বরগুনার তালতলীতে দ্বিতীয় স্ত্রী আকলিমা বেগমের পরকীয়ায় বাধা দেওয়ায় স্বামী মাসুম বিল্লাহকে (৩৫) জোর করে বিষ খাইয়ে হত্যা করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। মৃতের বড় ভাই গোলাম কবির এমন অভিযোগ করেছেন। 

মঙ্গলবার রাতে উপজেলার কচুপাত্রা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

জানা গেছে, উপজেলার কচুপাত্রা গ্রামের নাজিম উদ্দিন হাওলাদারের ছেলে মাসুম বিল্লাহ গত তিন বছর আগে হুলাটানা গ্রামের কাদের হাওলাদারের মেয়ে আকলিমা বেগমকে দ্বিতীয় বিয়ে করেন। গত এক বছর ধরে আকলিমা বেগম পার্শ্ববর্তী কলাপাড়া উপজেলার চাকামুইয়া ইউনিয়নের দারোগারতবক গ্রামের নুরুল হকের ছেলে নেছার উদ্দিনের সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন। 

স্বামী মাসুম বিল্লাহ জানতে পেরে স্ত্রী আকলিমাকে বাধা দেন। এ নিয়ে পারিবারিকভাবে তাদের মধ্য বেশ কলহ চলছিল। গত জানুয়ারি মাসে আকলিমা স্বামীর বিরুদ্ধে বরগুনা নারী ও শিশু আদালতে মামলা করেন। 

গত মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে স্বামী মাসুম বিল্লাহকে স্ত্রী আকলিমা বেগম তার বাড়িতে ডেকে নেন। ওই খানে নিয়ে মাসুম বিল্লাহকে আকলিমা ও তার সহযোগীরা জোরপূর্বক বিষ খাইয়ে দেয়। পরে তারা বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে তার স্বজনরা তাকে উদ্ধার করে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসে। ওই হাসপাতালে চিকিৎসকরা তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেন। অবস্থা আশঙ্কাজনক হলে ওই হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. মনিরুজ্জামান তাকে পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। ওই দিন বিকালে তাকে পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার রাত ২টার দিকে তার মৃত্যু হয়। 

বুধবার দুপুরে পুলিশ তার মরদেহ উদ্ধার করে। পরে পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে তার ময়নাতদন্ত হয়। এ ঘটনায় পটুয়াখালী থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।

মৃতের বড় ভাই গোলাম কবির বলেন, পরকীয়া প্রেমে বাধা দেওয়ায় আমার ভাইয়ের দ্বিতীয় স্ত্রী আকলিমা বেগম ও তার সহযোগীরা জোর করে বিষ খাইয়ে আমার ভাইকে হত্যা করেছে। আমি এ ঘটনার বিচার চাই।

মৃতের চাচাতো ভাই সিদ্দিকুর রহমান বলেন, দ্বিতীয় স্ত্রীর ঘরে মাসুম বিল্লাহকে মেঝেতে পড়ে থাকতে দেখি। ঘরে কেউ নেই। পরে উদ্ধার করে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসি। ওই হাসপাতালের চিকিৎসক তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেছে। 

পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ও তত্ত্বাবধায়ক (ভারপ্রাপ্ত) ডা. দিলরুবা ইয়াসমিন লিজা বলেন, ধারণা করা হচ্ছে কীটনাশক জাতীয় দ্রব্য খেয়ে তার মৃত্যু হয়েছে। 

পটুয়াখালী থানার ওসি মো. জসিম বলেন, ময়নাতদন্ত শেষে মাসুম বিল্লাহর মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এ ঘটনায় থানায় অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।