নিহত কামরুল ইসলাম সেতু।
কসমেটিক্স ব্যবসায়ী কামরুল ইসলাম সেতুর (৪৭) এ মৃত্যু মেনে নিতে পারছে না তার পরিবার। ছেলে আলভী ইসলাম (২৩), মেয়ে উমাইয়া ইসলাম (১৯) ও স্ত্রী নিলুফার ইয়াসমিন পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম মানুষটিকে হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ৪ আগস্ট ঢাকার মিরপুর-১০ নম্বরে গুলিবিদ্ধ হয়ে হাসপাতালে মারা যান তিনি। তার বাড়ি ফরিদপুর শহরের রঘুনন্দনপুর এলাকার হাউজিং এস্টেটে। তবে তিনি পরিবার নিয়ে ঢাকার মিরপুর-১১ নম্বরে থাকতেন। তার অফিস ছিল মিরপুর-১০ নম্বরে।
কামরুলের পরিবার সূত্রে জানা যায়, ৪ আগস্ট রাতেই তার লাশ ফরিদপুরে নিয়ে যাওয়া হয়। পরদিন বেলা ১১টার দিকে শহরের আলীপুর পৌর কবরস্থানে লাশ দাফন করা হয়। বর্তমানে কামরুলের পরিবারের সবাই গ্রামের বাড়িতেই আছেন।
নগর ভবনে হামলা ও অগ্নিসংযোগের কারণ জানালেন বিএনপি নেতা মিনু
আলভী ইসলাম জানান, সময়মতো বাসায় না ফেরায় বারবার তার বাবার নম্বরে কল দিতে থাকেন। অনেকক্ষণ পর একজন কলটি রিসিভ করে বলেন, ফোনটি যার তিনি গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। তাকে মিরপুরে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। পরে তারা জানতে পারেন, ওই হাসপাতাল থেকে কামরুলকে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল এবং পরে ঢাকার নিউরোসায়েন্স হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। হাসপাতালের মৃত্যুর সনদে বলা হয়, মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছেন তিনি।
উমাইয়া ইসলাম বলেন, বাবা যতই রাত করে বাসায় ফিরুক না কেন, আমি না খেয়ে বসে থাকতাম। বাবা এলে আমরা একসঙ্গে খেতাম। বাবা নেই জানি। তারপরও বাবার অপেক্ষায় থাকি।
আলভী একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার সায়েন্স ও ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে পড়াশোনা করছেন। উমাইয়া এইচএসসি পরীক্ষা দিচ্ছেন।
কামরুলের স্ত্রী নিলুফার বলেন, ৪ আগস্ট দুপুরে নামাজ পড়তে যান তার স্বামী। নামাজ শেষে তিনি স্ত্রীকে ফোন করে জানান, তার এখানে খুব গণ্ডগোল হচ্ছে। অফিসে দুজন কর্মচারী আছে। তাদের বিদায় দিয়ে অফিস বন্ধ করে তিনি বাসায় ফিরবেন।