পাহাড়ি ঢলে ডুবে আছে দীঘিনালার মেরুং। ছবি: যুগান্তর
নিচু এলাকা হওয়ার কারণে দীঘিনালার মেরুং ইউনিয়নের বেশিরভাগ মানুষ এখনো পানিবন্দি হয়ে আছেন। শুক্রবার দুপুরে সরেজমিন মেরুংয়ের একাধিক এলাকায় গিয়ে এ দৃশ্য দেখা যায়।
মেরুং ইউনিয়নের প্রত্যন্ত গ্রাম ছদকা ছড়া। নৌপথে মেরুং বাজার থেকে যেতে সময় লাগে দেড় ঘণ্টা। সেখানে গিয়ে দেখা গেছে, ছদকা ছড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এখনো ৭ ফুট পানির নিচে। গ্রামের অনেক ঘরবাড়িও পানির নিচে। বৃহস্পতিবার বিকাল থেকে খাগড়াছড়ি ও দীঘিনালায় বৃষ্টিপাত হয়নি। তবে পাহাড়ি ঢলের কারণে মেরুং ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে।
ছদকা ছড়া গ্রামের বাসিন্দা ও স্থানীয় কার্বারি এপেকশন চাকমা বলেন, সোমবার থেকে পানি বাড়তে শুরু করেছে। এখনো গ্রাম থেকে পানি নেমে যায়নি। আরও কয়েক দিন সময় লাগতে পারে। যদি বৃষ্টি না থাকে তাহলে পানি কমবে। এ নিয়ে আমরা চার দফায় বন্যার পানিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি।
মেরুং ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য সমীরন চাকমা বলেন, আমার ওয়ার্ডের প্রায় ৭টি গ্রাম এখনো বন্যার পানিতে ডুবে আছে। সোমবার রাত থেকে এসব গ্রামের মানুষ পানিবন্দি হয়ে আছেন। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে শুক্রবার দুর্গম এলাকার পরিবারগুলোকে ত্রাণ সহায়তা দেওয়া হয়েছে।
মেরুং ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান ঘনশ্যাম ত্রিপুরা বলেন, পানি না কমায় মেরুং ইউনিয়নের বন্যাদুর্গত এলাকার মানুষ বাড়ি ফিরতে পারেননি। বন্যায় অন্তত ৪০টি গ্রাম এখনো পানিবন্দি। মেরুং বাজার এখনো পানিতে প্লাবিত। সব আশ্রয় কেন্দ্রে পর্যাপ্ত ত্রাণ সহায়তা দেওয়া হয়েছে।
মেরুং ইউনিয়নের প্লাবিত অনেক গ্রামে মোবাইল সংযোগ নেই। শুক্রবার সেসব দুর্গম এলাকায় ত্রাণ সহায়তা দিয়েছে উপজেলা প্রশাসন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মামুনুর রশিদ বলেন, আজকে আমরা একেবারে প্রত্যন্ত এলাকায় ত্রাণ দিয়েছি। যেসব এলাকায় মোবাইল নেটওয়ার্ক নেই তাদের পরিস্থিতি আমরা সরেজমিন দেখেছি। দুর্গম এলাকায় দেড় শতাধিক পরিবারকে শুকনো খাবার, চাল, ডালসহ খাদ্য উপকরণ দেওয়া হয়েছে।
প্রশাসনের পাশাপাশি মেরুং ইউনিয়নে ত্রাণ সহায়তা দিয়েছে জেলা ও উপজেলা বিএনপির নেতাকর্মীরা।
সড়ক থেকে পানি না নামায় খাগড়াছড়ির সঙ্গে সাজেক ও লংগদুর সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে।
বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে বৃষ্টি না থাকায় খাগড়াছড়ি জেলা সদরের বন্যা পরিস্থিতি উন্নতি হয়েছে। আশ্রয় কেন্দ্র থেকে মানুষ বাড়ি ফিরতে শুরু করেছেন।