Logo
Logo
×

সারাদেশ

সাবেক প্রতিমন্ত্রী চুমকির বিরুদ্ধে ৩ মামলা

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন, গাজীপুর 

প্রকাশ: ২২ আগস্ট ২০২৪, ০৫:৩১ পিএম

সাবেক প্রতিমন্ত্রী চুমকির বিরুদ্ধে ৩ মামলা

গাজীপুরের কালীগঞ্জে সাবেক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকিসহ দুই উপজেলা চেয়ারম্যান, পৌরসভার সাবেক মেয়র, জেলা পরিষদের সদস্য, চারজন ইউপি চেয়ারম্যান, আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের ১১৪ নেতাকর্মীর নামে হত্যা, মারধর ও চুরির অভিযোগে পৃথক তিনটি মামলা দায়ের হয়েছে।

বুধবার মাত্র তিন ঘণ্টার ব্যবধানে মামলা তিনিটি দায়ের করা হয়। বৃহস্পতিবার সকালে মামলা তিনটি দায়ের করার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহাতাব উদ্দিন।

এজাহার সূত্রে জানা গেছে, গত ৪ আগস্ট বেলা ১১টার দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে একাত্মতা প্রকাশ করে অংশ নেওয়া কালীগঞ্জ উপজেলার উত্তরগাঁও এলাকার কিসমিস আলীর ছেলে ইসমাইল হোসেনসহ বিএনপির নেতাকর্মীরা বালীগাঁও বাইপাস সড়কে মিছিল করার সময় মেহের আফরোজ চুমকির হুকুমে অন্য আসামিরা তাকে মারধর করে গুরুতর জখম করে। 

এ ঘটনায় ইসমাইল হোসেন বাদী হয়ে মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকিসহ আওয়ামী লীগের ৬৬ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত ৩৫-৪০ জনের বিরুদ্ধে অস্ত্রশস্ত্রসহ হত্যার উদ্দেশ্যে হুকুম প্রদান, মারধর, গুরুতর জখম ও হুমকির অভিযোগে মামলা দায়ের করেছেন।

মামলার উল্লেখযোগ্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন- সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মোয়াজ্জেম হোসেন, সদ্য সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আমজাদ হোসেন, আওয়ামী লীগ নেতা মাজেদুল ইসলাম, জেলা পরিষদের সদস্য দেলোয়ার হোসেন, সাবেক সদস্য সফিকুল কাদের, বাহাদুরসাদী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহাবুদ্দিন আহমেদ, জামালপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান খাইরুল আলম, নাগরী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান অলিউল ইসলাম, সাবেক চেয়ারম্যান সিরাজ মোড়ল, পৌর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি আহমেদুল কবির, পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কামরুল ইসলাম, কাউন্সিলর আমির হোসেন খাঁ, আশরাফুল আলম, বাদল হোসেন, তুমুলিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বজলুর রহমান, উপজেলা যুবলীগের সভাপতি আলমগীর হোসেন। অন্যরা সবাই আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মী।

জানা গেছে, কালীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান শেখ বাদী হয়ে মেহের আফরোজ চুমকিসহ আওয়ামী লীগের ৪০ জন নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন।

এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ২০১১ সালের ৬ মে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা যুবদলের সম্মেলনে যাওয়ার সময় মেহের আফরোজ চুমকির নির্দেশে বিএনপি নেতাকর্মীদের মারধর করে।

সেই সময় বিকল্প পথ হিসেবে শীতলক্ষ্যা নদীপথে ট্রলারে করে সম্মেলনে যাওয়ার উদ্দেশ্যে দুপুর ২টার দিকে কালীগঞ্জ খেয়াঘাট এলাকায় পৌঁছলে আসামিরা বিভিন্ন ধারালো অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে নেতাকর্মীদের ট্রলারের গতিরোধ করে আক্রমণ করে। এতে ট্রলারে থাকা বিএনপি নেতাকর্মীরা গুরুতর আহত হন। 

এর মধ্যে যুবদল কর্মী চৈতারপাড়া এলাকার আনোয়ার হোসেনের ছেলে জামির হোসেনকে (৪০) হত্যার উদ্দেশ্যে যুবলীগ নেতা মাইনুল তার হাতে থাকা লোহার রড দিয়ে মাথায় আঘাত করে মারাত্মক গুরুতর জখম করে। পরে তার মৃত্যু নিশ্চিত করতে অন্য আসামিরা ট্রলার থেকে জামির হোসেনকে নদীতে ফেলে দেয়। 

এছাড়া যুবদলের আরেক কর্মী পলাশ উপজেলার ফিরিন্দা টেকপাড়া এলাকার আ. আব্দুস সালামের ছেলে নাঈম হোসেনকে (২০) হত্যার উদ্দেশ্যে লোহার রড দিয়ে মাথায় আঘাত করে গুরুতর রক্তাক্ত জখম করে সহিদুল ইসলাম ভুট্টো; অন্য আসামিরা নাঈমের মৃত্যু নিশ্চিত করার জন্য ট্রলার থেকে তাকেও নদীর পানিতে ফেলে দেয় এবং অন্য আসামিদের হাতে থাকা ধারালো অস্ত্র দিয়া ট্রলারে থাকা বিএনপির নেতাকর্মীদেরকে কুপিয়ে প্রায় ৩৫-৪০ জন নেতাকর্মীকে মারাত্মক জখম করে।

আসামিরা পূর্বপরিকল্পিতভাবে এ ঘটনা ঘটিয়েছে। জমির ও নাঈমের লাশ শীতলক্ষ্যা নদীর কালীগঞ্জ খেয়াঘাটের দক্ষিণ পাশ থেকে ঘটনার পরদিন ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল উদ্ধার করে। ওই সময় আসামিদের বিরুদ্ধে ঘটনার বিষয়ে কালীগঞ্জ থানায় অভিযোগ দায়ের করতে গেলে আসামিদের বাধার কারণে তৎকালীন অফিসার ইনচার্জ (ওসি) অভিযোগ গ্রহণ করেননি; যার কারণে আসামিদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দিতে কিছুটা বিলম্ব হয়েছে।

প্রথম মামলার দুই ঘণ্টা ৪০ মিনিটের ব্যবধানে ২১ আগস্ট ২টা ৪৫ মিনিটে নথিভুক্ত করা হয়েছে।

বাদীগাঁও এলাকার আব্দুল আওয়ালের ছেলে শরিফ মিয়া বাদী হয়ে অস্ত্রশস্ত্রসহ পথরোধ করে হত্যার উদ্দেশ্যে মারধর, গুরুতর জখম, রক্তাক্ত ও হুমকি দেওয়ার ধারায় যুবলীগের সভাপতি ও কাউন্সিলর বাদল হোসেন, তার ভাই এনামুল হক, আলম ভূঁইয়াসহ ৮ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত ৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম