গোমতীর বাঁধ ভেঙে প্রবল বেগে পানি ঢুকছে বুড়িচংয়ে, ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা
বুড়িচং (কুমিল্লা) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৩ আগস্ট ২০২৪, ০৮:৩৬ পিএম
কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার ৪নং ষোলনল ইউনিয়নের বুড়বুড়িয়া গ্রামের বেড়িবাঁধ ভেঙে প্রবল বেগে গোমতী নদীর পানি বুড়িচং উপজেলার নদীর উত্তর ও পূর্ব পাড়ের গ্রামগুলোতে প্রবেশ করেছে। এতে মানুষের বাড়িঘর, ফসল, গরু, ছাগল, হাঁস-মুরগিসহ জান-মালের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশংকা করা হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে বেড়িবাঁধের প্রায় ২০০ থেকে ২৫০ ফুট এলাকা ভেঙে এ ঘটনা ঘটে বলে জানা যায়।
ষোলনল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাজী বিল্লাল হোসেন জানান, তিনি কয়েক দিন যাবত বাঁধের বিভিন্ন অংশে ফাটল মেরামতসহ মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরে যাওয়ার জন্য উদ্বুদ্ধ করে যাচ্ছেন। সেই সঙ্গে ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধটিও পরিদর্শন করেছেন।
ইউপি চেয়ারম্যান বলেন, মানুষ কোনোরকমে ভেজা কাপড় নিয়েই মহিষমারা হাইস্কুলের চারতলা ভবনে আশ্রয় নিতে থাকে। বুড়িচংয়ে অবস্থানরত সেনা বাহিনী, পুলিশ বাহিনী, ফায়ার সার্ভিস ও স্বেচ্ছাসেবকদের বন্যার পানিতে আটকে পড়া মানুষকে উদ্ধার কাজে সহযোগিতা করতে দেখা গেছে।
শুক্রবার স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নদীর এ পাড়ের পাঁচ ইউনিয়নের প্রায় সব বাড়িতে পানি প্রবেশ করেছে। পানির প্রবল স্রোত লক্ষ্য করা গেছে, পাশাপাশি পানির উচ্চতা আরও বৃদ্ধি পাচ্ছে।
সরজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, কৃষকের মৌসুমী আধা পাকা ধান এবং পকুর ডুবে কৃষক এবং মাছ চাষির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সড়কের সেতুগুলোতে জাল নিয়ে এলাকার মানুষকে মাছ ধরতে দেখা গেছে।
কুমিল্লা-বুড়িচং সড়কের খাড়াতাইয়া এবং ভরাসার এলাকায় রাস্তার ওপর দিয়ে প্রবল বেগে পানি প্রবাহিত হওয়ার কারণে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
বুড়বুড়িয়া, মিথলাপুরসহ বেশিরভাগ ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামগুলো হলো- বেড়াজাল, শিকারপুর, গাজীপুর, খাড়াতাইয়া, শিব রামপুর, মাহিষমারা, নানুয়ার বাজার, ভরাসার, বাকশীমূলসহ প্রায় ২০-২৫টি গ্রাম।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী খান মোহাম্মদ ওয়ালি উজ্জামান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেছেন, বাঁধটি ভেঙে পড়ার কারণে বুড়িচং উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হবে।
এদিকে বিকেল থেকেই সেনাবাহিনীকে সঙ্গে নিয়ে বুড়িচং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাহিদা আক্তার বাঁধের ভেতরের মানুষকে উদ্ধার এবং বাইরের মানুষকে সচেতন করে আসছেন। সেই সঙ্গে গোমতীর বাঁধ ভেঙে প্রবল বেগে পানি নেমে আসছে জানিয়ে সবাইকে নির্ধারিত আশ্রয়ণ সেন্টারগুলোতে আশ্রয় নেওয়ার আহ্বান জানান।