রামগতিতে পানিবন্দি মানুষের জনজীবন বিপর্যস্ত
রামগতি (লক্ষ্মীপুর) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৩ আগস্ট ২০২৪, ১০:৫৭ পিএম
মেঘনার জোয়ার ও ভারি বর্ষণে লক্ষ্মীপুরের রামগতি ও কমলনগরের খাল-বিল, ফসলের খেত, রাস্তা-ঘাট, হাট-বাজারসহ বসতবাড়িও ডুবে গেছে। অধিকাংশ বাড়িতেই হাঁটুপানি। চুলায় আগুন না জ্বলায় পরিবারের রান্না-বান্না বন্ধ হয়ে পড়েছে। এতে হাজার হাজার পরিবারের জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।
কমলনগর উপজেলার চরকাদিরা ইউনিয়নের চরঠিকা ও ভুলুয়া নদীর আশপাশের গ্রামগুলোতে পানিবন্দি মানুষের দুঃখের যেন শেষ নেই। এছাড়া মেঘনা নদীর তীর রক্ষা বাঁধ না থাকায় অস্বাভাবিক জোয়ারের পানিতে তলিয়ে যায় চর ফলকন, সাহেবেরহাট, পাটারিরহাট, চর মার্টিন, চর লরেন্স, চর কালকিনি ইউনিয়ন। তোরাবগঞ্জ ও হাজিরহাট ইউনিয়নের মানুষও পানিবন্দি।
সরেজমিন কমলনগরের চরকাদিরা ইউনিয়নের ভুলুয়া নদী এলাকা ঘুরে দেখা যায়, ভুলুয়া নদীতে উপচে পড়ছে পানি। অথচ শুষ্ক মৌসুমে এ নদীতে পানিই থাকে না। একই সঙ্গে আশপাশের বিস্তীর্ণ এলাকাও ডুবে আছে বৃষ্টির পানিতে। অধিকাংশ বাড়িতেই হাঁটুপানি জমে আছে। আবার অনেক বাড়িতে কোমর পরিমাণ পানি, ঘরেও ঢুকে পড়েছে। সেখানকার মানুষ উঁচু এলাকায় আত্মীয়স্বজনদের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন।
রামগতির চরপোড়াগাছা গ্রামের শেখের কিল্লা এলাকায় গিয়ে শতাধিক বাড়িতে হাঁটু পরিমাণ পানি দেখা যায়। তারা বাড়িতে রান্নার হাঁড়ি বসাতে পারছেন না, ঘরে বাইরে পানি আর পানি।
চরবাদাম ইউনিয়নের বেড়িবাঁধ এলাকার পূর্বপাশে দেখা যায়, বিস্তীর্ণ এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। গণকবর স্থান ডুবে আছে।
রামগতি উপজেলার চরবাদাম ও চরপোড়া গাছা ইউনিয়ন ঘুরে পানিবন্দি বাসিন্দাদের দুর্দশার চিত্র দেখা যায়। এছাড়াও বালুর চর, আলেকজান্ডার, চর গোসাই, চর আবদুল্লাহ, রগুনাথপুরসহ মেঘনা উপকূলীয় গ্রামগুলো অতিবৃষ্টি ও অস্বাভাবিক জোয়ারের পানিতে ভাসছে।
এদিকে, জেলা ও উপজেলা প্রশাসন এবং সামাজিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন পানিবন্দি পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছে। কমলনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুচিত্র রঞ্জন দাসকে কোমর পানি মাড়িয়ে বাড়ি বাড়ি গিয়ে শুকনো খাবার ও পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট দিতে দেখা গেছে।
লক্ষ্মীপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী নাহিদ-উজ জামান খান বলেন, মেঘনার জোয়ারের সময় স্লুইসগেট বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে, ভাটার সময় খুলে দেওয়া হয়।
লক্ষ্মীপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) সুরাইয়া জাহান বলেন, জেলায় শুকনো খাবার বিতরণ কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। এছাড়া আমাদের স্থায়ী ও অস্থায়ী ১৮৯টি সাইক্লোন সেন্টার প্রস্তুত রয়েছে।