শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলায় সাজাপ্রাপ্তদের নিঃশর্ত মুক্তিসহ ৫ দফা দাবি
সাতক্ষীরা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২০ আগস্ট ২০২৪, ১০:৩১ পিএম
শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলা মামলায় বিভিন্ন মেয়াদে সাজাপ্রাপ্ত জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য হাবিবুল ইসলাম হাবিবসহ সাজাপ্রাপ্ত সব আসামির নিঃশর্ত মুক্তিসহ ৫ দফা দাবিতে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুর ১টায় সাতক্ষীরা প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে এসব দাবি জানান কলারোয়া উপজেলা বিএনপির সহ-সাধারণ সম্পাদক শেখ আব্দুল কাদের বাচ্চু। এ সময় জেলা বিএনপির যুগ্ন আহবায়ক শেখ তারিকুল হাসান সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন।
দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে- ২০০২ সালের ৩০ আগস্ট কলারোয়ায় শেখ হাসিনার গাড়ি হরে হামলার ঘটনার ১২ বছর পর কলারোয়া থানায় একটি মিথ্যা মামলা করা হয়। এ মামলায় তদন্তকারী কর্মকর্তা আদালতে মনগড়া মিথ্যা অভিযোগপত্র দেন। যার পরিপ্রেক্ষিতে বিতর্কিত চার্জশিট ও মিথ্যা স্বাক্ষ্যদানের ভিত্তিতে আদালত সাবেক এমপি হাবিবসহ ৫০ জন বিএনপি নেতাকর্মীকে অস্ত্র ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেয়। নিম্ন আদালতে রায়ের বিরুদ্ধে কারাবন্দি বিএনপি নেতাকর্মীদের পক্ষ থেকে উচ্চ আদালতে আপিল করা হয়। ইতোমধ্যেই এ মামলায় সাজাপ্রাপ্ত চারজন বিএনপি নেতাকর্মী কারা কর্তৃপক্ষের অবহেলায় মৃত্যুবরণ করেছে।
সাবেক এমপি হাবিবসহ ৪৫ জন বিএনপি নেতাকর্মী অদ্যাবধি কারাভোগ করে চলেছেন। অবিলম্বে কারাবন্দি বিএনপি নেতাদের মুক্তির দাবি জানানো হয়েছে। একই সঙ্গে মামলায় ১২ বছর পর যাদের কাছ থেকে আলামত হিসেবে অস্ত্র জব্দ করা হয়েছিল তাদের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে মামলা করার দাবি জানানো হয়। কারণ অস্ত্র আইনে উল্লেখ রয়েছে- যাদের কাছ থেকে আলামত উদ্ধার হবে তারাই আসামি হবে। এছাড়া ইংরেজী ২১৫ সালের ১৪ জুলাই কলারোয়া সেনালী ব্যাংকে ডাকাতি ও জোড়া খুনের মামলা পুনরুজ্জীবিত করে এর সঙ্গে সম্পৃক্ত আওয়ামী লীগ নেতাদের গ্রেফতারসহ আইনের আওতায় আনার দাবি জানানো হয়।
২০১৩ সালের ৫ মার্চ উপজেলা পরিরষদ ভাইস চেয়ারম্যান কার্যালয়ে বোমা প্রস্তুতকালে নিজেদের তৈরি বোমা বিস্ফোরিত হয়ে শুকুর আলী নামে একজন মারা যায়। আহত হয় আরো তিনজন। এ ঘটনায় জড়িতদের সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে আইনের আওতায় আনার দাবি জানানো হয়।
এছাড়া ২০০০ সালের ৫ অক্টোবর বন্যায় প্লাবিত অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া সড়ক পথে কলারোয়া আসার সময় পথে ঝাউডাঙ্গা কলেজের সামনে পৌঁছলে কলারোয়া আওয়ামী সন্ত্রাসীরা তার গাড়িবহরে হামলা চালায় ও নেত্রীকে হত্যার উদ্দেশ্যে গুলি চালায়। যে কারণে তিনি সেখান থেকে বিবিসিতে সাক্ষাৎকার দিয়ে ঢাকায় ফিরে যান। এরপর আওয়ামী সন্ত্রাসীরা ও পুলিশ প্রশাসন সম্মিলিতভাবে কলারোয়া চৌরাস্তায় নির্মিত সভামঞ্চে হামলা চালায়, ভাঙচুর করে ও পুলিশ প্রশাসন রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। এরপর তারা ৪৬ বিএনপি নেতাকর্মীর নামে জননিরাপত্তা আইনে মামলা করে।
পরে আদালত থেকে তারা জামিনে মুক্তি পান। এ ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্তসাপেক্ষে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের এবং সব প্রতিষ্ঠান থেকে দুর্নীতিবাজ ও চাঁদাবাজ মুক্ত করার জোর দাবি জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- সাতক্ষীরা সদর উপজেলা বিএনপির আহবায়ক আবুল হাসান হাদী, পৌর বিএনপির আহবায়ক মাসুম বিল্লাহ শাহীন, জেলা যুবদলের প্রধান সমন্বয়ক আইনুল ইসলাম নান্টা, জেলা কৃষক দলের সাবেক আহবায়ক আহসানুল কাদির স্বপন, শহর বিএনপির সদস্যসচিব আব্দুল্লাহ আল মামুন, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি শরিফুল ইসলাম সজীব, কলারোয়া উপজেলার বিএনপি ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আব্দুর রশিদ মিয়া, পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শেখ শরিফুজ্জামান তুহিন,কলারোয়া বাজার ব্যাবসায়ী সমিতির সভাপতি ও পৌর বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শওকাত হোসেন, যুবদল নেতা এমএ হাকিম সবুজ,সালাউদ্দিন পারভেজ, পলাশ, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি মোশারফ হোসেন, উপজেলা কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক মোতাহার হোসেন বাবু প্রমুখ।
প্রধান অতিথি তারিকুল হাসান বলেন, শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলার মিথ্যা মামলায় ফরমায়েশি রায়ে ৭০ বছর মেয়াদি কারাভোগ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা ও সাবেক সংসদ হাবিবসহ ৪৫ নেতাকর্মী। ইতোমধ্যে চারজন কারান্তরীণ অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেছেন। তাদের জেলখানায় শারীরিক নির্যাতন করায় তারা বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুবরণ করেছেন। তিনি এ হত্যার পেছনে জেল কর্তৃপক্ষকে দায়ী করেছেন।