Logo
Logo
×

সারাদেশ

স্বামী হারিয়ে অকূল পাথারে মুন্নী

Icon

রংপুর ব্যুরো

প্রকাশ: ১৭ আগস্ট ২০২৪, ১০:২৩ পিএম

স্বামী হারিয়ে অকূল পাথারে মুন্নী

রংপুরে কোটা সংস্কার আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় অটোচালক মানিক মিয়ার (৩৪) মৃত্যু হয়। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তির এমন মৃত্যুতে অন্ধকার দেখছেন পুরো পরিবার। স্বামীকে হারিয়ে দেড় বছরের শিশু সিয়ামকে নিয়ে অকূল পাথারে পড়েছেন মুন্নী বেগম। ভুগছেন আর্থিক সংকটে। 

মানিক মিয়া রংপুর নগরীর ১৫নং ওয়ার্ডের মডার্ন পূর্ব ঘাঘটপাড়া এলাকার মৃত সেকেন্দার আলীর ছেলে। 

তিনি ছিলেন পরিবারের ভরসা। সেকেন্দার আলী ১২ বছর আগে মারা যান। এরপর বৃদ্ধ মা ও ছোট ভাইবোনদের দায়িত্ব পড়ে তার ঘাড়ে। ২০১৮ সালে মানিক-মুন্নী বিয়েবন্ধনে আবদ্ধ হন। 

পরিবার ও স্থানীয়রা জানায়, মানিক অটোরিকশা চালানোর পাশাপাশি নগরীর আরকে রোডসংলগ্ন শুঁটকির আড়ত এলাকায় চায়ের দোকান করতেন। দুই বোন কুলসুম ও শিউলির বিয়ে দিয়েছেন। 

ঘটনার দিন ১৮ জুলাই বিকাল ৪টার দিকে স্ত্রীকে চায়ের দোকানে রেখে তিনি অটোরিকশা নিয়ে দোকানের কিছু মালামাল আনতে যান মডার্ন মোড় এলাকায়। ফেরার পথে বিকাল ৫টার দিকে ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট এলাকায় পৌঁছলে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারী ও পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। এ সময় তিনি গুলিবিদ্ধ হন।

পরে স্থানীয়রা রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে তার মৃত্যু হয়। ১৯ জুলাই বিকাল আড়াইটার দিকে পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর করলে বাদ আসর বাড়ির পাশে তার লাশ দাফন করা হয়।

মুন্নী বেগম বলেন, ১৬ জুলাই বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদের মৃত্যুকে ঘিরে নগরীতে আন্দোলনরতদের সঙ্গে পুলিশের বিভিন্ন স্থানে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। তাই স্বামীকে অটোরিকশা নিয়ে বের হতে দিইনি। ১৮ জুলাই বিকাল ৩টার দিকে চায়ের দোকানে মানিকের জন্য খাবার নিয়ে যাই। এরপর আমাকে দোকানে রেখে অটোরিকশা নিয়ে দোকানের মাল আনতে যান। এর কিছুক্ষণ পরেই গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যুবরণ করেন।

তিনি আরও বলেন, আমার স্বামীর কী দোষ ছিল? তিনি তো কোনো রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। তাকে হত্যা করা হলো কেন? আমার দেড় বছরের শিশুটাকে আমি কী জবাব দেব? কে সান্ত্বনা দেবে আমার অবুঝ সন্তানকে? স্বামীর উপার্জনে পরিবার চলত। আমার স্বামীর হত্যাকারীদের বিচার চাই।

মানিক মিয়ার ছোট বোন শিউলি বেগম বলেন, বাবা মারা যাওয়ার পর থেকে বাবার দায়িত্ব পালন করছিলেন বড় ভাই। কিন্তু তাকে গুলি করে হত্যা করা হলো। এখন আমাদের কী হবে? আমরা কার কাছে ভাইকে হারানোর কথা বলব। কে শুনবে আমার ভাইয়ের দেড় বছরের ছোট্ট শিশুটার আহাজারি? এ কষ্ট তো সহ্য করার মতো নয়।
স্থানীয়রা জানান, মানিক মিয়া অত্যন্ত ভালো ছেলে ছিলেন। হঠাৎ এভাবে মারা যাওয়ায় আর্থিক সংকটে পড়েছে পরিবারটি। তাদের ভবিষ্যৎ কী হবে? এজন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টাসহ সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেন তারা।
 

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম