Logo
Logo
×

সারাদেশ

একটি প্যাকেট দিয়ে ছবি তোলে ১০ জন

ফটোসেশনে বিব্রত বানভাসি, যাচ্ছেন না ত্রাণ নিতে

Icon

আবুল খায়ের, কুমিল্লা

প্রকাশ: ২৫ আগস্ট ২০২৪, ১২:১৫ এএম

ফটোসেশনে বিব্রত বানভাসি, যাচ্ছেন না ত্রাণ নিতে

একটি ত্রাণের প্যাকেট দিয়ে বিভিন্ন দিক থেকে ছবি তোলেন ৮-১০ জন। এরপর তা ছড়িয়ে দেওয়া হয় সামাজিকমাধ্যমে। এ কারণে আত্মসম্মান বিসর্জন দিয়ে বেশিরভাগ বানভাসি ত্রাণ নিতে যাচ্ছে না। 

এমন অভিযোগ করেন কুমিল্লার বুড়িচংয়ের বাসিন্দারা। শনিবার এই উপজেলার বন্যাদুর্গত এলাকা ঘুরে এমন অভিযোগের সত্যতাও মিলেছে। বিভিন্ন এলাকা থেকে ত্রাণ নিয়ে আসা অনেককেই ফিরে যেতে দেখা গেছে। ত্রাণ দেওয়ার নামে ফটোসেশনের জন্য অতিরিক্ত সাজ-শয্যাও চোখে পড়েছে।

জানা গেছে, বুড়িচংয়ের বুড়বুড়িয়া, মহিষমারা, ষোলনল, পীর যাত্রাপুরসহ আশপাশের অর্ধশতাধিক গ্রামের দুর্গত মানুষ তাদের সহায় সম্বল হারিয়েছে। প্রতিদিনই নতুন নতুন এলাকা বন্যায় প্লাবিত হচ্ছে। এসব এলাকার কিছু মানুষ আশ্রয় কেন্দ্রে গেলেও অনেকেই পানির সঙ্গে যুদ্ধ করে নিজ বাড়ির ছাদে কিংবা মাচা বানিয়ে অবস্থান করছেন। 

আশ্রয় কেন্দ্রে অবস্থান করা অনেকে নিজ উদ্যোগেই খাবারসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য জোগাড় করছেন। এর মধ্যে কোনো কোনো আশ্রয় কেন্দ্রে সামাজিক সংগঠন ফটোসেশন ছাড়া খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করলে তা সাদরে গ্রহণ করছে বানভাসিরা। 

তবে অনেক এলাকায় ত্রাণ সহায়তার নামে ফটোসেশন করা হচ্ছে। এতে খুবই বিব্রত বানভাসিরা। তাদের অভিযোগ, সামান্য খাদ্যসামগ্রী দিয়ে তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। এতে আত্মীয়স্বজনের কাছে তারা হেয়প্রতিপন্ন হচ্ছেন। তাই ফটোসেশন এড়িয়ে নিরবচ্ছিন্ন ত্রাণ সরবরাহের অনুরোধ জানান তারা। 

ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে ব্যক্তি ও সামাজিক সংগঠনের ব্যানারে ক্যামেরাম্যানসহ অনেককে ত্রাণ নিয়ে দুর্গত এলাকায় ঘোরাঘুরি করতে দেখা গেছে। বিব্রতকর পরিস্থিতি এড়াতে এদের কাছ থেকে ত্রাণ গ্রহণ করছেন না বানভাসিরা। ফলে গ্রহিতার অভাবে অনেকে ত্রাণ নিয়ে ফিরে যাচ্ছে। 

ঢাকা থেকে উদয়ন সমাজ সংঘের ব্যানারে ত্রাণ নিয়ে আসা আবুল হাসনাত বলেন, শনিবার সকাল থেকে বন্যাদুর্গত এলাকায় ত্রাণ নিয়ে ঘুরছি। কিন্তু ত্রাণ দেওয়ার মতো লোক খুঁজে পাচ্ছি না। অনেকেই শুকনা খাবার নিতে চাচ্ছে না। কেউ কেউ নিতে চাইলেও ফটোসেশনে রাজি হচ্ছে না। তিনি বলেন, যেহেতু আমাদের বহু মানুষের একটি সংগঠন। তাই আমাদের কার্যক্রমগুলো ফটোসেশন করতে হয়। 

মহিষমারা এলাকার বাসিন্দা মুকুল চৌধুরী বলেন, আমাদের এলাকার মানুষ বন্যায় সর্বস্বান্ত হলেও তারা আত্মসম্মান নিয়ে বাঁচতে চায়। এখানকার বেশিরভাগ মানুষই স্বাবলম্বী ছিল। তাই ত্রাণের নামে ফটোসেশনে বিব্রত তারা।  

ষোলনলের বাসিন্দা ইব্রাহিম খলিল ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আপনারা আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন এজন্য আমরা কৃতজ্ঞ। কিন্তু ফটো-ভিডিও করে সোস্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল করার অধিকার আপনাদের কে দিয়েছে। আমরা ভিক্ষুক নই। পরিস্থিতির কারণে সাময়িক অসুবিধায় পড়েছি। আমাদেরও মান-সম্মান আছে।   

Jamuna Electronics
wholesaleclub

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম