মঙ্গলবার সরেজমিনে ইউনিয়ন পরিষদে গিয়ে দেখা যায়, ইউনিয়ন পরিষদের মাঠ ও ইউপি ভবন সংলগ্ন পুরো এলাকায় ইট, বালি, কংক্রিট, স্ল্যাব, ট্রাক্টরসহ নির্মাণ সামগ্রী স্তূপাকারে রাখা হয়েছে। যেন এটি কোনো ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। এছাড়া ইউপি কার্যালয়ের একটি কক্ষে টর্চারসেল বানিয়েছিলেন চেয়ারম্যান। তার বিরুদ্ধে কথা বললে তাকে নিজস্ব সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে তুলে নিয়ে নির্যাতন করা হতো।
ওই ইউনিয়নের তেঘরিয়া গ্রামের মো. জামাল অভিযোগ করেন, তার ছেলেকে তুলে নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদে একদিন-এক রাত রেখে ইউএনওকে দিয়ে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে সাজা দিয়েছিলেন চেয়ারম্যান। এমন বহু ঘটনার অভিযোগ রয়েছে ওই চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে।
এদিকে আল-আমিন, আ. মতিন ও নাঈমসহ অসংখ্য সেবাগ্রহীতা অভিযোগ করে বলেন, জন্মনিবন্ধন ও আইডি কার্ড সংশোধনের জন্য গত ৩-৪ মাস ধরে নিয়মিত ইউনিয়ন পরিষদে আসছেন তারা। বিভিন্ন অজুহাতে অর্থ হাতিয়ে নিয়েও কাজ করে দেননি চেয়ারম্যান ও ইউপি উদ্যোক্তা।
অপরদিকে কাজের বিনিময়ে টাকা (কাবিটা) প্রকল্পসহ সরকারি বিভিন্ন বরাদ্দের টাকা ভুয়া প্রকল্প দেখিয়ে আত্মসাৎ করেন চেয়ারম্যান। তেঘরিয়া গ্রামের ইউনুস, শামসুল হক ও জামালসহ এলাকাবাসী জানান, বাগমারা ব্রিজ হতে নূরজাহান মেম্বারের বাড়ি পর্যন্ত সড়কের উন্নয়ন কাজের একটি কাবিটা প্রকল্প থেকে ৩ লাখ টাকা আত্মসাৎ করে চেয়ারম্যান। প্রকল্পের সভাপতির কাছ থেকে জোরপূর্বক টাকা নিয়ে গেছেন তিনি।
এ বিষয়ে প্রকল্পের সাধারণ সম্পাদক আলী আযম মেম্বার বলেন, চেয়ারম্যানের সঙ্গে গত দেড় বছর আমার কোনো যোগাযোগ নেই। তিনি বিভিন্ন প্রকল্পে আমাদেরকে নামে মাত্র সভাপতি বা সম্পাদক বানিয়ে রাখেন। নিজেই টাকা তুলে খরচ করেন। আমরা জানিও না।
কাবিটার প্রকল্প সম্পর্কে তিনি বলেন, কাজের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। কাজটি শেষ হয়নি। টাকা কি করেছেন চেয়ারম্যানই বলতে পারবেন।
এই ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. হারুন-অর-রশিদ বলেন, তার ব্রিকস ফিল্ডের ট্রেড লাইসেন্সের জন্য ২০২১ সালে আবেদন করলেও অদ্যাবধি লাইসেন্স দেয়নি চেয়ারম্যান।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত চেয়ারম্যান সুমন ভূইয়া বলেন, আমি নির্বাচিত হওয়ার পর ২০ জন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র দিয়ে একটি টিম করে ৩ মাসে অসংখ্য জন্মনিবন্ধন বিনা টাকায় করে দিয়েছি। আর বয়স নিয়ে জটিলতা বা সংশোধন থাকলে নিবন্ধন পেতে কিছু সময় লাগতে পারে। তবে এটা আমার কারণে নয়। সেটা অফিসিয়াল সিস্টেমের কারণে।
প্রকল্পের টাকা আত্মসাৎ এর বিষয়টি অস্বীকার করে তিনি বলেন, প্রকল্পের সভাপতি ছিলেন নূর জাহান মেম্বার। মাটির কাজ ছিল। কাজ হয়েছে। এলাকাবাসী সলিং করতে অনুরোধ করেছিলো। আমি তাদের কথা দিয়েছিলাম।