Logo
Logo
×

সারাদেশ

গোপালগঞ্জে বঙ্গবন্ধুর সমাধি সৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ

‘শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে না আনা পর্যন্ত কেউ ঘরে ফিরবেন না’

Icon

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১৫ আগস্ট ২০২৪, ০৬:১০ পিএম

‘শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে না আনা পর্যন্ত কেউ ঘরে ফিরবেন না’

ছবি: যুগান্তর

জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জিএম সাহাব উদ্দিন আজম বলেছেন, ১৫ আগস্টকে সামনে রেখে দেশের মুজিবপাগল ভাইয়েরা ঐক্যবদ্ধ ও সংগঠিত হচ্ছেন। আপনারা দীর্ঘদিন পরে পুলিশ ছাড়া, নিরাপত্তা ছাড়া এখানে এসেছেন। আপনারা লক্ষ্য করেছেন শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে বঙ্গবন্ধুকে শ্রদ্ধা জানানের জন্য যে পরিমাণ মানুষ আসতো তার চেয়ে বর্তমান সময়ে আরও বেশি মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে সংগ্রামী চেতনা নিয়ে বঙ্গবন্ধুর মাজারে উপস্থিত হয়েছেন।

তিনি বলেন, সবাই বঙ্গবন্ধুকে শ্রদ্ধা নিবেদন করছেন। এখান থেকে শপথ নিয়ে ফিরছেন, দেশরত্ন শেখ হাসিনাকে সম্মানের সঙ্গে দেশে ফিরিয়ে না আনা পর্যন্ত কেউ ঘরে ফিরবেন না।

জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহাবুব আলী খানের সভাপতিত্বে টুঙ্গিপাড়ায় সমাধি সৌধ কমপ্লেক্সের অস্থায়ী মঞ্চে অনুষ্ঠিত শোকসভায় তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, স্বাধীনতার স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের বাড়িতে যারা আগুন দিয়ে ধ্বংস করে দিয়েছে তারা বিকৃত মানসিকতা পোষণ করে।

তিনি বলেন, বুধবার থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বিএনপি ও জামায়াত শিবিরের ক্যাডাররা মুজিব আদর্শের সৈনিকদের ওপর হামলে পড়েছে। ৫ আগস্ট থেকে শত শত আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মীদের হত্যা করে তারা (বিএনপি-জামায়াত) এক বিকৃত উল্লাসে মেতে ওঠেছে। শেখ হাসিনাকে হত্যা মামলার আসামি করা হয়েছে।

গোপালগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ৫ আগস্টের পর দেশের মধ্যে যেসব হত্যাকাণ্ড হয়েছে তার দায় কে নেবে? কার বিরুদ্ধে মামলা হবে? অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে মামলা হবে? নাকি বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের বিরুদ্ধে হবে? 

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগকে মামলা দিয়ে ষড়যন্ত্র করে প্রতিহত করা যাবে না। বাংলাদেশকে পিছিয়ে দেওয়ার অপচেষ্টা চলছে। বাংলার মানুষ তা কখনো মেনে নেবে না। দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলে সরকারের পতন ঘটানো হবে। নেতাকর্মীদের লড়াই সংগ্রামের জন্য প্রস্তুত থাকার আহবান জানান এই আওয়ামী লীগ নেতা। 

দ্রুত সময়ের মধ্যে সাধারণ নির্বাচনের দাবি জানিয়ে গোপালগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে বিশ্বের দরবারে পরিচিত করে গেছেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নামে ছাত্রদের ঢাল বানিয়ে কতিপয় সেনাসদস্য ষড়যন্ত্র করে শেখ হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করেছে। আমরা এই অপশক্তিকে টেনেহিঁচড়ে ক্ষমতা থেকে নামাব। তারপর শেখ হাসিনাকে সম্মানের সহিত দেশে ফিরিয়ে আনব।

বেলা পৌনে ১১টায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনার পক্ষে গোপালগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে বিনম্র শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। 

পরে জেলা আওয়ামী লীগ, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগ, টুঙ্গিপাড়া উপজেলা ও পৌর আওয়ামী লীগ, কোটালীপড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ, জেলা যুবলীগ, ছাত্রলীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ, যুব মহিলা লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগসহ অন্যান্য অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন সমাধি সৌধ বেদিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করে।

শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুসহ নিহত সব শহিদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে দোয়া ও মোনাজাত করা হয়। এছাড়া আইনজীবী ঐক্য পরিষদ, জেলা আইনজীবী সমিতি, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ) বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন গোপালগঞ্জ জেলা শাখা, বশেমুরবিপ্রবি ও মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষ থেকে বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে আলাদাভাবে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।

এ সময় জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি শেখ লুৎফর রহমান বাচ্চু, শেখ রাকিব হোসেন, মুন্সি আতিয়ার রহমান, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শেখ মুশফিকুর রহমান লিটন, বদরুল আলম বদর, দপ্তর সম্পাদক ইলিয়াস হক, প্রচার সম্পাদক সিকদার নজরুল ইসলাম, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি কাজি লিয়াকত আলি লেকু, সাধারণ সম্পাদক আবু সিদ্দিক, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান ভূঁইয়া, টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. বাবুল শেখ, সহ-সভাপতি ইলিয়াস হোসেন, টুঙ্গিপাড়া পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ সাইফুল ইসলাম, পৌর মেয়র শেখ মোজাম্মেল হক টুটুল, কোটালীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আয়নাল হোসেন শেখ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মজিবুর রহমান হাওলাদার, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বিমল কৃষ্ণ বিশ্বাস, পৌর মেয়র মতিয়ার রহমান হাজরা, কাশিয়ানী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. মোক্তার হোসেন, সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে পরিবেশ ও পরিস্থিতিগত কারণে এ বছর বঙ্গবন্ধুর ৪৯তম শাহাদতবার্ষিকী উপলক্ষে টুঙ্গিপাড়ায় এবারের আয়োজন ছিল আলাদা। নেতাকর্মীরা ছিলেন স্বতঃস্ফূর্ত। একের পর এক মিছিল নিয়ে সমাধি সৌধ কমপ্লেক্সে প্রবেশ করেন তারা। সবার মুখে ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ ধ্বনিতে প্রকম্পিত হয়ে ওঠে সমাধি সৌধ কমপ্লেক্স। যেখানে ছিল না কোনো পুলিশ ও নিরাপত্তা কর্মীদের বাড়াবাড়ি। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সমাধি সৌধ কমপ্লেক্সে নেতাকর্মী ও সমর্থকদের উপস্থিতি বাড়তে থাকে। 

পরে জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণে শোক শোভাযাত্রা বের হয়। এরপর সমাধি সৌধ কমপ্লেক্স মসজিদের সামনে নির্মিত অস্থায়ী মঞ্চে বঙ্গবন্ধুসহ ১৫ আগস্টে নিহতদের আত্মার মাগফিরাত কামনায় দোয়া এবং মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। 

মিলাদ ও দোয়া মাহফিল শেষে শেখ রাসেল শিশুপার্কে সাধারণ মানুষের মাঝে খাবার বিতরণ করা হয়। গোপালগঞ্জ, টুঙ্গিপাড়া ও কোটালীপাড়ায় বিভিন্ন মসজিদ ও মন্দিরে দোয়া ও প্রার্থনা করা হয়। 

সকালে গোপালগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে মাল্যদান, দলীয় পতাকা অর্ধনমিত ও কালো পতাকা উত্তোলন করা হয়। নেতাকর্মীরা কালোব্যাজ ধারণ করেন। 

এছাড়া বঙ্গবন্ধুর শাহাদতবার্ষিকী উপলক্ষে গোপালগঞ্জের পাঁচ উপজেলায় সব মসজিদ ও মন্দিরে দোয়া ও প্রার্থনা করা হয়।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম