ভৈরবে আ.লীগ নেতা সৌরভসহ ৫৮ জনের বিরুদ্ধে আহত মামুনের মামলা
ভৈরব (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৩ আগস্ট ২০২৪, ১০:৫১ পিএম
ফাইল ছবি
ভৈরবে পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আতিক আহমেদ সৌরভকে প্রধান আসামি করে ৫৮ জনের বিরুদ্ধে কিশোরগঞ্জ আদালতে একটি মামলা করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গুরুতর আহত মামুন মিয়া। ঘটনার এক মাস তিন দিন পর বিচার পেতে তিনি এ মামলা করেন।
তিনি শুক্রবার জানান, বৃহস্পতিবার বিকালে কিশোরগঞ্জের সিনিয়র ম্যাজিস্ট্রেট কিশোর দত্তের আমলি আদালতে এ মামলা করেন। মামলায় ৫৮ জন ছাড়াও অজ্ঞাত আসামি করা হয় ১০-১৫ জনকে। পৌর শহরের জগন্নাথপুর গ্রামের লক্ষীপুর এলাকার জাহের মিয়ার ছেলে মামুন মিয়া একজন দিনমজুর।
আদালতের বিচারক মামলাটি গ্রহণ করে ভৈরব থানার ওসিকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন বলে আইনজীবী সূত্রে জানা গেছে।
মামলার বিবরণে জানা গেছে, গত ১৯ জুলাই শুক্রবার দুপুর ২টায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীদের সঙ্গে ভৈরব আওয়ামী লীগের নেতাদের সংঘর্ষ হয়। এ সংঘর্ষে মামুন মিয়ার হাতে দায়ের আঘাতে গুরুতর জখম হয়। ওই দিন তাকে আহত অবস্থায় ঢাকার একটি হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক কয়েক দিন চিকিৎসা দেওয়ার পর তার হাতে পচন দেখা দেয়। পরে মামুনের ডান হাতটি কেটে ফেলে দেওয়া হয়।
মামলায় আওয়ামী লীগ ও দলের অঙ্গ সংগঠনের নেতাদের মধ্য যাদের আসামি করা হয় তারা হলেন- উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি তালাওয়াত হোসেন বাবলা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক খলিলুর রহমান, সহ-প্রচার সম্পাদক মোশারফ হোসেন মুছা, স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক ডা. মিজানুর রহমান কবির, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি আবদুল হেকিম রায়হান, পৌর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক রাকিব রায়হান, পৌর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌর কাউন্সিলর মো. আল-আমিন সৈকত, পৌর কাউন্সিলর ও আওয়ামী লীগ নেতা শহিদুল হক শিমুল, ছাত্রলীগ নেত্রী সাবিহা মাহাবুব প্রভা, উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদি হাসান রিয়াদসহ ৫৮ জন।
মামলার বাদী মামুন মিয়া বলেন, গত ১৯ জুলাই দুপুরে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক শহীদুল্লাহ কায়সার পাদুকা মার্কেটের সামনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগ নেতাদের সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে আওয়ামী লীগ নেতারা একপর্যায়ে আমাদের জগন্নাথপুর গ্রামে ঢুকে পড়ে। গ্রামবাসী সবাই প্রতিহত করতে গেলে আমাকে দা দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে আহত করে তারা। এ সময় স্থানীয়রা আমাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান।
বাদী বলেন, তাদের আঘাতের ফলে আমার ডান হাতটি কেটে ফেলা হয়েছে। আমার হাত কাটার পর থেকে আমি মানবেতর জীবনযাপন করছি। বিভিন্ন সংগঠন ও বিএনপি নেতাদের সহযোগিতায় কোনোরকম চিকিৎসা করতে পেরেছি। বাকি জীবন কিভাবে আমার সংসার চালাব, কিভাবে কাটবে দিন, এ নিয়ে চিন্তায় আছি। আমি ঘটনার বিচার পেতে আদালতে মামলা করেছি।
ভৈরব থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. সফিকুল ইসলাম শুক্রবার সকালে জানান, মামলার বিষয়টি শুনেছি কিন্তু আদালতের আদেশ এখনো থানায় পৌঁছেনি। বৃহস্পতিবার বিকালে এই মামলা করা হলে আগামী রোববার আদেশটি থানায় পৌঁছতে পারে। আদেশটি পৌঁছলে পুলিশ ঘটনা তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেবে।