অবশেষে হোটেল শ্রমিক মমদেলের করা মামলার কার্যক্রম বন্ধ
রংপুর ব্যুরো
প্রকাশ: ২৬ আগস্ট ২০২৪, ১১:০৪ পিএম
অবশেষে হোটেল শ্রমিক মমদেল হোসেনের করা মামলাটি রংপুর মেট্রোপলিটন কোতোয়ালি আমলি আদালত বিচারের জন্য রেকর্ড করেননি। এ মামলাটি রোববার দুপুরে কয়েকজন আইনজীবী বাদীর পক্ষে রংপুর মেট্রোপলিটন কোতোয়ালি আমলি আদালতে দাখিল করেন। এ সময় আদালতের বিচারক বাদীকে আদালতে হাজির হতে বলেন।
আইনজীবীরা ওই সময়ে বাদীকে আদালতে হাজির করতে পারেননি। এরপর আদালতের বিচারক বাদীর আইনজীবীকে বিকাল ৫টার মধ্যে আদালতে হাজির করতে নির্দেশ দেন; কিন্তু এরপরও আদালতের কার্যক্রমের শেষ সময়কালের মধ্যে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত আইনজীবীরা মামলার বাদী মমদেল হোসেনকে আদালতে হাজির করতে পারেননি। ফলে আদালতের বিচারক মামলাটি বিচারের জন্য রেকর্ডভুক্ত না করে তা নথিজাত করেন। ফলে এ মামলার কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়।
এর আগে রোববার মামলা করার বিষয়ে নিশ্চিত করেছিলেন বৈষম্যবিরোধী আইনজীবী আন্দোলনের সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট পলাশ কান্তি নাগ।
এ সম্পর্কে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বাদী মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার বোন শেখ রেহানা, সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক মন্ত্রী হাসানুল হক ইনু ও রাশেদ খান মেনন, সাংবাদিক সুভাষ সিংহ রায় ও নাইমুল ইসলাম খান, সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ এ আরাফাত, সাবেক নৌপরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান, সাবেক আইনমন্ত্রী কামরুল ইসলাম, সাবেক সংসদ সদস্য অপু উকিল, সাবেক বিচারপতি শামসুজ্জামান চৌধুরী মানিক, সাবেক বিচারপতি আক্তারুজ্জামান, রংপুর রেঞ্জের সাবেক ডিআইজি আব্দুল বাতেন, রংপুর বিভাগীয় কমিশনার বিভাগীয় কমিশনার জাকির হোসেন, রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের সাবেক কমিশনার মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান, রংপুর জেলা প্রশাসক মোবাশ্বের হাসান, জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাহজাহান, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (অপরাধ) উত্তম কুমার পাল, অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার উৎপল কুমার রায়সহ রংপুর জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ এবং অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন স্তরের ৪৫১ জনের নাম উল্লেখ করেন।
এছাড়া মামলায় অজ্ঞাত আসামি করা হয় ২০০ থেকে ৩০০ জনকে। পরবর্তীতে বিএনপি ও যুবদলের নেতাকর্মীরা জানতে পারেন মামলার বাদী মমদেল হোসেন তাদের দলীয় কর্মী। তাকে বাদী সাজিয়ে একটি ইসলামী রাজনৈতিক দলের পক্ষে মামলাটি আদালতে দাখিল করা হয়। এ খবর পেয়ে যুবদলের নেতাকর্মীরা মামলার বাদীকে আদালত চত্বর থেকে নিয়ে যান। এ কারণেই মামলাটি আদালতে রেকর্ডভুক্ত হয়নি।
এদিকে মামলার আবেদনে বলা হয়, গত ১৯ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে সিটি বাজার এলাকায় পুলিশ ও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের সঙ্গে ছাত্র-জনতার সংঘর্ষ হয়। এ সময় পুলিশের গুলিতে বাদী মমদেল হোসেনের বাম পায়ের হাঁটুর নিচের অংশ গুঁড়ো হয়ে যায়। এছাড়া হাতে ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুলি লাগে।
পরে তাকে রংপুর থেকে ঢাকায় পঙ্গু হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তার বাম পায়ের হাঁটুর নিচের অংশ ও হাতের আঙুল কেটে ফেলা হয়। ওই দিন ঘটনাস্থলে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান অন্তত পাঁচজন। শেখ হাসিনাসহ উল্লেখিত ১৪ জনের নির্দেশে পুলিশ ও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা এমন তাণ্ডব চালিয়েছে বলে আবেদনে বলা হয়।
এ সম্পর্কে দৈনিক যুগান্তরে রংপুরে শেখ হাসিনা-রেহেনা, ডিসি-এসপিসহ ৪৫১ জনের নামে মামলা সংক্রান্ত খবর প্রকাশ হয়। এছাড়া স্থানীয় ও জাতীয় দৈনিকসমূহে মামলা করা হয়েছে বলে খবর প্রকাশিত হয়। পরবর্তী বিষয়টি অনুসন্ধান করে সোমবার আদালত থেকে জানা গেছে, প্রকৃতপক্ষে মামলাটি দাখিল করা হলেও বিচারের জন্য রেকর্ডভুক্ত করা হয়নি।
এ বিষয়ে রংপুর মহানগর যুবদলের দায়িত্বশীলদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা বিষয়টি নিয়ে কোনো মন্তব্য করেননি।