ফরিদগঞ্জে টানা বর্ষণে সর্বনাশ মৎস্যচাষীদের
ফরিদগঞ্জ (চাঁদপুর) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৪ আগস্ট ২০২৪, ০৮:০১ পিএম
চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার গোবিন্দপুর দক্ষিণ ইউনিয়নের একজন সফল মৎস্য চাষী সোহেল বেপারী। গত ১০ বছর ধরে কার্প জাতীয় মাছ চাষ করছেন। ২০১৭, ২০১৮ সালে উপজেলা পর্যায়ে এবং ২০২১ সালে জাতীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ মৎস্যচাষী হিসেবে সম্মননা পেয়েছেন। কিন্তু টানা এক সপ্তাহের ভারি বর্ষণে তার মাথায় বাজ পড়ার উপক্রম হয়েছে। তার ১৭টি প্রজেক্টের প্রায় সবগুলোই বৃষ্টির পানিতে ভেসে গেছে। এই চিত্রও শুধু সোহেল বেপারী নয়, উপজেলার শত শত মৎস্যচাষীর।
উপজেলা মৎস্য বিভাগ মৎস্যচাষীদের মাছ ধরে রাখতে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন বলে জানা গেছে।জানা গেছে, গত রোববার রাত থেকে টানা বর্ষণ শুরু হয়। যা বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত অব্যাহত ছিল। শুক্রবার বৃষ্টির পরিমাণ কম হলেও মাঝে মাঝে বৃষ্টি হয়েছে।
বর্ষণের কারণে ভয়াবহ জলাবদ্ধতার শিকার ফরিদগঞ্জের লাখ লাখ মানুষ। সাত দিন পর শনিবার (২৪ আগস্ট) আকাশে সূর্যের দেখা মিলেছে। চাঁদপুর সেচ প্রকল্পের দুটি স্লুইচ গেট দিয়ে পানি নামলেও গত দুই দিনে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে পানি কমার কোনো লক্ষণ নেই বরং কিছু কিছু স্থানে পানি বেড়েছে। উপজেলার প্রায় ৯০ ভাগ এলাকা জলাবদ্ধতার শিকার।
মৎস্যচাষী সোহেল বেপারী জানান, তিনি গত ১০ বছর ধরে কার্প জাতীয় মাছ চাষ করে আসছেন। তার ১৭টি মাছের ঘের রয়েছে। প্রতিটি মাছের ঘের ২ একর থেকে শুরু করে ৫-৬ একর পর্যন্ত টানা বর্ষণের কারণে সৃষ্ট বন্যায় তার অন্তত ২ কোটি টাকার মাছ ভেসে গেছে। মাছ ধরে রাখতে দ্বিগুণ টাকা দিয়েও কাজের লোক খুঁজে পাচ্ছেন না। কয়েক লাখ টাকা দিয়ে জাল কিনে এনে বাকি মাছগুলো ধরে রাখার চেষ্টা করছেন। সাধারণত এপ্রিল থেকে আগস্ট মাস পর্যন্ত মাছের ঘেরে লাখ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেন তারা। সেপ্টেম্বর মাস থেকে তারা মাছ ধরা শুরু করেন। এবার আগস্ট মাসেই সব শেষ হয়ে গেছে।
একই দশা রূপসা উত্তরের আনোয়ার হোসেন, পাইকপাড়া দক্ষিণের সাইফুল ইসলাম, পৌর এলাকার কামাল মিজি, মাকসুদুল বাশার বাঁধন, মুকুল পাটওয়ারী, মোরশেদ আলমসহ অনেকের। তারা জানান, একেক মাছের ঘেরে তারা লাখ লাখ টাকা পুঁজি বিনিয়োগ করেছেন মাছ চাষে। এক সপ্তাহেও পানি কমার লক্ষণ নেই। কী করবেন ভেবে পাচ্ছেন না।
উপজেলা মৎস্য কর্মর্কতা বেলায়েত হোসেন জানান, তারা প্রতিনিয়ত মৎস্যচাষীদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেছেন এবং বিভিন্ন পরামর্শ দিচ্ছেন। প্রাথমিকভাবে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, প্রায় ৯ কোটি টাকার মাছ ভেসে গেছে এবং ৭-৮ শত হেক্টর মাছের ঘের ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর পরিমাণ আরও বাড়তে পারে।