সাবেক ডিএমপি কমিশনারের দুই দোকান গুঁড়িয়ে দিল জমির মালিক
ফরিদপুর ব্যুরো
প্রকাশ: ১০ আগস্ট ২০২৪, ০৮:১৩ পিএম
ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গার বাসিন্দা সাবেক ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়ার অবৈধভাবে দখলে থাকা ১৫ শতাংশ জমির ওপর নির্মিত দুটি দোকান ভেঙে গুঁড়িয়ে দিয়েছেন জমির মালিক।
শুক্রবার দুপুরে উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের টিটিসি মোড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ সময় ভেকু মেশিন দিয়ে দোকানগুলো ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ১৯৯৭ সালে ক্রয় করা চান্দড়া মৌজার ১৫ শতাংশ জমি ভোগ দখলে থাকেন উপজেলার কামারগ্রামের বাসিন্দা মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রাজ্জাক মিয়া। এ জমির পাশেই রয়েছে সাবেক ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়ার স্ত্রী আফরোজা জামানের নামে জমি। সেই সুবাদে আব্দুর রাজ্জাক মিয়ার জমি নানাভাবে দখলের চেষ্টা করেন আছাদুজ্জামান। পরবর্তীতে আদালতে মামলা হলে সেই মামলার রায় আসে আব্দুর রাজ্জাক মিয়ার পক্ষে। কিন্তু আছাদুজ্জামান মিয়া ক্ষমতার অপব্যবহার করে ২০১৭ সালে পুলিশ দিয়ে নানাভাবে হয়রানির মাধ্যমে আব্দুর রাজ্জাক মিয়ার কেনা ওই জমি অবৈধভাবে দখল নিয়ে দোকান নির্মাণ করেন।
আব্দুর রাজ্জাক মিয়ার ছোট ছেলে এস এম রেজওয়ানুর রহমান বলেন, চান্দড়া মৌজার ১৫ শতাংশ জমি ক্রয়সূত্রে আমার বাবা ১৯৯৭ সাল থেকে ভোগ দখল করে আসছিলেন। জমিটি আছাদুজ্জামান মিয়া দখলে নিতে নানাভাবে আমাদের হয়রানি করেন। একপর্যায়ে আদালতে মামলা হলে ২০১০ সালে আমাদের পক্ষে রায় আসে। তখনও জমিটি আমাদের দখলে ছিল। পরবর্তীতে ২০১৭ সালে আছাদুজ্জামান মিয়া পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা হওয়ায় ক্ষমতার অপব্যবহার করে আমাদের নামে নানা ধরনের মিথ্যা মামলা, পুলিশি হয়রানি করে অবৈধভাবে জোরপূর্বক দখলে নিয়ে উক্ত জায়গায় দুটি দোকান নির্মাণ করেন। আমরা শুক্রবার আমাদের জমিতে থাকা সেই অবৈধ দোকান ভেঙে দিয়ে আমাদের জায়গা দখলমুক্ত করেছি।
এ বিষয়ে গোপালপুর ইউনিয়নের তিন নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. টিটন জনান, সাবেক ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়ার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠার পর থেকে তিনি এলাকায় কম আসতেন। তার হয়ে সবকিছু দেখভাল করতেন তার ভাগনে মো. ইব্রাহিম। কমিশনার থাকাকালীন আছাদুজ্জামান মিয়া তার স্ত্রী, শ্যালিকা, শ্যালক, ভাগনে, ভাগনের স্ত্রীসহ আত্মীয়-স্বজনদের নামে জমি কিনেছেন। এ ছাড়াও এলাকার অনেকের কাছ থেকে ক্ষমতার অপব্যবহার করে জোর করে জমি লিখিয়ে নিয়েছেন। যদি কিউ জমি দিতে না চাইতো তাহলে তাকে থানায় মিথ্যা মামলাসহ বিভিন্নভাবে হয়রানি করা হতো।
তবে জমিটি সাবেক ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়ার দাবি করে তার ভাগনে মো. ইব্রাহিম শেখ বলেন, ওখানে চারটি দাগে আমাদের ও রাজ্জাক মিয়াদের জমি রয়েছে। আমরা আমাদের জমিতে স্থাপনা নির্মাণ করেছি। দলিলে তাদের যে জায়গা রয়েছে, তা ফাঁকা। তারপরও দেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতির সুযোগে আমাদের নির্মাণ করা ৭০ ফুট দৈর্ঘ্য বিশিষ্ট দুটি দোকান, যা গোডাউন হিসেবে ভাড়া দেওয়া হয়েছিল, তা ভেঙে দেওয়া হয়েছে।
আছাদুজ্জামান মিয়ার পক্ষের লোকজন কেনো বাধা দেয়নি- এমন প্রশ্নে ইব্রাহিম বলেন, আমরা বাধা দিতে গেলে মার্ডার হয়ে যেতো, এজন্য বাধা দেইনি।