কুমিল্লায় ভয়াবহ বন্যায় বিপর্যস্ত জনজীবন, খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানির সঙ্কট

সদর দক্ষিণ (কুমিল্লা) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৬ আগস্ট ২০২৪, ০৩:৫৬ পিএম

স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যার কবলে কুমিল্লার মানুষ। ডাকাতিয়া নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে ইতোমধ্যেই তলিয়ে গেছে কুমিল্লা সদর দক্ষিণের অধিকাংশ এলাকা। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে হাজারও বানভাসি।
এসব এলাকার গ্রামীণ সব রাস্তাঘাট তলিয়ে যাওয়ায় সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে বন্যায় বিপর্যস্ত জনজীবন। সারাদেশ থেকে ত্রাণ ও উদ্ধার কর্মীরা কুমিল্লা বুড়িচং- ব্রাহ্মণপাড়া ও চৌদ্দগ্রাম উপজেলায় প্রবেশ করলেও ত্রাণ পাচ্ছেন না কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার পানিবন্দি একশ চল্লিশ গ্রামের প্রায় পঁয়তাল্লিশ হাজার মানুষ। পানিবন্দি হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে এই উপজেলার নারী-শিশু, বৃদ্ধসহ সববয়সি মানুষ।
সরেজমিনে ঘুরে জানা গেছে, স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে আশ্রয়কেন্দ্র গুলোতে সরকারি ত্রাণ সহায়তা দেওয়া হলেও প্রত্যন্ত অঞ্চলের বন্যা কবলিত মানুষের মাঝে এখনো কোনো ত্রাণ সহায়তা পৌঁছায়নি। বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক দলের সামান্য কিছু উদ্যোগ ছাড়া ত্রাণ পাচ্ছেন না সদর দক্ষিণ উপজেলার একশত একচল্লিশটি গ্রামের পানিবন্দি পঁয়তাল্লিশ হাজার মানুষ।
এমন পরিস্থিতিতে বন্যার্ত অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠনের নেতারা।
চৌয়ারা ইউনিয়নের টঙ্গীরপাড় গ্রামের বাসিন্দা শাহ আলম বলেন, সদর দক্ষিণ উপজেলায় প্রায় সব এলাকা বন্যায় প্লাবিত। কিন্তু বিষয়টি সেভাবে গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচনায় আসেনি।
তিনি আরও বলেন, ডাকাতিয়া নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বন্যার পানিতে তলিয়ে থাকা গ্রামগুলোতে সরকারি কোনো ত্রাণ সহায়তা পৌঁছায়নি। খাবার ও বিশুদ্ধ পানির চরম সংকট দোকানপাটেও তেমন খাবার সামগ্রী নেই। থাকলেও দাম অনেক বেশি নেওয়া হচ্ছে। গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি হচ্ছে প্রায় দুই তিন গুণ বেশি দামে। সাধারণ মানুষ জিম্মি হয়ে পড়েছেন। এসব বিষয়ে তদারকি করে পর্যাপ্ত ত্রাণ সহায়তা দেওয়া দরকার ।
সদর দক্ষিণ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান বলেন, সদর দক্ষিণের দুইশত তেত্রিশটি গ্রামের মধ্যে একশত একচল্লিশ গ্রামের ৯ হাজার পরিবারের পঁয়তাল্লিশ হাজার মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে। এরমধ্যে দুইশত চুয়াল্লিশটি পরিবার পঁচিশটি আশ্রয়কেন্দ্রে উঠেছে। তাদেরকে শুকনো খাবার ও চাল ডাল দিয়ে সহযোগিতা করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুবাইয়া খানম বলেন, বন্যা কবলিত লোকজনকে শুকনো খাবার দেওয়া হচ্ছে। বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক দলের লোকজনও খাবার নিয়ে পানিবন্দি মানুষের পাশে থেকে সহযোগিতা করছেন। উপজেলার সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বানভাসি মানুষকে আশ্রয় দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।