Logo
Logo
×

সারাদেশ

আত্মগোপনে রংপুরের এমপি, আ.লীগের নেতাকর্মীরা

Icon

রংপুর ব্যুরো

প্রকাশ: ০৮ আগস্ট ২০২৪, ১১:২০ পিএম

আত্মগোপনে রংপুরের এমপি, আ.লীগের নেতাকর্মীরা

আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সোমবার দেশত্যাগ করে ভারতে চলে যান সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও দলের সভাপতি শেখ হাসিনা। দেশ ছেড়ে পালিয়ে গিয়ে তিনি ও তার পরিবার জনরোষ থেকে বেঁচে গেলেও কঠিন বিপদে পড়েছেন আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা। 

আত্মগোপনে চলে গেছেন রংপুরের ৬টি সংসদীয় আসনের সাবেক এমপিসহ দলের জনপ্রতিনিধি ও শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা। তারা প্রাণভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। এতে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন দলের তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মী ও সমর্থকরা। তারা সংকটময় এ দিনগুলোতে বাড়িঘরে হামলা-ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের আশঙ্কায় রয়েছেন।

জানা গেছে, সর্বশেষ দ্বাদশ জাতীয় সংসদে রংপুর জেলার সংসদীয় ছয়টি আসনের পাঁচটিতেই সংসদ-সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন আওয়ামী লীগ নেতারা ও একটিতে জাতীয় পার্টি।

তারা হলেন রংপুর-১ (গংগাচড়া ও আংশিক সিটি করপোরেশন) আসনে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান বাবলু, রংপুর-২ (বদরগঞ্জ ও তারাগঞ্জ) আসনে যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আবুল কালাম মো. আহসানুল হক চৌধুরী ডিউক, রংপুর-৪ (পীরগাছা ও কাউনিয়া) আসনে সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী ও কেন্দ্রীয় অর্থ সম্পাদক টিপু মুনশি, রংপুর-৫ (মিঠাপুকুর) আসনে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন সরকার, রংপুর-৬ (পীরগঞ্জ) আসনে জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী। রংপুর-৩ (সদর ও সিটি করপোরেশন) আসনে সংসদ-সদস্য ছিলেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় নেতা জিএম কাদের। এছাড়া সংরক্ষিত মহিলা আসনে সংসদ-সদস্য ছিলেন জেলা যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক নাছিমা জামান ববি।

চাকরিতে কোটা সংস্কার ঘিরে ছাত্র আন্দোলনের মুখে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে শেখ হাসিনার পদত্যাগ এবং চলমান পরিস্থিতিতে আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি ও নেতারা আত্মগোপনে চলে যান। তারা কোথায় আছেন, কেমন আছেন, তাদের অবস্থান কেউ বলতে পারছেন না। এমন পরিস্থিতিতে তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের মনোবল ভেঙে গেছে। একই সঙ্গে শেখ হাসিনা যে এমন পরিস্থিতির সম্মুখীন হবেন সেটাও কেউ কোনোদিন কল্পনা করেননি বলে তারা জানান।

এর আগে ৪ আগস্ট গংগাচড়ায় আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসবিরোধী মিছিল হয়। ওইদিন আন্দোলনকারীদের হাতে লাঞ্ছিত হন রংপুর-১ আসনের সবশেষ সংসদ-সদস্য আসাদুজ্জামান বাবলু। তিনি আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে নির্বাচিত হয়েছিলেন। 

রংপুর-২ আসনের সংসদ-সদস্য আবুল কালাম মো. আহসানুল হক চৌধুরী ডিউকের বাসায় তিন দফা হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে মালামাল লুট করা হয়। এছাড়াও উপজেলা চেয়ারম্যান ফজলে রাব্বী সুইট, পৌর মেয়র টুটুল চৌধুরী, সাবেক মেয়র উত্তম কুমার সাহা, উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক পলিন চৌধুরীসহ সান্টু চৌধুরী ও লিটন চৌধুরীর বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। 

সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশিও নেই তার সংসদীয় এলাকায়। শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর তিনি এখন কোথায় রয়েছেন জানেন না স্থানীয় নেতারা। রংপুর-৫ আসনের সাবেক সংসদ-সদস্য (স্বতন্ত্র) জাকির হোসেন সরকারও নিরাপদ স্থানে রয়েছেন। এই আসনের সাবেক সংসদ-সদস্য এইচএন আশিকুর রহমানের বাড়িতে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা।

অন্যদিকে রংপুর-৬ আসনের সংসদ-সদস্য ও সদ্য বিলুপ্ত সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী স্থানীয় না হওয়ায় পীরগঞ্জে বড় ধরনের কোনো সহিংস ঘটনা ঘটেনি। সরকার পতনের দিনে শেখ হাসিনার শ্বশুরবাড়ি হিসাবে পরিচিত পীরগঞ্জে হামলা ও ভাঙচুর হয়েছে আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে। 

এদিকে রংপুর মহানগরীতে মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক তুষার কান্তি মণ্ডল ও সংরক্ষিত আসনের এমপি নাসিমা জামান ববির বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। 

কাউনিয়াতেও উত্তেজিত জনতা উপজেলা চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা আনোয়ারুল ইসলাম মায়ার বাসায় ও তার পারটেক্স ফ্যাক্টরিতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। এ ছাড়া জেলার বিভিন্ন স্থানে অজ্ঞাত দুর্বৃত্তরা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বাড়িঘর, অফিস ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম