Logo
Logo
×

সারাদেশ

সিজারের পর প্রসূতির মৃত্যু, চিকিৎসক পুলিশ হেফাজতে

Icon

লোহাগড়া (নড়াইল) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১৩ আগস্ট ২০২৪, ১০:৪৮ পিএম

সিজারের পর প্রসূতির মৃত্যু, চিকিৎসক পুলিশ হেফাজতে

নড়াইলের লোহাগড়ায় প্রত্যাশা ক্লিনিকে সিজারের সময় শান্তা (২৩) নামে একজন প্রসূতি মায়ের মৃত্যু হয়েছে। অ্যানেস্থেসিয়া ও সিজার একজন চিকিৎসককে দিয়ে করানোর কারণে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ করছেন ভুক্তভোগী পরিবার। পরে ওই চিকিৎসককে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। 

মঙ্গলবার দুপুরে শান্তার বাবার বাড়ি লোহাগড়া উপজেলার সরুশুনা গ্রামে জানাজা শেষে দাফন সম্পন্ন হয়েছে।

জানা গেছে, উপজেলার দিঘলিয়া ইউনিয়নের তালবাড়িয়া গ্রামের নাঈমুর রহমানের স্ত্রী শান্তাকে গত সোমবার সন্ধ্যায় লোহাগড়ার জয়পুর মোড়ে প্রত্যাশা নামে একটি বেসরকারি ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়। ভর্তির কিছুক্ষণ পর ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ শান্তাকে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যান। এসময় মিথুন বিশ্বাস নামে একজন চিকিৎসক নিজেই অ্যানেস্থেসিয়া দিয়ে সিজার করে। সিজারের পর একটি কন্যা সন্তান জন্ম নেয়। 

কিন্তু কয়েক ঘণ্টা কেটে গেলেও শান্তাকে অপারেশন থিয়েটার থেকে বের না করায় পরিবারের লোকেরা শান্তার শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইলে তারা জানান, শান্তা একটু অসুস্থ, তাকে নড়াইল সদর হাসপাতালে নিতে হবে। তাৎক্ষণিকভাবে অ্যাম্বুলেন্সযোগে নড়াইল সদর হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান, হাসপাতালে আনার অগেই তার মৃত্যু হয়েছে।  

শান্তার মামা মুস্তাক অভিযোগ করে বলেন, ক্লিনিকের মালিক সেলিম খরচ বাঁচানোর জন্য কোনো অ্যানেস্থেসিয়া ডাক্তার না এনে অনভিজ্ঞ ডাক্তার মিথুন বিশ্বাসকে দিয়ে অজ্ঞানের ইনজেকশন দিয়ে তাকে সিজার করেছে; যার কারণে অপারেশন থিয়েটারে শান্তা মারা গেছে। অপারেশন থিয়েটারে তার মৃত্যু হলেও ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ ও ডাক্তার মিলে ওই প্রসূতি কে অসুস্থ বলে ক্লিনিক থেকে উন্নত চিকিৎসার কথা বলে নড়াইলে সদর হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয়।

 এ সময় রোগীর স্বজনরা নড়াইল হাসপাতালে যাওয়ার সময় ওই ডাক্তারকেও সঙ্গে নিয়ে যায়। সেখানে পৌঁছানোর সঙ্গে সঙ্গে ওই অভিযুক্ত ডাক্তার পালানোর চেষ্টা করলে সেখানকার লোকজন তাকে আটক করে রাখেন। পরে খবর পেয়ে নড়াইল থানার পুলিশ তাকে থানায় নিয়ে যায়।

নিহত শান্তার মা লাভলী বেগম ও পরিবারের লোকেরা ডাক্তারসহ ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের উপযুক্ত বিচার দাবি করেন। তারা জানিয়েছেন ক্লিনিকের মালিক সিজারের জন্য যে টাকা চেয়েছে তা তারা দিয়েছে অথচ অনভিজ্ঞ একজন ডাক্তার দিয়ে অজ্ঞানের ইনজেকশন ও সিজার করেছে। সান্তা সম্পূর্ণভাবে অজ্ঞান না হওয়ার কারণেই তার মৃত্যু হয়েছে বলে ধারণা করছে পরিবারের লোকেরা।

নড়াইল সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক মো. আসিফ আকবর বলেন, শান্ত নামের ওই রোগীকে মৃত অবস্থায় নড়াইল সদর হাসপাতালে জরুরি বিভাগে আনা হয়েছিল। হাসপাতালে আসার অন্তত আধাঘণ্টা আগে মারা গেছে। তবে মৃত্যুর সঠিক কারণ বের করতে হলে ময়নাতদন্ত করতে হবে।

নড়াইল সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সাইফুল ইসলাম বলেন, লোহাগড়ায় একটি ক্লিনিকে রোগী মৃত্যুর ঘটনায় মিথুন বিশ্বাস নামে একজন ডাক্তারকে হাসপাতাল থেকে থানায় এনে রাখা হয়েছে। ভুক্তভোগী পরিবার থানায় অভিযোগ করলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম