Logo
Logo
×

সারাদেশ

সমন্বয়ক পরিচয়ে শাবির নিরাপত্তা কর্মকর্তাকে নির্যাতনের অভিযোগ

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন 

প্রকাশ: ২৩ আগস্ট ২০২৪, ০৮:২২ পিএম

সমন্বয়ক পরিচয়ে শাবির নিরাপত্তা কর্মকর্তাকে নির্যাতনের অভিযোগ

অভিযুক্ত শরীফ সজীব

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) সিনিয়র নিরাপত্তা কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলামকে হেনস্তা এবং জোর করে পদত্যাগপত্র লিখিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের এক শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে। ওই শিক্ষার্থীর নাম শরীফ সজীব। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। 

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সুযোগ নিয়ে নিজেকে সমন্বয়কারী পরিচয় দিয়ে অপহরণ করে নিয়ে সজীবের নেতৃত্বে সিকিউরিটি গার্ড শাকিল আহমেদ নোমানসহ কয়েকজন উগ্র সিকিউরিটি গার্ড আইন নিজেদের হাতে তুলে নিযার্তন ও হয়রানি করে। যদিও অভিযুক্ত শিক্ষার্থী সজীব বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়ক পরিচয় দেওয়ার কথা পরে অস্বীকার করেন। 

নির্যাতিত সিনিয়র নিরাপত্তা কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম জানান, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সরকার পতনের পর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যসহ অন্য কর্মকর্তারা অনুপস্থিত হয়ে পড়েন। পুরো বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তার দায়িত্ব নিজের কাঁধে নিয়ে রাত-দিন দায়িত্ব পালন করি। গত ১৫ আগস্ট শরীফ সজীব নিজেকে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়ক পরিচয় দিয়ে ফোন করেন। একপর্যায়ে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত ‘যমুনা সেইভ গার্ড সার্ভিস লিমিটেড কোম্পানির’ তিনজন গার্ড যাদের ওই কোম্পানি নানা কারণে অনেক আগেই বরখাস্ত করে, তাদের পুনরায় বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগ দেওয়ার জন্য চাপ দেন। তাকে বুঝিয়ে বলা হয় বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু করার নেই, সেই কোম্পানির বিষয়; কিন্তু তাতে তিনি ক্ষ্যান্ত হননি। বারবার ফোন করে হুমকি দিতে থাকেন। 

একপর্যায়ে ১৬ আগস্ট বিকালে সজীব, সিকিউরিটি গার্ড শাকিল আহমেদ নোমানসহ বেশ কয়েকজন লোক এসে আমাকে বাসা থেকে তুলে নিয়ে কেন্দ্রীয় অডিটোরিয়ামের নিচে নিয়ে যায়। সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের সেই গার্ডসহ সবাই মিলে শারীরিক নির্যাতন চালায় এবং বিভিন্ন মিথ্যা অপবাদ দিয়ে গুজব রটায়, যা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যে প্রণোদিত। এরপর তারা তাকে প্রশাসনিক ভবন-১ এ নিয়ে গিয়ে তার রুমে আটক ও অবরুদ্ধ করে নিরাপত্তারক্ষীদের উপস্থিতিতে তাকে জোর করে পদত্যাগপত্র লিখতে বাধ্য করা হয়। 

এ সময় তিনি রেজিস্ট্রার বরাবর পদত্যাগপত্র লিখে দিলে তারা তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে শিক্ষক-কর্মকর্তা কোয়ার্টার থেকে তার পরিবারসহ বের হয়ে যেতে বাধ্য করে।

সজীবের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে সাইফুল ইসলাম আরও বলেন, বাসা ছেড়ে দেওয়ার পর পরিবারের সদস্যরা সেই বাসায় গেলে সজীব বিশ্ববিদ্যালয়ের সদ্যবিদায়ী ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রারকে হুমকি দিয়ে পরিবারের সদ্যস্যদের বাসা ছেড়ে দিতে বলেন। এছাড়া সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভিন্নভাবে মিথ্যা প্রোপাগান্ডাসহ হয়রানি করে আসছে। 

সজীব সমন্বয়কারীদের কেউ কিনা তা জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক এবং কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক কমিটির সদস্য আসাদুল্লাহ আল গালিব বলেন, শরীফ সজীব নামে আমাদের কোনো সমন্বয়কারী নেই। কেউ এ ধরনের কর্মকাণ্ড করে থাকলে তার দায় নেবে না বৈষম্যবিরোধী সমন্বয়করা। 

এ বিষয়ে শরীফ সজীব বলেন, আমি কাউকে সমন্বয়কারী পরিচয় দিইনি; কিন্তু নিরাপত্তারক্ষীদের হয়ে কেউ কথা বলতে এগিয়ে আসে না বলে আমি একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হিসেবে এগিয়ে এসেছি। 

এদিকে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের নেতা খলিল ও সজীব গ্রুপের ছত্রছায়ায় সিকিউরিটি গার্ড সাকিল ছাত্রলীগ করার সুবাদে নিজের চাকরি নেয়। তারপর থেকেই শাকিলকে নিরাপত্তা দায়িত্ব পালনের বিষয়ে নিরাপত্তা কর্মকর্তারা নিয়ন্ত্রণ করতে পারতেন না। ছাত্রলীগের খলিল সজিব গ্রুপের বিভিন্ন ক্ষমতা দেখিয়ে ইচ্ছামতো পছন্দ জায়গায় ডিউটি করত। বর্তমানে তার অপকর্ম ঢাকতেই নতুন কৌশল তৈরি করেছে বলে অন্য গার্ডরা অভিযোগ করেন। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা জানান, বিষয়টি তারা জেনেছেন। উপাচার্য যোগদানের পরই এ বিষয়ে তারা ব্যবস্থা নেবেন। 

Jamuna Electronics
wholesaleclub

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম