উলিপুরে তিস্তা নদীর বাম তীর রক্ষার স্পার বাঁধে ধস
উলিপুর (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৯ আগস্ট ২০২৪, ০৯:১৭ পিএম
কুড়িগ্রামের উলিপুরে তিস্তা নদীর বাম তীর রক্ষায় স্থাপিত স্পার বাঁধের একাংশ ধসে গেছে। প্রায় ৭ বছর আগে ৫ কোটি ৭১ লাখ টাকা ব্যয়ে উপজেলার চর বজরা এলাকায় স্পার বাঁধটি নির্মাণ করা হয়।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, নদীর পশ্চিম দিকে অপরিকল্পিতভাবে বেক্সিমকো গ্রুপের সোলার পাওয়ার প্লান নামে একটি স্থাপনা নির্মাণ করায় প্রতি বছর এই এলাকায় নদী ভাঙন বাড়ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার বজরা ইউনিয়নের চর বজরা এলাকায় পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) ২০১৫-২০১৬ অর্থবছরে ৫ কোটি ৭১ লাখ টাকা ব্যয়ে তিস্তা নদীতে ২০০ মিটার দৈর্ঘের বন্যা নিয়ন্ত্রণে একটি স্পার বাঁধ (গ্রোয়েন) নির্মাণ করা হয়। এরপর থেকে বাঁধটি ধীরে ধীরে ভ্রমণপিপাসু মানুষের বিনোদন কেন্দ্রে পরিণত হয়। বিভিন্ন উৎসবে শত শত বিনোদনপ্রেমী বিভিন্ন বয়সের নারী-পুরুষ এখানে ঘুরতে আসেন।
এদিকে সম্প্রতি নদীর পানি হঠাৎ করে বৃদ্ধি পাওয়ায় বাঁধটির দক্ষিণ দিকের প্রায় ৫০ মিটার অংশ ধসে গেছে।
সরেজমিন সোমবার ওই এলাকায় গিয়ে কথা হয় শাহিনুর মিয়া (৪২), হাবিবুর রহমান (৫৫), আব্দুল মালেক (৬০), রুহুল আমীনসহ (৪৫) অনেকের সঙ্গে। তারা বলেন, তিস্তা নদীর ভাঙন থেকে এই এলাকাটি রক্ষার্থে বাম তীরে পাউবো বাঁধটি নির্মাণের পর নদীর পশ্চিম দিকে পার্শ্ববর্তী গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় তিস্তা নদীর উপকূলে শত শত একর জমির উপর অপরিকল্পিতভাবে বেক্সিমকো গ্রুপের একটি সোলার পাওয়ার প্লান স্থাপনা নির্মাণ করা হয়।
অপরিকল্পিতভাবে পাওয়ার প্লানটি নির্মাণের ফলে প্রতি বছর এই এলাকায় নদীভাঙন বৃদ্ধি পাচ্ছে। বর্তমানে আমাদের এ বাঁধটির কিছু অংশ ধসে গেছে। ভাঙন রোধ না করা গেলে স্থানীয় ৩টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ৪টি মসজিদ, ৫টি গ্রামের সহস্রাধিক পরিবার ও কয়েকশ একর আবাদি জমিসহ ঘরবাড়ি গাছপালা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে।
বজরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল কাইয়ুম সরদার বলেন, বেক্সিমকো গ্রুপের সোলার পাওয়ার প্লানটি আমাদের জন্য মরণফাঁদ। এটির কারণে আমাদের এলাকায় নদী ভাঙন বেড়েই চলেছে। বর্তমানে বাঁধটির একাংশ ভেঙে যাওয়ায় বাকি বাঁধটি রক্ষার্থে জিওব্যাগ ফেলে ভাঙন রোধের চেষ্টা করা হচ্ছে।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান বজরা ইউনিয়নের তিস্তা নদীর বাম তীর রক্ষায় স্পার বাঁধের একটি অংশ ধসে যাওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, বাঁধ রক্ষায় সেখানে জিওব্যাগ ফেলা হচ্ছে। বাঁধটি রক্ষায় যত পরিমাণ ব্যাগ লাগবে, তা সেখানে ফেলা হবে।