আখাউড়া স্থলবন্দরে শুল্ক কর্তৃপক্ষের গড়িমসিতে পচে গেছে ২২৮ টন গম
যুগান্তর প্রতিবেদক, ব্রাহ্মণবাড়িয়া
প্রকাশ: ২০ আগস্ট ২০২৪, ০৮:২৮ পিএম
ছবি: সংগৃহীত
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া স্থলবন্দরের গুদামে দুই বছর ধরে পড়ে আছে ভারত থেকে আনা ২২৮ টন গম। আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান নির্ধারিত সময়ে গমগুলো খালাস না করায় সবগুলোই পচে নষ্ট হয়ে গেছে; যা এখন পশুখাদ্য হিসেবেও ব্যবহারের উপযুক্ত নয়।
আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের দাবি, শুল্ক কর্তৃপক্ষের গড়িমসির কারণেই গমগুলো ছাড়ানো যায়নি। ফলে প্রায় ৮০ লাখ টাকা মূল্যের এসব গম ধ্বংসের প্রক্রিয়া শুরু করেছে শুল্ক কর্তৃপক্ষ।
গুদামে দীর্ঘদিন পড়ে থাকায় পোকায় ধরেছে গমে, ছড়াচ্ছে দুর্গন্ধ। শুল্কমুক্ত সুবিধায় ভারত থেকে আনা ২২৮ টন গম নির্ধারিত সময়ে খালাস না করায় পচে নষ্ট হয়েছে; যার আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৮০ লাখ টাকা।
জানা গেছে, ২০২২ সালে আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে প্রায় ১১ হাজার টন গম আমদানি করে চট্টগ্রামের আলম ট্রেডার্স। প্রতি টন গমের আমদানি মূল্য ছিল ৩২৫ থেকে ৩৫০ মার্কিন ডলার। চাহিদা থাকায় আমদানির পরপরই বন্দর থেকে গম খালাস করে আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানটি। তবে ওই বছরের জুনে টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলের কারণে গম আমদানি বন্ধ হয়ে যায়। পরবর্তীতে আগস্ট মাস থেকে আবারও বন্দরে আসতে শুরু করে আটকে থাকা গমের চালান।
তবে ওই সময় ভালো গমের সঙ্গে বৃষ্টিতে ভেজা ২২৮ টন গম পাঠায় পশ্চিমবঙ্গের একটি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান। তাই ভালো গমগুলো আগে খালাস করে আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান। পরবর্তীতে ভেজা গমগুলো ছাড়াতে গেলে শুল্ক কর্তৃপক্ষ গড়িমসি করায় গমগুলো আর ছাড়ানো যায়নি বলে অভিযোগ আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের; যার ফলে গমের আমদানি মূল্যও পরিশোধ করা যায়নি।
আলম ট্রেডাসের স্থানীয় প্রতিনিধি মো. আক্তার হোসেন সাজু বলেন, কাস্টম কর্তৃপক্ষের গড়িমসির কারণেই আমরা গমগুলো সময়মতো ছাড় করতে পারি নাই। যার ফলে গমগুলো পচে গেছে। এতে আমাদের প্রায় ৮০ লাখ টাকার মতো লোকসান গুনতে হয়েছে।
আখাউড়া স্থল শুল্ক স্টেশন সহকারী কমিশনার মো. ইমরান হোসেন বলেছেন, গমগুলো ভেজা এবং নিম্নমানের ছিল। তাই আমদানি নীতিবহির্ভূত হওয়ায় তখন ছাড় দেওয়া যায়নি। পরবর্তীতে আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানকে চিঠি দেওয়া হলে গমগুলো খালাসে আগ্রহী নয় বলে জানায়। তাই এখন এগুলো ধ্বংস করার প্রক্রিয়া চলছে বলে জানান এই শুল্ক কর্মকর্তা।
উল্লেখ্য, আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে ২০২১ সালের আগস্টে প্রথম গম আমদানি শুরু হয়। মূলত অন্য পণ্য আমদানি না হওয়ায় শুল্কমুক্ত সুবিধায় আনা গম দিয়েই বন্দরের আমদানি বাণিজ্য সচল ছিল। তবে ২০২২ সালের মে মাস থেকে গম রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দেয় ভারত সরকার।