রায়পুরে বন্যার পানি নামতে বড় বাধা অবৈধ বাঁধ-কচুরিপানা
রায়পুর (লক্ষ্মীপুর)
প্রকাশ: ২৭ আগস্ট ২০২৪, ০৩:০০ পিএম
লক্ষ্মীপুরের রায়পুর ও সদর উপজেলায় বন্যার পানি কমতে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে নদী-খালের ওপর নির্মিত অবৈধ বাঁধ ও এতে জমে থাকা কচুরিপানা। এসবের কারণে দ্রুত পানি নামতে পারছে না। এর মধ্যে সোম ও মঙ্গলবার দিনভর থেমে থেমে বৃষ্টিতে ও নোয়াখালীর পানির চাপ আরও বেড়েছে।
এ জেলার প্রায় ৮৫ ভাগ এলাকায় ৮ লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি। মানুষের ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাটে এলাকাভেদে ১ থেকে ৪ ফুট পানি রয়েছে।
রায়পুরের পৌরসভার কাঞ্চনপুর, দেনায়েতপুর, মধুপুর, দেবিপুর, পুর্বলাচ, হায়দারগঞ্জ এলাকাসহ সদরে মজুপুর, বাঞ্চানগর, দেনায়েতপুরসহ কয়েকটি এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, চারদিকে পানি থই থই। অনেক এলাকায় কোমর সমান পানি রয়েছে। ঘর-বাড়ির ভেতরেও পানি। সদরের রহমতখালী খাল, ওয়াপদা খাল, রামগতি, কমলনগরের ভুলুয়া নদী, জারির দোনা খাল, রামগঞ্জের ওয়াপদা, বিরেন্দ্র খাল, রায়পুরের ডাকাতিয়া নদীসহ বিভিন্ন স্থানে নদী-খাল দখল করে মাছচাষ, সেতু-কালভার্ট-রাস্তা, দোকানপাটসহ স্থাপনা নির্মাণ করায় ব্যাপক জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। এতে জমা পানি নামতে বেগ পেতে হচ্ছে।
এদিকে চাঁদপুর সেচ প্রকল্পের বন্যা নিয়ন্ত্রণ বেড়িবাঁধের ভেতরে থাকা খাল স্থানীয় লোকজনের কাছে ওয়াপদা খাল হিসেবেই পরিচিত। লক্ষ্মীপুর সদর, রায়পুর, রামগঞ্জ, চাঁদপুর সদর, ফরিদগঞ্জ, হাইমচর উপজেলার ১০০ কিলোমিটার এলাকা নিয়ে এ বেঁড়িবাধ ও খাল। জলাবদ্ধতা থেকে রক্ষা করতে বেড়িবাঁধটি করা হয়েছিল। এর সুফল পেতেন ৫ লক্ষাধিক কৃষক। বর্তমানে এ খালের বিভিন্ন স্থানে পরিকল্পিতভাবে দখল আর কচুরিপানা জটের কারণে ধীরে ধীরে পানি নামছে।
রায়পুরের দক্ষিণ চরবংশী ইউপি চেয়ারম্যান আবু সালেহ মিন্টু ফরায়েজি, উত্তর চরবংশী ইউপি চেয়ারম্যান ও রায়পুর ইউপি চেয়ারম্যান সফিউল আজম চৌধুরী সুমন বলেন, পাউবোর ডাকাতিয়া নদী ও সংযোগ খালে কচুরিপানা জমে জট লেগে আছে। এতে আশানুরূপ পানি নামছে না। কচুরিপানা পরিষ্কার করতে পারলে দ্রুত বন্যার পানি নেমে যেতো।
এ বিষয়ে লক্ষ্মীপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নাহিদ-উজ জামান খান বলেন, রোববার সকাল ৯টা থেকে মঙ্গলবার ৬টা পর্যন্ত লক্ষ্মীপুরে ৪৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। বন্যার পানি ৬ ইঞ্চি বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়া রহমতখালী খাল হয়ে নোয়াখালীর পানি লক্ষ্মীপুরে অনবরত ঢুকছে। মুছাপুরের স্লুইচ গেট ভেঙে গেছে। এতে এর একটি অংশের পানি বেগমগঞ্জ হয়ে লক্ষ্মীপুরে প্রবেশের সম্ভাবনা রয়েছে।
লক্ষ্মীপুর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) জেপি দেওয়ান বলেন, আশ্রয়কেন্দ্রে ২৩ হাজার ৪০৪ জন মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। এখন পর্যন্ত ৯ হাজার ৯৪৩ প্যাকেট শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়া আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে খিচুড়ি রান্না করে সরবরাহ করা হচ্ছে।