ফেনীতে স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় ত্রাণের জন্য হাহাকার

ফেনী প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৬ আগস্ট ২০২৪, ১০:০৫ পিএম
ফেনী সদর উপজেলায় স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যার কবলে হাজারও মানুষ। ফেনী নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে ইতোমধ্যেই তলিয়ে গেছে সদর উপজেলার অধিকাংশ এলাকা। এতে হাজারও বানভাসি পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
এসব এলাকার গ্রামীণ সব রাস্তাঘাট তলিয়ে যাওয়ায় সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে বন্যায় জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। সারা দেশ থেকে ত্রাণ ও উদ্ধার কর্মীরা ফুলগাজী, পরশুরাম, ছাগলনাইয়া উপজেলায় প্রবেশ করলেও ত্রাণ পাচ্ছেন না ফেনী সদর উপজেলার পানিবন্দি একশ গ্রামের প্রায় ৫০ হাজার মানুষ। পানিবন্দি হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে এই উপজেলার নারী-শিশু, বৃদ্ধসহ সব বয়সি মানুষ।
সরেজমিন ঘুরে জানা গেছে, স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে সরকারি ত্রাণ সহায়তা দেওয়া হলেও প্রত্যন্ত অঞ্চলের বন্যা কবলিত মানুষের মাঝে এখনো কোনো ত্রাণ সহায়তা পৌঁছায়নি। বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক দলের সামান্য কিছু উদ্যোগ ছাড়া ত্রাণ পাচ্ছেন না সদর উপজেলার একশত গ্রামের পানিবন্দি ৫০ হাজার মানুষ।
এমন পরিস্থিতিতে বন্যার্ত অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠনের নেতারা।
ফেনী সদর ইউনিয়নের আবুপুর গ্রামের বাসিন্দা সুমন দাস, অমর কৃষ্ণ বলেন, সদর উপজেলায় প্রায় সব এলাকা বন্যায় প্লাবিত কিন্তু বিষয়টি সেভাবে গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচনায় আসেনি।
তিনি বলেন, ফেনী নদী ও ছোট ফেনী নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বন্যার পানিতে তলিয়ে থাকা গ্রামগুলোতে সরকারি কোনো ত্রাণ সহায়তা পৌঁছায়নি। খাবার ও বিশুদ্ধ পানির চরম সংকট দোকানপাটেও তেমন খাবার সামগ্রী নেই। থাকলেও দাম অনেক বেশি নেওয়া হচ্ছে। গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি হচ্ছে প্রায় দুই-তিন গুণ বেশি দামে। সাধারণ মানুষ জিম্মি হয়ে পড়েছেন। এসব বিষয়ে তদারকি করে পর্যাপ্ত ত্রাণ সহায়তা দেওয়া দরকার ।
সদর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা যুগান্তরকে বলেন, শশদী ইউনিয়নের আবুপুর, দক্ষিণ আবুপুর, কুমিরা, উজালিয়া, জাহানপুর ভাস্কর গ্রামের ৯ হাজার পরিবারের ৫০ হাজার মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে। এর মধ্যে কতিপয় পরিবার আশ্রয়কেন্দ্রে উঠেছে। তাদের শুকনো খাবার ও চাল ডাল দিয়ে সহযোগিতা করা হচ্ছে।
তিনি বলেন কালিদহ, বালিগাঁও, কাজিরবাগ পাঁচগাছি ইউনিয়নেও একই পরিবেশ বিরাজ করছে। স্থানীয় কতিপয় যুবক তাদের ব্যক্তিগত উদ্যোগে আশরা কেন্দ্রগুলোতে খাওয়ার পরিবেশন করলেও অধিকাংশ মানুষ ত্রাণ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। জেলা প্রশাসকের উদ্যোগে বিভিন্ন ইউনিয়নে একজন করে ত্রাণ কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়েছে। আশা করি, কয়েক দিনের মধ্যে পরিবেশ স্বাভাবিক হবে।