Logo
Logo
×

সারাদেশ

শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে গাজীপুরে সড়কে চাঁদাবাজি বন্ধ

Icon

শাহ সামসুল হক রিপন, গাজীপুর প্রতিনিধি 

প্রকাশ: ১২ আগস্ট ২০২৪, ০৭:৪৮ পিএম

শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে গাজীপুরে সড়কে চাঁদাবাজি বন্ধ

ছবি: সংগৃহীত

গাজীপুরের বিভিন্ন সড়কে চলাচল করা যানবাহন থেকে চাঁদা তোলা বন্ধ হয়েছে। গত ৫ আগস্ট থেকে ১১ আগস্ট পর্যন্ত গাজীপুর জেলা ও মহানগরীর বিভিন্ন স্ট্যান্ডে চালকদের কাছ থেকে কেউ চাঁদা আদায় করতে আসেনি। এতে স্বস্তি প্রকাশ করছেন বাস, সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার চালকেরা। আগে এসব স্ট্যান্ড থেকে কোটি টাকা আদায় করা হতো।

রোববার দুপুরে নগরীর রাজবাড়ী এলাকায় সিএনজিচালক মোফাজ্জল হোসেন জানান, গাজীপুরের সব থেকে বড় সিএনজিস্ট্যান্ড এটি। আগে ছাত্রলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতাকে প্রতিদিন ৮০ টাকা করে চাঁদা দিতে হতো। এই এক স্ট্যান্ড থেকে প্রায় ২০ লাখ টাকার মতো চাঁদা তোলা হতো; কিন্তু এখন শিক্ষার্থীরা আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছে। গত কয়েক দিনে আমরা কোনো চাঁদা দেই না। সেই হিসাবে আমাদের মাসে ৩ হাজারের বেশি টাকা বেঁচে যাবে। 

সিটি করপোরেশন গেটের অটোরিকশাচালক সোলায়মান হোসেন জানান, সিটি করপোরেশন গেট থেকে পূবাইল, টঙ্গী, নিলেরপাড়া, ধীরাশ্রম, আক্কাস মার্কেট এলাকায় ৩০, ৫০ এবং ৮০ টাকার মতো চাঁদা দিতে হতো। ৫ তারিখের পর থেকে আর কেউ চাঁদা নিতে আসে না। খুব ভালো লাগছে।

নগরীর জয়দেবপুর বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে দেখা যায়, স্বস্তিতে যাত্রী আনা–নেওয়া করছেন বাস ও অটোরিকশা চালকরা। 

আবুল হোসেন নামে লোকাল বাসের এক চালক বলেন, বাসস্ট্যান্ডে আগে কত রকমের নেতা দেখতাম। ৫ তারিখের পর থেকে সব পালিয়ে গেছে। 

সিএনজিচালিত অটোরিকশা থেকে চাঁদা আদায় হচ্ছে না দাবি করে মামুন নামের এক সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালক বলেন, ‘তারা (চাঁদাবাজরা) আমাগো হকের টাকা মাইরা খাইত। আল্লায় বিচার করছে। তারাই এহন ঘরে নাই।’

টঙ্গী স্ট্যান্ডের একাধিক চালকরা জানিয়েছেন, আগে টঙ্গী থেকে মীররের বাজার পর্যন্ত তিন জায়গায় চাঁদা দেওয়া লাগত। এখন কোথাও কাউরে এক টাকাও দিতে হয় না।

একইভাবে জেলার কাপাসিয়া, কালীগঞ্জ, শ্রীপুর, কালিয়াকৈর সব উপজেলায় শিক্ষার্থীরা পরিবহণে চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছে।

কোটা আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী জহিরুল ইসলাম বলেন, তাদের যতগুলো দাবি ছিল তার মধ্যে অন্যতম একটি দাবি ছিল পরিবহণ সেক্টরে চাঁদাবাজি বন্ধ করা। শিক্ষার্থীরা শৃঙ্খলা ফেরানোর পাশাপাশি সড়কে চাঁদাবাজি বন্ধ করতে সক্ষম হয়েছে। পরবর্তী সময়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা যারাই দায়িত্ব পালন করবেন তারা যেন বর্তমান পরিস্থিতি অব্যাহত রাখেন।

টঙ্গীতে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী, আরিফুল ইসলাম আবির বলেন, গাজীপুরের মধ্যে টঙ্গী স্ট্যান্ডে সব থেকে বেশি চাঁদাবাজি হতো। ৫ তারিখের পর থেকে সব শিক্ষার্থী মিলে এই চাঁদাবাজি বন্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছেন। এক টঙ্গী স্ট্যান্ড থেকেই কোটি টাকারও বেশি চাঁদাবাজি হতো। 

তিনি আরও বলেন, আমরা পরিবহণ চাঁদাবাজি বন্ধে মাইকিং কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি। সেক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের মাধ্যমে ছোট ছোট কমিটিও করে দেওয়া হচ্ছে। দুর্নীতি ও চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের এ প্রতিরোধ অব্যাহত থাকবে। 

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম